কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ : ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়ায় আদর্শ বীজতলা তৈরি দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। সনাতন পদ্ধতির বীজতলার পরিবর্তে এখন আদর্শ বীজতলা তৈরিতে ঝুঁকছেন কৃষকরা। আদর্শ বীজতলায় উৎপাদিত ধানের চারা যে কোনো বৈরী আবহাওয়া মোকাবিলা করতে সক্ষম। এ বীজতলার চারা সুস্থ ও সবল হয়। ফলে কোল্ড ইনজুরি ও পোকার আক্রমণের ঝুঁকিও কম থাকে।
আখাউড়া উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সুত্রে জানা যায় আদর্শ পদ্ধতিতে চারা উৎপাদনের জন্য প্রথমে শুকনো জমি ভালো ভাবে চাষ করে জৈব ও রাসায়নিক সার দিতে হয়। জমি প্রস্তুত হলে ২ হাত প্রস্থ বিশিষ্ট বেড তৈরি করতে হয়। শীত মৌসুমে বীজ ৪৮ ঘণ্টা পানিতে ভিজিয়ে রেখে সেগুলো বীজতলায় ছিটাতে হয়। বীজ ছিটানোর ২৮-৩৫ দিনের মধ্যে চারাগুলো রোপণের উপযুক্ত হয়।
এ বছর পৌর শহরসহ উপজেলার ৫টি ইউনিয়নে প্রায় ৫৬৫০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। নির্ধারিত জমির জন্য ৩শ হেক্টর বীজতলা প্রয়োজন। ৩২০ হেক্টর জমিতে বীজতলা তৈরি হয়েছে। এরমধ্যে আদর্শ বীজতলা হয়েছে ৪০ হেক্টর জমিতে। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশী।
কৃষক মহরম আলী জানান, এ মৌসুমে ৮০ বিঘা জমিতে বোরো ধান আবাদ করবেন তিনি। এ জন্য তিনি ২ বিঘা জমিতে দুইশ কেজি ধান দিয়ে আদর্শ বীজতলা তৈরি করেছেন। এরমধ্যে জমিতে ধান আবাদ শুরু করেছেন তিনি।
কৃষক আসাদ মিয়া জানান, তার ১০ বিঘা জমি আছে। ঐসব জমি আবাদ করতে আদর্শ পদ্ধতিতে বীজতলা তৈরি করেছেন। সনাতন পদ্ধতির তুলনায় তার খরচ কম হয়েছে। তাছাড়া বীজতলার মানও বেশ ভালো হয়েছে। কৃষি বিভাগের পরামর্শে আদর্শ পদ্ধতিতে বীজতলা তৈরি করায় চারা সুস্থ-সবল রয়েছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহানা বেগম বলেন, আদর্শ পদ্ধতিতে বীজতলা তৈরি করলে বীজধান, সার, সেচ ও সময়সহ খরচ অনেক কম লাগে। চারাগুলো সুস্থ-সবল হয়। এছাড়া প্রচন্ড শীতেও বীজতলা ‘কোল্ড ইনজুরিতে’ আক্রান্ত হয় না। বীজতলা থেকে চারা তোলার সময় শিকড়ে মাটি কম ধরে। ফলে চারাগুলো কোনো আঘাত পায় না। আদর্শ পদ্ধতিতে বীজতলা করলে প্রতি শতাংশ জমিতে আড়াই কেজি বীজধান লাগে।
তিনি আরো বলেন, আদর্শ বীজ জমিতে রোপণের পর শতভাগ চারা জীবিত থাকে এবং অল্প সময়ে বেড়ে উঠে। ধানের ফলনও ভালো হয়। খরচও কম হয়। ফলে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে এ পদ্ধতি।
এ ব্যাপারে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ সুশান্ত সাহা বলেন, আখাউড়ায় জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে আর্দশ বীজতলা। আমাদের সর্বাক্ষণিক নজরধারি রয়েছে। পাশাপাশি প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে।
সুত্রঃ বাসস / এম ইসলাম