কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্ক: চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার রাঙ্গিয়ারপোতা গ্রামের মোকাররম হোসেন। বাণিজ্যিকভাবে আনার চাষে শতভাগ সফল হয়েছেন।
মোকাররম হোসেনের কাছ থেকে আনার চাষের ব্যাপারে বিভিন্ন পরামর্শও নিচ্ছেন নতুন উদ্যোক্তারা।
এ বছর বাগান থেকে প্রায় ২৫ লাখ টাকার আনার ফল বিক্রি হবে বলে তিনি আশা করছেন।
কৃষি উদ্যোক্তা মোকাররম হোসেন তিন বছর আগে পাঁচ বিঘা জমিতে চাষ করেন এ বিদেশি ফলের। ইতোমধ্যে ফলে ভরিয়ে তুলেছেন গোটা আনার বাগান। এক সপ্তাহ পরেই বাগান থেকে বাণিজ্যিকভাবে ফল বিক্রিও শুরু হবে।
এর আগে মোকাররম হোসেন কয়েক বছর থেকেই বিভিন্ন ফলের চাষ করার চেষ্টা করে আসছেন। কিন্তু বার বার তিনি ব্যর্থ হয়েছেন।
কৃষি উদ্যোক্তা ও আনার চাষি মোকাররম হোসেন বলেন, প্রথমে তিনি ইউটিউবে আনার চাষ দেখে এই ফলটি চাষ করতে আগ্রহী হয়ে ওঠেন। ফলটি চাষের জন্য তিনি ভারতের একটি কৃষি খামারের সাথে যোগাযোগ করেন। পরবর্তীতে তাদের পরামর্শ নিয়েই এই ফলের বাগান শুরু করেন। তিন বছর আগে পাঁচ বিঘা জমিতে এসসিটি ভাগুয়া জাতের ৮০০টি গাছ রোপণ করেন।
চারা রোপণের এক মাস পূর্বে তিনি ওই জমিতে ৮ ফুট করে দূরত্বে এবং প্রতি লাইনের মাঝে ১২ ফুট জায়গা ফাঁকা রেখে একটি করে গর্ত করেন। এক ফুট গভিরতার ওই গর্তের ভেতর ৩০ কেজি করে গবর সার (জৈব সার), ৫শ’ গ্রাম চুন এবং ২ কেজি করে কেঁচো সার (ভার্মি কম্পোজ) দিয়ে চারা লাগানোর জন্য জমি উপযুক্ত করে তোলেন।
তিনি জানান, বছরে ২-৩ বার ফল সংগ্রহ করা যাবে আনার গাছ থেকে। প্রতিটি গাছ থেকে দুই বারে ৫০ কেজি ফল পাওয়া যাবে। এরই মধ্যে চলতি বছরে বাগানে ৮০০ আনার গাছে প্রচুর পরিমাণে ফল এসেছে। বর্তমানে প্রতি কেজি আনার ২শ’ টাকা থেকে ২৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। সবকিছু ঠিক থাকলে এবার প্রায় ২৫ লাখ টাকার আনার বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা করছেন তিনি। এর আগে গত বছর তিনি ৫ লাখ টাকার আনার বিক্রি করেছিলেন।
মোকাররম হোসেনের বাগানের গাছে গাছে শোভা পেয়েছে বিভিন্ন সাইজের আনার। বাগানে আনার থোকায় থোকায় ডালে ঝুলছে। আনার বাগান দেখতে প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শতশত মানুষ ভিড় জমাচ্ছেন বাগানটিতে।
চুয়াডাঙ্গার কৃষি অধিদফতরের উপ-পরিচালক আলী হাসান জানান, এই ফলটি চাষের ব্যাপারে আমরা তাকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করেছি। স্থানীয় ধনী ও মাঝারি কৃষকরা আনার চাষে এগিয়ে আসলে দেশে চাহিদা মিটানোর পরও প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব হবে। আমাদের এলাকায় এটাই প্রথম আনার চাষ।মোকাররম হোসেন আনার চাষে সাফল্য পাওয়ায় চুয়াডাঙ্গা অঞ্চলে বাণিজ্যিকভাবে আনার চাষের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
তথ্য সুত্র: Jagonews24/ কৃষি প্রতিক্ষণ/এম ইসলাম।