কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্ক : শরতের শুভ্র কাশফুলে ছেয়ে গেছে কুমিল্লার চরাঞ্চল। অভুতপুর্ব এক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়েছে কুমিল্লার নদ-নদী তীরে জেগে ওঠা চরাঞ্চলে। এ অপার সৌন্দর্য প্রকৃতিপ্রেমীদের পর্যটনের খোরাক মেটানোর পাশাপাশি হয়ে উঠেছে চরবাসীর জীবিকার উৎস।
বিকেলের স্নিগ্ধ বাতাস। নীল আকাশে খন্ড খন্ড সাদা মেঘ। ধুধু বালু চরে সাদা কাশফুলের বিছানা। এ যেন প্রকৃতির এক অপরুপ লীলা। দূর থেকে দেখলে যে কারো মন ছুটে যাবে সুন্দরের কাছে। সড়কের দুপাশে শরতের প্রতিচ্ছবি কাশফুল ফুটে নান্দনিক সৌন্দর্যে রুপ নেয় কুমিল্লার মেঘনা উপজেলা প্রবেশদ্বার। এ দৃশ্য উপভোগ করতে ছুটে আসছে দূর-দূরান্তের মানুষ। আঞ্চলিক সড়কের দুপাশে এমন সৌদর্য মুগ্ধ করে পথচারীদের। সৌন্দর্য বর্ধন ও নিরাপত্তার জন্য বসানো হয়েছে সোলার প্যানেল। ক্ষণিকের জন্য শহুরে কোলাহল ছেড়ে নদী, বালুচর, সাদা মেঘ, কাশফুলের এ মিতালী দেখে অভিভুত প্রকৃতিপ্রেমিরা। বিনা যতেœ গজিয়ে ওঠা এ কাশবনের খড়েরও চাহিদা রয়েছে। এ থেকে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হয়ে উঠছে চরের মানুষ।
কাঁচা কাশগাছ গরুর খাবার। পাকা কাশের খড় দিয়ে হয় ঘরের ছাউনি। এছাড়া, এর নানা ওষুধি গুণের কথাও জানান উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের কামরুল ইসলামের নামের এক শিক্ষক। অবসরে ঘুরে বেড়াতে শেষ বিকেলের আলোয়, অনেকেই আসছেন কুমিল্লার মেঘনার চরাঞ্চলের কাশবনের শ্বেতশুদ্ধ প্রকৃতির সান্নিধ্যে।
বিভিন্ন স্থান থেকে বেশ কয়েকটি টিমসহ বন্ধু বান্ধাব ও পরিবার নিয়ে অনেকেই ঘুরে আসা, তাদের মুখে গল্প শুনে এবং সোশ্যাল মিডিয়া ফেসবুকের মাধ্যমে জেনে প্রতিদিনই অনেক মানুষ ঘুরতে বা দেখতে যাচ্ছেন এ কাশফুল। ঘুরতে গিয়ে প্রত্যেকেই যেন নিজেকে বিলিয়ে দিচ্ছে প্রকৃতির এ সৌন্দর্যের মাঝে।
ঘুরতে আসা অনেকেই জানান, কালের পরিক্রমা ও আধুনিকতার ছোঁয়ায় কুমিল্লা থেকে হারাতে বসেছে শরতের কাশফুল। একটা সময় কুমিল্লার বিভিন্ন এলাকায় কাশবনের কাশফুলগুলো দোল খেতো মৃদু বাতাসে।
কাশবনে ঘুরতে আসা সদ্য বিবাহিত আলমগীর হোসেন ও মুনিয়া দম্পতি বাসসকে জানান, শহরের কোলাহল আর ঘরবন্দি থাকতে থাকতে মনমানসিকতা কেমন যেন হয়ে গেছে। তাই দূরত্ব হলেও বিকেলটা ভালোই কেটেছে। এখানে না এলে বোঝা যাবে না। অন্যরকম অনুভূতি। মন ভরে ওঠে, মুগ্ধ হয়ে যায়। কাশফুলের নরম ছোঁয়ায় আর আবেশে মনটাও যেন নরম হয়ে যায়।
এ বিষয়ে মেঘনার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. রতন শিকদার জানান, এটা একটা বিশাল চর। কয়েকশত একর জমি হবে। এখানে মালিকানা ও খাস জমি রয়েছে। চরের ওই কাশবন এলাকায় প্রতিদিন বহু দূর-দুরান্ত থেকে অনেকে ঘুরতে আসছে।
সুত্রঃ বাসস /কৃষি প্রতিক্ষণ/ এম ইসলাম