কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্ক।।
মিষ্টি পাতা, মধুপাতা, মিষ্টি হার্ব প্রভৃতি নামে পরিচিত বিস্ময়কর ভেষজ উদ্ভিদ স্টেভিয়া। চিনির চেয়ে ৩০০ গুণ বেশি মিষ্টি ও ক্যালরিমুক্ত স্টেভিয়া । ভেষজ ঔষধি হিসেবে ডায়াবেটিক রোগী ও সুস্থ মানুষ নির্ভয়ে খেতে পারবে।
স্টেভিয়া চাষ, ব্যবহার ও বাণিজ্যিকভাবে প্রসারে কাজ করছেন পাবনার ঈশ্বরদীতে অবস্থিত বাংলাদেশ সুগার ক্রপ গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিএসআরআই) বায়োটেকনোলজি বিভাগের এক দল বিজ্ঞানী।
বাংলাদেশে বিএসআরআইয়ের বিজ্ঞানীরা উদ্ভিদটি নিয়ে কাজ শুরু করেছেন ২০০১ সালে। প্রতিষ্ঠানের বর্তমান মহাপরিচালক (ডিজি) ড. মো. আমজাদ হোসেন পরিচালকের (গবেষণা) দায়িত্বে থাকাকালে বায়োটেকনোলজি বিভাগের প্রধান ও প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. কুয়াশা মাহমুদ, ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা নাদিরা ইসলাম ও বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আশিষ কুমার ঘোষসহ কয়েকজন বিজ্ঞানীকে নিয়ে কাজ করেন।
ড. কুয়াশা মাহমুদ জানান, স্টেভিয়া স্বল্প দিনের ঔষধি উদ্ভিদ হলেও দীর্ঘকাল বেঁচে থাকে। স্টেভিয়া সহজে চাষ করা যায়। এমনকি মাটির টবেও হয় এই গাছ।
ক্যালরিমুক্ত হওয়ায় স্টেভিয়া ডায়াবেটিক রোগী খেলে রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ পরিবর্তন হয় না। অগ্ন্যাশয়কে (প্যানক্রিয়াস) ইনসুলিন উৎপাদনে উদ্দীপ্ত করে বলে রক্তের গ্লুকোজও নিয়ন্ত্রণে থাকে। রক্তচাপও নিয়ন্ত্রণ করে এ উদ্ভিদ। বাংলাদেশের আবহাওয়া ও মাটি স্টেভিয়া চাষের অনুকূলে। তাই বাংলাদেশের যেকোনো এলাকায় এর চাষ সম্ভব।
ড. কুয়াশা মাহমুদ বলেন, স্টেভিয়ার চারা লাগানোর আড়াই থেকে তিন মাসের মধ্যে পাতা সংগ্রহ করা যায়। সেই পাতা রৌদ্রে শুকিয়ে চিনির পরিবর্তে চা, কফি, মিষ্টিসহ বিভিন্ন মিষ্টিজাতীয় খাবারে ব্যবহার করা যায়। তিনি বলেন, দিন দিন স্টেভিয়ার চাহিদা বিশ্ববাজারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমাদের দেশে স্টেভিয়ার চাষ বাণিজ্যিক ভিত্তিতে শুরু হলে দ্রুত বাজার পাবে।
এই বিজ্ঞানী মনে করেন, মানুষের মধ্যে স্টেভিয়ার উপকারিতা সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি করতে পারলে এ দেশের চাষিরা আর্থিকভাবে বহুগুণ লাভবান হবে।
প্রাথমিক এক জরিপে বিএসআরআইয়ের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তারা দেখেছেন, যে পরিমাণ খরচ করে স্টেভিয়া উৎপাদন করা হয়, তার চেয়ে কমপক্ষে ১২ গুণ বেশি দরে বিক্রি করা যায়। গবেষণা প্রতিষ্ঠানটি স্টেভিয়ার উপকারিতা, আর্থিক লাভ ও সর্বোপরি ডায়াবেটিক রোগীসহ সুস্থ মানুষকে মিষ্টি ও মিষ্টিজাতীয় জিনিস খেতে স্টেভিয়ার ব্যবহার নিশ্চিত করতে জনসচেতনতা, প্রচারণা ও কৃষকদের বিভিন্ন প্রশিক্ষণের মাধ্যমে উদ্বুদ্ধ করছে।
কৃপ্র/এম ইসলাম