কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্ক : কিশোরগঞ্জ জেলার নিকলী উপজেলায় এখন বিস্তীর্ণ মাঠ জুড়ে পাকা ধান থাকলেও অতিরিক্ত মজুরিতেও মিলছে না শ্রমিক। এতে কৃষকরা বিপাকে পড়েছেন। এদিকে ধানের দাম কম থাকায় ঐ বাড়তি মজুরির কারণে কৃষকরা আরো বেশি লোকসানের মুখে পড়ার শঙ্কা করছেন। খবর ইত্তেফাক অনলাইনের।
প্রতিবছর বোরো ধান কাটার মৌসুমে রংপুর, নিলফামারী, কুড়িগ্রাম, রৌমারী, বগুড়া, নেত্রকোনা, কলমাকান্দা, মদন, আটপাড়া, দুর্গাপুর, মোহনগঞ্জ, কেন্দুয়া, শেরপুর, হালুয়াঘাট, টাঙ্গাইল, নান্দাইল, পাকুন্দিয়া ও হোসেনপুর থেকে কয়েক হাজার ধান কাটা শ্রমিক নিকলী উপজেলায় আসেন ধান কাটার জন্য। এ বছর ঐসব এলাকার শ্রমিক আসেননি। এ কারণে শ্রমিকসংকট দেখা দিয়েছে। নিকলী সদর ইউনিয়নের নগর গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য ও কৃষক জসিম উদ্দিন বলেন, পাঁচ একর জমিতে হাইব্রিড বোরো ধান চাষ করেছি। প্রতি একরে ধান হয়েছে ৬০ মণ করে। মোট ধান পেয়েছি ৩০০ মণ। মঙ্গলবার ১ হাজার ১০০ টাকা করে ৫০ জন শ্রমিক দিয়ে ঐ জমির ধান কাটিয়েছি। এক জন শ্রমিক সারা দিনে আড়াই মণ ধান কাটতে পারেন। ৫০ জন শ্রমিকের মজুরি দিতে হয়েছে ৫৫ হাজার টাকা। ঐ ধান ফড়িয়াদের কাছে বিক্রি করেছি ৭৫০ টাকা মণ দরে। সরকার যদি ধানের দাম ঠিক রাখে তাহলে কিছুটা লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। না হলে পথে বসা ছাড়া কোনো গতি নেই।
সিংপুর গ্রামের কৃষক মো. আলতু মিয়া বলেন, অনেকগুলো খেতের ধান পেকে গেছে। কিন্তু শ্রমিক না পাওয়ায় ধান কাটতে পারছি না। গ্রামের শ্রমিকদের কাছে গেলে বলে আমাদের দলে লোক কম। আবার বাইরে থেকেও এ বছর কোনো শ্রমিক আসেননি। এখন কীভাবে ধান কাটব বুঝতে পারছি না।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বেলায়েত হোসেন বলেন, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ৩৬ হাজার ৩৭৫ একর জমিতে ইরি-বোরো ধানের চাষ হয়েছে। উপজেলার সাতটি ইউনিয়নের হাওরের প্রায় ৩০% বোরো ধান কাটা হয়েছে। তবে শ্রমিকের মজুরি বেশি থাকায় কৃষকরা চিন্তিত। সরকারিভাবে ধান ক্রয় শুরু হলে ধানের দামও বাড়বে। এছাড়া গত বছর এবং চলতি বছর মিলিয়ে জেলায় ৪৫টি হারভেস্টার মেশিন বিতরণ করা হয়েছে। যেগুলো পুরোদমে ধান কাটার কাজ করছে। কিন্তু চাহিদা রয়েছে ১২৫টি হারভেস্টার মেশিনের। চাহিদা অনুযায়ী হারভেস্টার মেশিন যদি থাকত তাহলে শ্রমিকসংকট হতো না।
এম ইসলাম