কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্ক।।
ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের মাধবপুর থেকে হবিগঞ্জ পর্যন্ত গড়ে উঠেছে অর্ধশতাধিক শিল্প-কারখানা। আর এসব শিল্প কারখানার বিষাক্ত বর্জ্যে দূষিত হচ্ছে হবিগঞ্জ জেলার নদী-খাল। একই দূষণে হুমকিতে পড়েছে জেলার মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া সুতাং নদী।
শিল্প-কারখানার বিষাক্ত বর্জ্য সরাসরি মিশছে খাল-বিল ও জলাশয়ে। খাল-জলাশয় বেয়ে একই বর্জ্য বিষিয়ে তুলছে সুতাং নদীর পানি। এর মধ্যে হবিগঞ্জের অলিপুর এলাকায় গড়ে ওঠা শিল্প-কারখানার বিষাক্ত বর্জ্যে ব্যাপকভাবে দূষিত হচ্ছে নদীটি।
শিল্পবর্জ্যের দূষণে বুল্লা, করাব, লুকড়া, নূরপুর, ব্রাহ্মণডোরা, রাজিউড়া, লাখাই সদরসহ বেশ কয়েকটি ইউনিয়নের গ্রামে কৃষি, স্বাস্থ্য ও দৈনন্দিন জীবনে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। শিল্পবর্জ্যের গন্ধে অতিষ্ঠ এলাকার মানুষজন।
দূষণের কারণে নদী-তীরবর্তী প্রায় ৪০ কিলোমিটার এলাকার ফসলি জমি ও জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে। এ নদীতে এক সময় প্রচুর মাছ পাওয়া গেলেও এখন তার দেখা নেই। এতে হুমকিতে পড়েছে কয়েক হাজার জেলের জীবন-জীবিকা। কৃষকরা সেচের কাজেও ব্যবহার করতে পারছেন না সুতাংয়ের পানি। নদীপাড়ের মানুষ এক সময় ব্যাপকহারে হাঁস পালন করলেও এখন আর পারছেন না। নদীর পানির বিষক্রিয়ায় মারা যাচ্ছে হাঁসও।
রাজিউড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালাম বাবুল জানান, সুতাং নদীর বিষাক্ত পানির কারণে এলাকার মানুষ অনেক কষ্টে আছে। একাধিকবার প্রশাসনের অভিযোগ করা হলেও ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। সর্বশেষ এক মাস আগে তিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে চিঠি দিয়েছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে বলে জানতে পেরেছি।
কারখানার তরল বর্জ্যে দূষিত হচ্ছে হবিগঞ্জের সুতাং নদীর পানি, স্থানীয়দের এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এ বছরের মার্চে তদন্তে যায় পরিবেশ অধিদপ্তর। সরেজমিন পরিদর্শনে অভিযোগের সত্যতাও পায় তারা।
পরিবেশবাদীদের মতে, মাধবপুর থেকে হবিগঞ্জ পর্যন্ত যেসব শিল্প-কারখানা গড়ে উঠেছে, তাদের বিষাক্ত বর্জ্যে প্রতিনিয়তই দূষিত হচ্ছে এখানকার পরিবেশ-প্রতিবেশ। তা সত্ত্বেও দূষণ রোধে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। দূষণকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণেও প্রশাসন নির্বিকার।
কৃপ্র/এম ইসলাম