কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ পুষ্টিতে ভরপুর সুপারসিড চিয়ার প্রথম চাষ হয়েছে নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে। দানাদার এ ফসল মানবদেহে বিভিন্ন রোগের কার্যকরী মহৌষধ হিসেবে কাজ করে। এ অঞ্চলের মাটি ও আবহাওয়া চিয়া চাষে উপযোগী হওয়ায় কৃষকদের মধ্যে নতুন সম্ভাবনার সৃষ্টি হয়েছে।
ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা নতুন এ ফসলের জাত উদ্ভাবন করে নাম দিয়েছেন বাউচিয়া।
জানা যায়, লাতিন আমেরিকা ও ম্যাক্সিকোসহ ইউরোপের দেশগুলোতে উৎকৃষ্ট পুষ্টি ও ঔষধি ফসল হিসেবে চিয়ার চাষ হয়। শক্তি, সাহস ও রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা জোগানোর জন্য খাদ্যতালিকায় চিয়া সিড বা বীজকে অত্যন্ত মূল্যবান মনে করেন সেখানকার অ্যাজটেকবাসীরা। চিয়াসিডে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড, কোয়েরসেটিন, কেম্পফেরল, ক্লোরোজেনিক ও ক্যাফিক অ্যাসিড নামক এন্টিঅক্সিডেন্ট। নিরপেক্ষ স্বাদের কারণে চিয়া সব ধরনের খাবারের সঙ্গে মিশিয়ে খাওয়ার উপযুক্ত।
এ অঞ্চলের প্রথম চিয়াচাষি মাগুড়া শাহ্পাড়া গ্রামের কৃষক শাহজাহান মিয়া জানান, উপজেলা কৃষি অফিসের সহায়তায় পরীক্ষামূলকভাবে ২০ শতাংশ জমিতে বাউচিয়ার চাষ করেছি। কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা এর চাষ পদ্ধতি শিখিয়ে দিয়েছেন। রোগবালাই না থাকায় ও পরিচর্যা কম লাগায় ২০ শতাংশ জমিতে খরচ হয়েছে তিন হাজার টাকা। ওই জমিতে বাউচিয়ার ফলন হবে ৪০ থেকে ৫০ কেজি। ৬০০ থেকে এক হাজার টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। ন্যায্যমূল্য পেলে আগামীতে আরও বেশি জমিতে এ ফসল চাষ করব।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা তুষার কান্তি রায় জানান, ময়মনসিংহ গ্রিন এ্যালি এগ্রো লিমিটেডের কাছ থেকে বীজ সংগ্রহ করে ওই কৃষকের মধ্যে সরবরাহ করা হয়। চিয়া সাধারণত একটি তিল ও রাই সরিষার শস্যদানার মতো। ফসলটি দেশীয় পদ্ধতিতে সারিবদ্ধ কিংবা বীজ ছিটিয়ে চাষাবাদ করা যায়। অক্টোবর মাসে বীজ রোপণ করতে হয়। গম বা সরিষার মতো মাড়াই করে চালুনি, মশারির কাপড়, কুলা দিয়ে সহজে পরিষ্কার করা যায়।
উপজেলা কৃষি অফিসার হাবিবুর রহমান বলেন, বাউচিয়া মানে শক্তি, এটি দানাজাতীয় খাদ্য। বাউচিয়ার মধ্যে ১০ প্রকার ঔষধিগুণ বিদ্যমান আছে<র্লযা ক্যান্সার, ডায়াবেটিস প্রতিরোধসহ হার্ড অ্যাটাকের মতো জটিল রোগের মহৌষধ হিসেবে কাজ করে। নতুন এ ফসলের চাষাবাদ ছড়িয়ে পড়লে দেশের মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করবে। এর চাষাবাদ বৃদ্ধির লক্ষ্যে মাঠপর্যায়ে কৃষকদের মাঝে কাজ করা হচ্ছে। সুত্রঃ যুগান্তর/ এম ইসলাম