
কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্ক।। দেখতে হলদেটে দেহে কালচে রঙয়ের ডোরাকাটা দাগের এই মাছটি নাম বউ মাছ। রানি মাছ নামেও পরিচিত। অঞ্চলভেদে মাছটিকে বেটি, পুতুল ও বেতাঙ্গী নামেও ডাকা হয়। মাছটি খেতে খুবই সুস্বাদ।
প্রকৃতি সংরক্ষণবিষয়ক সংস্থাগুলো এ মাছকে বিপন্ন প্রজাতির মাছ হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে।
তবে সুখবর হলো, সম্প্রতি বিপন্ন প্রজাতির এই মাছটির কৃত্রিম প্রজনন ও পোনা উত্পাদন কৌশল উদ্ভাবন করেছে বাংলাদেশ মত্স্য গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএফআরআই)। ময়মনসিংহে ইনস্টিটিউটের স্বাদু পানিকেন্দ্রে এ সফলতা অর্জিত হয়েছে।
গবেষকদলে ছিলেন: ড. সেলিনা ইয়াছমিন, মো. রবিউল আওয়াল, ড. এ এইচ এম কোহিনুর ও ড. মো. শাহা আলী। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, প্রজননকৌশল উদ্ভাবনের ফলে রানি মাছকে চাষের আওতায় আনা যাবে।
একসময় বাংলাদেশের খালবিল, নদ-নদী, হাওর-বাঁওড়ে এই মাছ প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যেত। জনসংখ্যা বৃদ্ধি, জলাশয় সংকোচন, পানিদূষণ এবং অতি আহরণের ফলে মাছটির বিচরণ ও প্রজনন ক্ষেত্র ধ্বংস হওয়ায় এর প্রাপ্যতা ব্যাপকভাবে হ্রাস পেয়েছে। গত বছর এ মাছের সংরক্ষণ, প্রজনন ও পোনা উৎপাদন বিষয়ে কর্মসূচি গ্রহণ করে বিএফআরআই।
প্রজননের জন্য যমুনা, ব্রহ্মপুত্র ও কংশ নদ এবং নেত্রকোনার হাওর থেকে মাছটি সংগ্রহ করা হয়। পরে তা গবেষণা কেন্দ্রের পুকুরে প্রতিপালন করা হয়। পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, ডিম নিষিক্ত ও ফোটার হার যথাক্রমে ৭৫ শতাংশ ও ৫০ শতাংশ।
গবেষণায় দেখা গেছে, রানি মাছ মে থেকে আগস্ট পর্যন্ত প্রজনন করে থাকে। জুন-জুলাই এদের সর্বোচ্চ প্রজনন মৌসুম। একটি পরিপক্ব স্ত্রী মাছে প্রতি গ্রামে ৮০০ থেকে ৯০০ ডিম পাওয়া যায়।
প্রজননক্ষম রানি মাছ সাধারণত ৮ থেকে ১০ গ্রাম ওজনের হয়। পুরুষ মাছের তুলনায় স্ত্রী রানি মাছ অপেক্ষাকৃত আকারে বড় হয়। এ মাছ প্রধানত প্লাংকটন ও পোকামাকড় খায়।
বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. ইয়াহিয়া মাহমুদ গতকাল বলেন, বিপন্ন মাছগুলোকে ফিরিয়ে আনতে আমরা কাজ করছি।
কৃষি প্রতিক্ষণ/ এম ইসলাম