
‘মাল্টা বাগান পরিদর্শনে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ সাইফুর রহমান সাথে কৃষক রনি মিয়া’
কৃষি প্রতিক্ষণ রিপোর্টঃ বগুড়া জেলার শিবগঞ্জ উপজেলায় জনপ্রিয় হয়ে উঠছে বারি মাল্টা-১ এর চাষাবাদ। লেবুজাতীয় ফসলের সম্প্রসারণ, ব্যবস্থাপনা ও উৎপাদন বৃদ্ধিকরন প্রকল্পের আওতায় শিবগঞ্জ উপজেলায় গড়ে উঠেছে ছোট বড় প্রায় ১৬০ টি মাল্টা বাগান।
সরজমিনে উপজেলার শিবগঞ্জ, দেউলী, রায়নগর, কিচক ইউনিয়নের অনেক মাল্টা বাগানে দেখা যায় থোকায় থোকায় ধরে আছে মাল্টা।
শিবগঞ্জের আমতলী এলাকার কৃষক মোঃ শহিদ জানায়, কৃষি অফিস থেকে প্রায় দুই বছর আগে মাল্টার প্রদর্শনী পাই। গত বছর থেকে ফল ধরা শুরু হয়েছে তবে এবার প্রতিটি গাছে প্রচুর ফল ধরেছে। আশা করছি গাছ প্রতি গড়ে ২০-৩০ কেজি ফল পাবো।
উপজেলার রহবল এলাকার তরুন কৃষক মোঃ রনি মিয়া বলেন, আমার ২০ শতকের বাগানের প্রতিটি গাছে এবারই প্রথম ফল এসেছে তবে মনে হচ্ছে আগামী বছর থেকে প্রচুর ফলন পাওয়া যাবে। তিনি আরও জানান চারা রোপনের পর থেকে ফল ধরা পর্যন্ত সময়ে মাল্টা বাগানে অন্যান্য সাথী ফসল করা যায় এতে কোন সমস্যা হয়না।
মাল্টা সাইট্রাস পরিবারভুক্ত একটি বিদেশি ফল হলেও এখন সফলভাবে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে দেশেই চাষ হচ্ছে এ ফল। কমলা আর বাতাবি লেবুর সংকরায়ণে এ ফলের সৃষ্টি। এর আদি উৎপত্তিস্থল ভিয়েতনাম, দক্ষিণ চীন এবং উত্তর-পশ্চিম ভারত। রোগির পথ্য হিসেবে মাল্টা হিতকর। খেতে সুস্বাদু। দারুণ গন্ধ। মাল্টায় পুষ্টিতে ভরপুর। পুষ্টিবিদদের মতে, এর প্রতি ১০০ গ্রাম ফলে (আহারোপযোগী) ২০০ মিলিগ্রাম ক্যারোটিন এবং ভিটামিন সি আছে প্রায় ৫০ মিলিগ্রাম। অন্য পুষ্টি উপাদানের মধ্যে শর্করা, আমিষ, চর্বি, ক্যালসিয়াম, লৌহ, ভিটামিন বি১, ভিটামিন বি২ এবং খাদ্যশক্তি রয়েছে যথাক্রমে ১২ মিলিগ্রাম, ১ মিলিগ্রাম, ০.২ মিলিগ্রাম, ৪০ মিলিগ্রাম, ০.৮ মিলিগ্রাম, ০.১১৩ মিলিগ্রাম, ০.০৪৬ মিলিগ্রাম এবং ২০০ কিলোক্যালরি। এতে কিছু ঔষধিগুণও আছে। সর্দিজ্বর কমাতে মাল্টা বেশ উপকারী। এর খোসা দিয়ে প্রসাধনী তৈরি হয়। এছাড়া ওষুধ শিল্পেও ব্যবহার হয়। সারা বিশ্বের মত ফলটি বাংলাদেশেও বেশ জনপ্রিয়।
উপজেলার রহবল ব্লকে কর্মরত উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ সাইফুর রহমান বলেন, দিনদিন বাণিজ্যিক ভাবে মাল্টার চাষ বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। বারি মাল্টা-১ পরিপক্ক হলে আকারে বেশ বড় ও সুস্বাদু হয়। এ মাল্টা আমাদের পুষ্টির চাহিদা পূরণে ব্যাপক ভূমিকা রাখতে পারে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ আল মুজাহিদ সরকার বলেন, এ এলাকার মাটি মাল্টা চাষের জন্য বেশ উপযোগী। মাল্টার চাষ বৃদ্ধি করতে আমরা প্রকল্পের এবং উদ্বুদ্ধকরণের মাধ্যমে ছোট-বড় অনেক বাগান এ উপজেলায় গড়ে তুলেছি এবং ভবিষ্যৎতে আরও বেশি বেশি বাগান স্থাপনে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
কৃষি প্রতিক্ষণ/ এম ইসলাম