
কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্ক: আম রপ্তানিকারক দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান সবার নিচে। কিন্ত বিশ্বে আম উৎপাদনে বাংলাদেশ এবার অষ্টম থেকে সপ্তম স্থানে উঠে এসেছে। গত বছর দেশে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকার আম উৎপাদিত হয়েছিল।
এবার করোনার কঠোর বিধিনিষেধ এবং যোগাযোগ ব্যবস্থার দুর্বলতার কারণে দেশের বাজারে আমচাষিরা ভালো দাম পাননি। আমের রপ্তানি বাজারে জায়গা করে নিতে না পারলে আমচাষিদের পক্ষে এ ধরনের পরিস্থিতিতে শুধু লোকসানই গুনতে হবে। বিপুল বিনিয়োগে আম চাষ করেও লাভের মুখ দেখবে না। সংরক্ষণের অভাবে প্রচুর আম বাগানেই নষ্ট হচ্ছে।
গতকাল বিকেলে কৃষি মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত এক সভায় এসব কথা জানানো হয়। মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষ থেকে ভার্চ্যুয়ালি ‘আম রপ্তানি বৃদ্ধিতে করণীয়’ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে ওই মতবিনিময় সভায় আমচাষিসহ সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তারা অংশ নেন। তাঁরা দেশে নিরাপদ ও বিষমুক্ত আম চাষ এবং আমের আন্তর্জাতিক বাজার অনুসন্ধানের ওপর জোর দেন।
বিদেশে আম রপ্তানির ক্ষেত্রে অন্যতম সমস্যা হচ্ছে রপ্তানিযোগ্য উন্নত জাতের আমের অভাব। দেশের আমের জাতগুলোর সেলফ লাইফ কম, অর্থাৎ দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়।
সভায় জানানো হয়, ২০২০ সালে থাইল্যান্ড বিশ্বের সর্বোচ্চ ৭৩ কোটি ৪০ লাখ মার্কিন ডলারের আম রপ্তানি করেছে। ভারত ১৩ কোটি ৭০ লাখ মার্কিন ডলার ও পাকিস্তান ১০ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলারের আম রপ্তানি করেছে। সেখানে বাংলাদেশ মাত্র ৫০ হাজার ডলারের আম রপ্তানি করেছে, যার বড় অংশ মূলত প্রবাসী বাংলাদেশি ক্রেতারা আমদানি করেছে।
সভায় আমের রপ্তানি বাড়াতে সর্বাত্মক উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক। তিনি বলেন, ‘দেশের আমকে আমরা ব্যাপকভাবে বিশ্ববাজারে নিয়ে যেতে চাই। সে জন্য রপ্তানি বাধাগুলো চিহ্নিত করে তা নিরসনে কাজ চলছে। ইতিমধ্যে নিরাপদআমের নিশ্চয়তা দিতে তিনটি ভ্যাকুয়াম হিট ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট স্থাপনের কাজ চলছে। ফলে আগামী বছর আম রপ্তানির পরিমাণ অনেক বেড়ে যাবে।’
মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মেসবাহুল ইসলাম। সভাটি সঞ্চালনা করেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. রুহুল আমিন তালুকদার। এ সময় কৃষি মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, আমচাষি, বিভিন্ন প্রক্রিয়াজাতকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
কৃষি প্রতিক্ষণ/ এম ইসলাম