কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্ক।।
দেশের পার্বত্যাঞ্চলে কাজুবাদাম উৎপাদনে নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে। সংশ্লিষ্টদের দাবি, সুষ্ঠু উৎপাদন প্রক্রিয়া ও প্রয়োজনীয় অবকাঠামো পেলে কাজুবাদাম দেশের পার্বত্যাঞ্চলের অর্থনীতিতে ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে।
পার্বত্যাঞ্চলে কৃষকদের মধ্যে নতুন করে কাজুবাদাম নিয়ে আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে। এখন এখানে উৎপাদিত কাজুবাদামের মণ সাড়ে ৪ হাজার থেকে ৬ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এ বছর বান্দরবানের ৪ দশমিক ৮ হেক্টর পাহাড়ি জমিতে কাজুবাদাম উৎপাদন হবে। এর সঙ্গে যুক্ত আছেন ৭০০ কৃষক। সবচেয়ে বেশি বাগান রয়েছে থানচি ও রুমা উপজেলায়। রাঙ্গমাটিতে কাজুবাদাম উৎপাদন হচ্ছে ২০ হেক্টর জমিতে। এ জেলায় আবাদ বেশি হচ্ছে বাঘাইছড়ি ও নানিয়ারচর উপজেলায়। অন্যদিকে খাগড়াছড়িতে বাণিজ্যিকভাবে কাজুবাদাম উৎপাদন হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের খাগড়াছড়ির উপপরিচালক মোহাম্মদ সফর উদ্দিন।
সূত্র আরো জানায়, পাহাড়ের পতিত ভূমিতে সামান্য পরিচর্যায় প্রতি হেক্টরে ১ দশমিক ৫ থেকে ১ দশমিক ৮ টন কাজুবাদাম পাওয়া সম্ভব। গত বছর বান্দরবানে ৭ দশমিক ২ টন ও রাঙ্গামাটিতে পাঁচ টন কাজুবাদাম উৎপাদন হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা জানান, শুধু বাদাম হিসেবেই নয়, কাজু ফলের (কাজু আপেল) খোসারও অর্থনৈতিক গুরুত্ব রয়েছে। এ থেকে উৎপাদিত তেল দিয়ে উত্কৃষ্ট মানের জৈব বালাইনাশক তৈরি করা সম্ভব, যা নিরাপদ ফসল ও খাদ্যোৎপাদনে অত্যন্ত জরুরি। বর্তমানে কাজু আপেলের জুসও বেশ জনপ্রিয়। ফলের রস সংগ্রহের পর অবশিষ্ট মণ্ড বা ছোবড়া দিয়ে জৈব সার উৎপাদন করা যায়। ফলে সবদিক থেকেই কাজুবাদাম একটি লাভজনক কৃষিপণ্য।
রুমা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, পাহাড়ে বাণিজ্যিকভাবে কাজুবাদাম আবাদের জন্য একরপ্রতি ২০০টি গাছ রাখা ভালো। এতে বাগানের সঠিক পরিচর্যা করা যাবে, ফলনও ভালো হবে। ফেব্রুয়ারি-মার্চে কাজুবাদাম গাছে ফুল আসে। ফল সংগ্রহ শুরু হয় মে-জুনে। তবে পাহাড়ে আবাদের জন্য কাজুবাদামের জাত নিয়ে আরো গবেষণা প্রয়োজন বলে জানান কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের রাঙ্গামাটির উপপরিচালক পবন কুমার চাকমা।
কৃষিপণ্যটির সম্ভাবনা নিয়ে কৃষি অধিদপ্তর বান্দরবানের উপপরিচালক মো. আলতাফ হোসেন বলেন, কাজুবাদাম আবাদ মোটামুটি সহজ। তবে বাদাম বিক্রি করতে গিয়ে মূল সমস্যা দেখা দেয় প্রক্রিয়াকরণ নিয়ে। কারণ কাজুবাদাম প্রক্রিয়াজাত না করে খাওয়া যায় না। কিন্তু পাহাড়ে উৎপাদিত কাজুবাদাম প্রক্রিয়াকরণে সরকারি কোনো ব্যবস্থা নেই।
তথ্যসুত্র- দৈনিক বনিক বার্তা/ কৃপ্র/এম ইসলাম