কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্ক : কুমিল্লা জেলায় চা চাষের সম্ভাবনা জেগে উঠেছে। কুমিল্লা সদর থেকে প্রায় ১২ কিলোমিটার দূরে সদর দক্ষিণ উপজেলার বড় ধর্মপুর এলাকায় আঁকাবাঁকা মেঠোপথ পেরিয়ে লালমাই পাহাড়ে গড়ে উঠেছে মজুমদার চা বাগান। জেলার পথিকৃৎ এই চা বাগানে এবারই চলছে প্রথম পাতা সংগ্রহের কর্মকান্ড।
কুমিল্লায় প্রথম এই চা বাগানের মালিক মো. তারিকুল ইসলাম মজুমদার জানান- ২০২১ সালে চাষ করা হলেও এবারই প্রথম চা পাতা সংগ্রহ করা হচ্ছে বাগান থেকে। বাগান ঘুরে দেখা গেছে, লালমাই এলাকায় মাথা তুলে আছে ছোট-বড় বেশ কয়েকটি পাহাড়। লাল মাটির দু’টি পাহাড়ে সারি-সারি লাগানো হয়েছে চা চারা। মাঝে-মাঝে শেড ট্রি হিসেবে লাগানো হয়েছে সজিনা ও কড়ই গাছ। গরমেও স্নিগ্ধতা ছড়াচ্ছে সবুজ বাগান। কয়েকজন শ্রমিক কচি চা পাতা সংগ্রহ করছেন। তাদের কাঁধে কাপড়ের তৈরি থলে। সংগ্রহ করা কুঁড়ি ও পাতা থলেতে রাখছেন।
বাগানের তত্ত্বাবধায়ক রাজু সিং জানান, তার বাড়ি শ্রীমঙ্গলে। তার স্ত্রীও এই বাগানে কাজ করেন। তারা বংশ পরম্পরায় চা বাগানের সঙ্গে সম্পৃক্ত। তিনি জানান, মার্চ মাস থেকে বাগানের পাতা তোলা হচ্ছে। এরই মধ্যে ১ হাজার কেজির বেশি পাতা তোলা হয়েছে। পাশের পাহাড়ের আরও চারা লাগানো হবে। চায়ের অনেক জাত থাকলেও এই বাগানে লাগানো হয়েছে বিটি-২ চারা। এটি খুব উন্নতমানের চা। এই চারা সংগ্রহ করা হয় শ্রীমঙ্গল থেকে। প্রতিটি চারার দাম ৪৫ টাকা। রাজু সিংয়ের প্রত্যাশা, লালমাই পাহাড়েও একদিন সিলেটের মতোই চা বাগান ছড়িয়ে পড়বে। বাড়বে বাণিজ্যিক সম্ভবনাও।
বাগান মালিক তারিকুল ইসলাম মজুমদার বাসসকে বলেন, ২০২১ সালের মার্চে প্রথম ৩ হাজার চা গাছ লাগান। তিনমাস পর আরও ৩ হাজার চারা লাগাই। এক একরের বেশি পাহাড়ে বর্তমানে ১০ হাজারের বেশি চারা রয়েছে বাগানে। কিছুদিনের মধ্যে আরও ২০ হাজার চারা লাগানো হবে। তারিকুল বলেন, এখন হাতে চা পাতা তৈরি করছেন শ্রমিকরা। শিগগির বিদেশ থেকে মেশিন এনে স্থাপন করা হবে। মেশিন আসার আগ পর্যন্ত লালমাই পাহাড়ের এই চা গ্রিন টি হিসেবেই খেতে হবে কুমিল্লাবাসীকে।
কুমিল্লার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা এম এম শাহারিয়ার ভূঁইয়া বলেন, এখানে চা উৎপাদনে মাটির যে ক্ষার থাকার কথা তা রয়েছে। আমরা উদ্যোক্তাকে পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। তাকে দেখে আরও অনেকে এগিয়ে আসবেন বলে আশা রাখি।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কুমিল্লার উপ-পরিচালক মো. মিজানুর রহমান বলেন, কুমিল্লায় এটি প্রথম চা বাগান। এখানে বৃষ্টির পরিমাণ কম। যদি বৃষ্টির পরিমাণ বাড়ে তাহলে ভালো চা হবে।
সুত্রঃ বাসস / এম ইসলাম