কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ মাখনা এক প্রকারের জলজ ঔষধি উদ্ভিদ। ঔষধি গুণসম্পন্ন এই উদ্ভিদের বৈজ্ঞানিক নাম : Euryale ferox।
বাংলাদেশের বৃহত্তর সিলেট এবং কিশোরগঞ্জ জেলার হাওড়অঞ্চলে প্রাকৃতিক ভাবেই মাখনা জন্মায়। কালের বিবর্তনে ও সঠিক মূল্যায়নের অভাব, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুপ প্রভাবে আমাদের প্রকৃতি থেকে হারিয়ে যাচ্ছে ওষুধি গুণসম্প এ উদ্ভিদটি।
বাংলাদেশের কোথাও মাখনার বানিজ্যিক চাষ না হলেও ভারত,
রাশিয়া,বার্মা,জাপান,কোরিয়া, থাইল্যান্ড ও চীনে এর চাষ করা হয় বলে জানা যায়।
মাখনার ফল এশিয়ার অনেক দেশেই বেশ জনপ্রিয়। এর প্রধান কারণ ফলটির পুষ্টিগুণ। শারীরিক সক্ষমতা বৃদ্ধি, দীর্ঘস্থায়ী ডায়রিয়া, হৃদ্রোগ, বন্ধ্যাত্ব, প্লীহার সমস্যা, যকৃতের অসুখ, কাশি ও ডায়াবেটিসজনিত অসুস্থতার প্রতিকারে প্রাচ্যের চিকিৎসায় বহুদিন ধরেই মাখনা ব্যবহৃত হচ্ছে। অধিক পটাশিয়াম এবং কম সোডিয়াম থাকায় যাঁরা উচ্চ রক্তচাপে ভোগেন, তাঁদের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে ফলটি।
প্রতি ১০০ গ্রাম মাখনা ফলে শক্তির পরিমাণ ৩৫০ কিলোক্যালরি, যাতে স্নেহ পদার্থ-০.১ গ্রাম, প্রোটিন-৯.৭ গ্রাম, কার্বোহাইড্রেট-৭.৭ গ্রাম, ফাইবার বা আঁশের পরিমাণ-৭.৬ গ্রাম।
মাখনার ফল ও বীজ দিয়ে বিভিন্ন ধরনের মুখরোচক খাবার তৈরি হয়। ফুচকা মচমচে ও মজাদার করার জন্য ফলের ব্যবহার লক্ষ করা যায়।
মিঠাপানির জলাধার, উন্মুক্ত জলাভূমি বা বিলে মাখনা জন্মে। মাখনা কাঁটাযুক্ত জলজ উদ্ভিদ যার শিকড় ও কন্দ পানির নিচে মাটিতে সন্নিবিষ্ট থাকে, পাতা প্রায় গোলাকার, পানির ওপরে ভেসে থাকে। আমাজন লিলির পর এর পাতা উদ্ভিদরাজ্যে দ্বিতীয় বৃহত্তম। ফুল আকারে শাপলার চেয়ে ছোট।
ভেতরে উজ্জ্বল লাল রং, বাইরের দিকে সবুজ ও উজ্জ্বল বেগুনি রঙের। ফল গোলাকার বা ডিম্বাকৃতির এবং বাইরের অংশ কাঁটাযুক্ত। ফল কচি এবং পরিপক্ব উভয় অবস্থাতেই খাওয়া যায়। ফলের ভেতরে ছোলার দানার মতো ছোট ছোট বীজ থাকে। সেগুলোর খোসা ছাড়িয়ে সাদা অংশটি খেতে হয়। এটি মিষ্টি স্বাদের। প্রতিটি ফলে সাধারণত ২০টি পর্যন্ত বীজ থাকে। ফুল ফোটে শীতের শেষে।
এম ইসলাম