কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ ভোলা জেলার চরফ্যাশন উপজেলার প্রান্তিক কৃষকরা জৈব সার ব্যবহার করে বিষ মুক্ত সবজি চাষ করে সফলতা পেয়েছেন। বিষমুক্ত সবজি হওয়ায় বাজারেরও অধিক দাম পাচ্ছেন কৃষকরা।
চরফ্যাশন উপজেলার চর মাদ্রাজ ইউনিয়নের প্রথমবারের মতো প্রায় ৫০০ কৃষক পরিবেশবান্ধব কৌশলের মাধ্যমে নিরাপদ ফসল উৎপাদন প্রকল্পের আওতায় বিষমুক্ত ফুলকপি, বাঁধাকপি, সিম, করলা, টমেটো, বেগুনসহ বিভিন্ন ধরণের শীতকালীন সবজির চাষ করেছেন। বর্তমানে কৃষকেরা সবজি বাজারে বিক্রি শুরু করেছেন। ওই ইউনিয়নের কৃষকদের সবজি বিষমুক্ত হওয়ায় বাজারেও এর বেশ চাহিদা রয়েছে। বাজারে চাহিদা বেশি থাকায় দামও পাচ্ছেন ভালো।
ইউনিয়নের কৃষক মো. মুনাফ, ওমর ফারুক ও মো. আকতার বলেন, তারা আগে কীটনাশক দিয়ে শীতকালীন সবজির চাষ করতেন। কিন্তু এবছরই প্রথম কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় ২ একর জমিতে ফুলকপি, বাঁধাকপি, করলা, টমেটো ও বরবটি চাষ করেছেন। এতে তাদের খরচ হয়েছে প্রায় ১ লাখ টাকা। ক্ষেতে রোগ ও পোকা-মাকড়ের আক্রমণ খুবই কম। ফলে খরচ অনেক কম এবং ফলন অনেক বেশি। মো. ইউসুফ ও বেল্লাল হোসেন বলেন, আমাদের এই সবজি বিষমুক্ত হওয়ায় ক্রেতাদের কাছে এর চাহিদা অনেক বেশি। বাজারে অন্য সবজির চেয়ে এটির দামও আমরা ভালো পেয়ে থাকি। এতে আমরা অনেক লাভবান। এছাড়াও এ সবজি ক্রয় করতে পাইকাররা সরাসরি ক্ষেতে চলে আসে। ভালো দাম দিয়ে ক্রয় করে দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠান তারা।
ওই ইউনিয়নের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা বিকাশ দাস বলেন, তিনি প্রতিদিনই সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত চর মাদ্রাজের সব এলাকায় কৃষকের মাঠ পরিদর্শন করে থাকেন। এছাড়াও কৃষককে ভালো ফলনের জন্য সব সময়ই পরামর্শ দিয়ে আসছেন।
চরফ্যাশন উপজেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা মো. ওমর ফারুক বলেন, তারা কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে চর মাদ্রাজ ইউনিয়নকে আইপিএম মডেল ইউনিয়ন করার লক্ষে ৫০০ কৃষককে প্রশিক্ষণ ও কারিকরি সহযোগিতা দিয়ে বিষমুক্ত সবজি চাষ করিয়েছেন। বাজারে এ সবজির ভালো দামও পাচ্ছেন কৃষকরা। এতে করে কৃষকরা আগের চেয়ে ব্যাপক লাভবান হচ্ছেন। এবছর কৃষকদের সফলতা দেখে অনেক কৃষক এ পদ্ধতিতে সবজি চাষ করতে আগ্রহী হচ্ছে। আগামীতে পুরো উপজেলার কৃষকদের দিয়ে বিষ মুক্ত সবজি চাষ করার পরিকল্পনার আমাদের।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ভোলা জেলার উপ-পরিচালক কৃষিবিদ হাসান ওয়ারেসুল কবির বলেন, পরগীক্ষামূলকভাবে ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার চর মাদ্রাজ ইউনিয়নে রাসায়নিক সারের পরিবর্তে বালাইনাশক জৈব সার ব্যবহার করে শীতকালীন সবজি চাষ করে ভাল ফলন পাওয়া গেছে। জৈব সার ব্যবহার করে উৎপাদিত সবজি জনস্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। এখন জেলার অন্যান্য এলাকায় কীটনাশক মুক্ত সবজি চাষের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
সুত্রঃ ইত্তেফাক অনলাইন / এম ইসলাম