কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্ক: আম উৎপাদনে বিশ্বে শীর্ষ ১০ এ রয়েছে বাংলাদেশ। আর বাংলাদেশের আমের বিদেশে বেশ জনপ্রিয়তাও রয়েছে। এবার আমের রপ্তানি বাজার বাড়াতে দেশের তিনটি জেলায় একটি করে (ভিএইচটি) প্ল্যান্ট তথা পরিশোধন কেন্দ্র স্থাপন করতে যাচ্ছে সরকার। চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী ও সাতক্ষীরা জেলায় বসবে ভিএইচটি প্ল্যান্ট।
গুণগত মান নিশ্চিত করতে পারলে আমের রপ্তানি বাজার বাড়ানো যাবে। আর ভিএইচটি বসানো হলে আমের অপচয় ১০ শতাংশ কমবে।
গত দেড় বছর আগে বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত কৃষিমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে তাঁর দেশে আম নেওয়ার প্রস্তাব দেন। আর আমের গুণগত মান নির্ধারণে তখনই ভিএইচটি প্ল্যান্ট নিয়ে আলোচনা হয়। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য বলছে,
দেশে ২ লাখ ৩৫ হাজার একর জমিতে আমবাগান রয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের হিসাব মতে দেশে আমের উৎপাদন ২৪ লাখ টনের মতো। আর আমের বাজার প্রায় ১৪ হাজার কোটি টাকার।
কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ ইউসুফ বলেন, বাংলাদেশে যথেষ্ট পরিমাণে উৎপাদন হলেও উপযুক্ত প্রক্রিয়াজাতকরনের অভাবে প্রচুর আম নষ্ট হয়। যে সময়ে আম সংগ্রহ করা হয়, তখন তাপমাত্রা ও আর্দ্রতা দুটোই বেশি থাকে। এ কারণে উৎপাদিত আমের ২০ থেকে ৩০ শতাংশ সংগ্রহের সময়ই নষ্ট হয়ে যায়।
কৃষি মন্ত্রণালয় বলছে, যেখানে যেখানে প্ল্যান্ট বসানো হবে, সেসব জায়গা ঠিক হয়ে গেছে। যাঁরা আম রপ্তানি করেন, তাঁরা আম সংগ্রহ করে প্ল্যান্টে নিয়ে আসবেন। এ প্রক্রিয়ায় সংরক্ষিত আম আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন হবে।
জানা গেছে, তিনটি ভিএইচটি প্ল্যান্ট বসাতে খরচ হবে ১০০ কোটি টাকা। পুরো টাকাই সরকারের তহবিল থেকে জোগান দেওয়া হবে। তবে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারিভাবেও প্ল্যান্ট বসানোর তাগিদ দিয়েছেন পরিকল্পনা কমিশনের অতিরিক্ত সচিব মতিউর রহমান। তিনি বলেন, ‘আম রপ্তানি বাড়াতে ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট বসানোর প্রস্তাব আমরা পেয়েছি। আমাদের দেশে এখন বিজ্ঞানভিত্তিক ও স্বাস্থ্যসম্মতভাবে আম পাকানো কম হয়। তাই কাঙ্ক্ষিত পরিমাণে আম রপ্তানি হয় না। এ কারণে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি খাতেরও প্ল্যান্ট নির্মাণে এগিয়ে আসা উচিত।’
বেশ কয়েক বছর ধরেই ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে আম রপ্তানি হচ্ছে। এসব আম নেন প্রবাসী বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা। উত্তরবঙ্গের রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নওগাঁ ও সাতক্ষীরার চুক্তিভিত্তিক চাষিদের কাছ থেকে আম সংগ্রহের পর মোড়কজাত করে কার্গো বা পণ্য ও যাত্রীবাহী উড়োজাহাজের মাধ্যমে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আম পাঠান রপ্তানিকারকেরা।
চলতি বছরে ৯০০ টন আম রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছেন রপ্তানিকারকেরা।
ভিএইচটি বসানো গেলে আম রপ্তানি ৫০০ কোটি টাকায় উন্নীত করা সম্ভব হবে।
তথ্য সূত্র : প্রথম আলো /কৃষি প্রতিক্ষণ / এম ইসলাম