কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্ক:যশোর জেলায় সবজি-মশলার চাষাবাদে গড়ে উঠছে ৯ সহস্রাধিক পারিবারিক পুষ্টি বাগান। বসতবাড়ির আঙিনার পাশাপাশি অনাবাদি ও পতিত জমিতেও এই বাগান গড়ে তোলা হচ্ছে বলে কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে।
যশোর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, পারিবারিক পুষ্টি বাগান স্থাপনের উদ্দেশ্য হচ্ছে অনাবাদি, পতিত ও বসতবাড়ির অব্যবহৃত জমি ব্যবহারের মাধ্যমে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি করা। এতে একদিকে পারিবারিক পুুষ্টির চাহিদা পূরণ হবে,অন্যদিকে মশলা জাতীয় ফসলেরও উৎপাদন হবে। পারিবারিক পুষ্টি বাগানের যাবতীয় ব্যয় সরকারের তরফ থেকে বহন করা হচ্ছে বলে সূত্রে জানা গেছে।
কৃষি বিভাগ সূত্রে আরো জানা গেছে,জেলায় ইতিমধ্যে ১৩৬টি পুষ্টি বাগানের প্রদর্শনী স্থাপন করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে জেলার প্রতিটি ইউনিয়নে পুষ্টি বাগানসহ কচু ও মশলা জাতীয় ফসলের এই প্রদর্শনী স্থাপন করা হবে। কমিউনিটি বেজ এই প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য পুষ্টি বাগান স্থাপন সংশ্লিষ্ট কৃষকদের এবং জেলার ৮ উপজেলায় কর্মরত উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের প্রথম ব্যাচের প্রশিক্ষণ সমাপ্ত হয়েছে।আগামিতে প্রকল্প সংশ্লিষ্ট আরো কৃষক ও উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। ২০২৫ সাল নাগাদ জেলার ৯৩টি ইউনিয়নে ১০০টি করে পারিবারিক পুষ্টিবাগানের প্রদর্শনী স্থাপন করা হবে।
মুজিববর্ষে যেসব গৃহহীন বসতবাড়ি পেয়েছেন সেসব বাড়িতে প্রদর্শনীর ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেয়া হবে। ইতোমধ্যে জেলার কেশবপুর উপজেলার দুটি আশ্রয়ণ প্রকল্পে পুষ্টি বাগান স্থাপনের কাজ শুরু করা হয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর যশোরের উপ-পরিচালক বাদল চন্দ্র বিশ্বাস জানান, ‘অনাবাদি পতিত জমি ও বসতবাড়ির আঙিনায় পারিবারিক পুষ্টি বাগান স্থাপন’ শীর্ষক প্রকল্পের মাধ্যমে এই কর্মকান্ড পরিচালিত হচ্ছে।
পারিবারিক পুষ্টির চাহিদা মিটানোর জন্য কৃষক পরিবারগুলোতে সবজি ও মশলার চাষাবাদ হবে। গড়ে উঠবে পুষ্টি বাগান, কচু ও আদাসহ মশলা জাতীয় ফসলের প্রদর্শনী। পাশাপাশি এই প্রকল্প বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে জমিতে ভার্মি কম্পোস্ট ও জৈব সারের ব্যবহার বাড়বে। ফলে মাটিতে প্রচুর জৈব পদার্থ যুক্ত হবে। মাটির ক্ষয় কম হবে। মাটির স্বাস্থ্য ভাল থাকবে ও সংরক্ষণ হবে পরিবেশ। এছাড়া ফসল চাষের আধুনিক কলাকৌশল বিষয়ে প্রশিক্ষণ পাবেন প্রকল্প অঞ্চলের জনগোষ্ঠী। ফলে উৎপাদনের লাগসই ও যুগোপযোগী প্রযুক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে তারা শস্যের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধিতেও ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবেন। এমনকি প্রকল্পভুক্ত ফসলের উৎপাদন, সংগ্রহ, গ্রেডিং, প্যাকিংসহ বিভিন্ন কাজে সম্পৃক্ত হয়ে নারীদের কর্মসংস্থান হবে। ফলে পারিবারিক আয় বৃদ্ধির পাশাপাশি পুষ্টিরও উন্নয়ন ঘটবে।
প্রকল্পটির আওতায় গ্রামীণ জনপদের বসতবাড়ির আঙিনা, পুকুর ও খালের পাড়, বাড়ির আশপাশ, স্যাঁতস্যাঁতে ছায়াযুক্ত স্থানে সবজি-মশলা চাষ হবে। পারিবারিক পুষ্টির চাহিদা মিটানোর জন্য কৃষক পরিবারগুলোতে সবজি ও মশলার চাষাবাদ হবে। এতে প্রতি ইঞ্চি অব্যবহৃত ও অনাবাদি জমির ব্যবহার নিশ্চিত হবে। এ প্রকল্প বাস্তবায়নের মধ্যদিয়ে মানুষের পুষ্টিহীনতা দূর হওয়ার পাশাপাশি খাদ্যনিরাপত্তাও নিশ্চিত হবে। এছাড়া দেশের বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের পাশাপাশি পুষ্টি চাহিদাও পূরণ হবে বলে তিনি জানান।
সূত্রঃ বাসস/ কৃষি প্রতিক্ষণ/ এম ইসলাম