কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ ব্লাস্ট ধানের একটি ছত্রাকজনিত রোগ। বাংলাদেশে এটি ধানের অন্যতম প্রধান রোগ। চারা অবস্থা থেকে ধান পাকার পূর্ব পর্যন্ত যে কোনো সময় এ রোগ দেখা দিতে পারে। এটি প্রধানত লিফ ব্লাস্ট ও নেক ব্লাস্ট নামে পরিচিত। অনুকূল পরিবেশে রোগটি দ্রুত বিস্তার লাভ করে এবং ধানের ব্যাপক ক্ষতি করে থাকে। রোগ প্রবণ জাতে রোগ সংক্রামণ হলে ৮০ ভাগ পর্যন্ত ক্ষতি হতে পারে। ব্লাস্ট রোগ বীজের মাধ্যমে ছড়ায়। এছাড়াও রোগাক্রান্ত গাছের জীবাণু বাতাস ও পোকামাকড়ের মাধ্যমে এক জমি থেকে অন্য জমিতে ছড়িয়ে পড়ে। ব্লাস্ট রোগটি ধানের পাতা, গিট, শীষের গোড়া বা শাখা-প্রশাখা এবং দানায় আক্রমণ করে থাকে।
আক্রান্ত পাতায় প্রথমে হালকা ধূসর রংয়ের ভিজা দাগ দেখা যায়। আস্তে আস্তে তা বড় হয়ে মাঝখানটা ধূসর বা সাদা ও কিনারা বাদামী রং ধারণ করে। দাগ গুলো একটু লম্বাটে হয় এবং দেখতে অনেকটা মানুষের চোখের মত। অনুকূল আবহাওয়ায় রোগটি দ্রুত বৃদ্ধি পায় এবং একাধিক দাগ মিশে গিয়ে বড় দাগের সৃষ্টি করে। শেষ পর্যন্ত পুরো পাতা এমনকি পুরো গাছটিই মারা যেতে পারে। গিট আক্রান্ত হলে আক্রান্ত স্থান কালো ও দুর্বল হয় এবং পানি ও খাদ্য না পেয়ে আক্রান্ত গিটের উপরের অংশ মারা যায়। শীষের গোড়া আক্রান্ত হলে সেখানে বাদামী দাগ পড়ে এবং পচে যায়, একে বলে নেক ব্লাস্ট। ধান পুষ্ট হওয়ার পূর্বে রোগের আক্রমণের ফলে শীষের সব ধান চিটা হয়ে যেতে পারে।
রোগের অনুকূল পরিবেশঃ
- অতিরিক্ত নাইট্রোজেন সার ব্যবহার করলে;
- রোগাক্রান্ত বীজ ব্যবহার ও রোগপ্রবণ ধানের জাত চাষ করলে;
- জমিতে বা জমির আশেপাশে অন্যান্য পোষক গাছ বা আগাছা থাকলে;
- দিনে প্রচন্ড গরম ও রাতে ঠান্ডা অবস্থা বিরাজ করলে;
রোগের দমন ব্যবস্থাপনাঃ
- রোগের প্রাথমিক পর্যায়ে বিঘা প্রতি (৩৩ শতকে) ৫ কেজি এমওপি সার উপরি প্রয়োগ করতে হবে।
- রাসায়নিক দমনঃ নাটিভো / ফিলিয়া / পচামিন প্লাস/ ট্রুপার / আমোক প্রপেল / জিল / সানফাইটার / কম্বিটু / দিফা / বেনলেট / ইমিন্যান্ট প্রো / টেনস্টার বা অন্যান্য অনুমোদিত ছত্রাকনাশকের প্যাকেট বা বোতলের লেবেলে অনুমোদিত মাত্রায় সঠিকভাবে স্প্রে করতে হবে।
- রোগের প্রকোপ অনুযায়ী ৪/৫ দিন পর ২য় বার স্প্রে করতে হবে।
কৃপ্র/ এম ইসলাম