কৃষি বিজ্ঞানী ড. কে. এম.খালেকুজ্জামান: লেবু জাতীয় গাছের দাদ বা স্ক্যাব (Scab) রোগ
রোগের কারণঃ এলসিনোই ফসেটি (Elsinoe fawcetti) নামক ছত্রাকের আক্রমণে এ রোগ হয়ে থাকে।
রোগের বিস্তারঃ লেবুগাছের মৃত অংশে এস্কোস্পোর থাকে। উপযুক্ত আবহাওয়ায় (তাপমাত্রা ১৬-২৩ ডিগ্রি সেঃ ও ৬৬-১০০% আর্দ্রতা) এস্কোস্পোর অংকুরোদগমের মাধ্যমে কনিডিয়া উৎপন্ন করে। বৃষ্টির ঝাপটায় কনিডিয়া গাছের পাতা, ডাল ও ফলে ছড়িয়ে পড়ে এবং আর্দ্র স্থানে আক্রমণ করে। আক্রমণের জন্য উপযোগী তাপমাত্রা ১৬-২৩ ডিগ্রি সেঃ। অতিরিক্ত শিশির, কুয়াশা এবং আর্দ্রতা রোগ বিস্তারের জন্য খুবই অনুকূল।
রোগের লক্ষণঃ পাতায়, কচি ডালে ও ফলে এ রোগ হয়। কচি পাতার উপর ছোট ছোট ফিকে কমলা রংগের দাগ পড়ে। রোগ বৃদ্ধির সাথে সাথে দাগ আঁচিলের ন্যায় উঁচু হয়ে উঠে। আঁচিলের নীচে পাতার উল্টো দিকে কিছুটা ডেবে যায়।
আঁচিলের উপর ফিকে হলদে কমলা রঙের মামড়ি পড়তে দেখা যায় এবং ক্রমে তার রং ধূসর হয়ে যায়।
অতিশয় রোগাক্রান্ত পাতা অত্যধিক মাত্রায় কুঁচকে যায় ও বিকৃত হয়ে যায়।
রোগের ব্যাপক প্রসার ঘটলে ফলে কর্কের ন্যায় খসখসে হয়ে বিশ্রী দেখায়।
রোগের শেষের দিকে আঁচিল ফেটে যেতে পারে। মারাত্মকভাবে আক্রান্ত ফল শক্ত হয় ও পরিপক্ক হওয়ার আগেই ঝরে পড়ে।
রোগের প্রতিকার: নীরোগ বীজতলার চারা ব্যবহার করতে হবে। গাছ থেকে পাতা, ডালপালা ও ফল সংগ্রহ করে পুড়ে ফেলতে হবে।
গাছে রোগ দেখা দেয়ার সাথে সাথে কপার অক্সিক্লোরাইড গ্রুপের ছত্রাকনাশক (যেমন-কুপ্রাভিট ৫০ ডব্লিউপি) প্রতি লিটার পানিতে ৫ গ্রাম হারে অথবা কার্বেন্ডাজিম + মেনকোজেব গ্রুপের ছত্রাকনাশক (যেমন-কমপেনিয়ন ৭৫ ডব্লিউপি) ২ গ্রাম হারে মিশিয়ে ১০ দিন পর পর ৩-৪ বার গাছে স্প্রে করতে হবে।
লেখকঃ বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার প্রাপ্ত কৃষি বিজ্ঞানী, উর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা (উদ্ভিদ রোগতত্ত্ব),
মসলা গবেষণা কেন্দ্র, বিএআরআই, শিবগঞ্জ, বগুড়া।