কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ রাজশাহী জেলার দুর্গাপুরে চলিত মৌসুমে দুই দফা কালবৈশাখী ঝড় ও শিলা বৃষ্টিতে বোরো ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সেই ক্ষতি কাটিয়ে উঠতেই আবার ঘূর্ণিঝড় মোখার ক্ষতির শঙ্কায় এবার আধা-পাকা ধান কাটছেন উপজেলার কৃষকেরা। খবর আজকের পত্রিকা অনলাইনের।
বিগত বছরগুলোতে ঝড়ে কৃষকের ক্ষয়ক্ষতি বেশি হওয়ায় এ বছর আগেভাগেই খেত থেকে ধান কাটতে দেখা গেছে তাঁদের। কৃষি কার্যালয়ের পরামর্শে ফসল বাঁচাতে ধান কেটে ঘরে তুলছেন কৃষকেরা।
ইতিমধ্যে নিম্নাঞ্চলের বোরো ধান কেটে ঘরেও নিয়েছেন অনেক কৃষক। উপজেলা কৃষি কার্যালয় ৮০ শতাংশ পাকা ধান কেটে ঘরে তুলতে পরামর্শ দিয়েছে। এদিকে ৮০ শতাংশ পাকা ধান কাটার পরামর্শ দিলেও মাঠ পর্যায়ে দেখা গেছে ভিন্ন চিত্র। অনেক জায়গায় জমিতে ৭০ শতাংশ ও তাঁর নিচে আধা পাকা-ধান কাটতে দেখা গেছে। উপজেলায় এখন পর্যন্ত মাত্র ৫ ভাগ জমির ধান কাটা হয়েছে বলে জানিয়েছে কৃষি অফিস।
জানা গেছে, আজ শুক্রবারের মধ্যে পাকা ধানসহ সব রবিশস্য ঘরে তুলতে নির্দেশ দিয়েছ উপজেলা কৃষি কার্যালয়। এ বছর উপজেলায় ৩ হাজার ৯৩৯ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে।
এদিকে কৃষি কার্যালয় বলছে, এখানে বোরো ধানের আবাদ শুরু হয় দেরিতে। ইতিমধ্যে মাঠে ৩০ শতাংশ ধান পেকেছে। মাঠ থেকে পাকা ধান কেটে নিয়েছ পাঁচ ভাগ। শুক্রবারের মধ্যে মাঠ থেকে পাকা ধান ঘরে তোলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
তবে সরেজমিন বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, মাঠে এখনো ৮০ শতাংশ কাচা ধান রয়ে গেছে। ফলে কৃষকেরা তাদের ফসল নিয়ে চরম উৎকণ্ঠায় রয়েছেন।
পৌর এলাকার দেবীপুর গ্রামের আব্দুল জলিল বলেন, ‘ধানে শিষ দেখা দিলে সে সময় ঝড়, শিলা বৃষ্টিতে তাঁর জমিতে প্রায় ৩০ ভাগই ঝরে গেছে। এখন আবার ঝড় ও ভারী বৃষ্টিপাতের খবর পেয়ে আগেভাগেই আধা পাকা ১০ কাটা জমির ধান কেটে নিচ্ছি। আরও প্রায় ১ বিঘা জমির ধান এখনো কাঁচা রয়েছে।’
উপজেলার কানপাড়া গ্রামের কৃষক আশরাফ আলী বলেন, ‘আমার ধানের জমি নিচু এলাকায়। এখনো জমিতে পানি জমা রয়েছে। কিন্তু ধান এখনো পুরোপুরি পাকেনি। এ সময় ঝড় ও বৃষ্টি হয় তাহলে ধান মাটিতে পড়ে নষ্ট হয়ে যাবে। তাই আগেভাগেই আধা পাকা ধান কেটে নিচ্ছি।’
দুর্গাপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রহিমা খাতুন বলেন, ‘ঝড় ও ভারী বৃষ্টির আভাস পেয়ে কৃষকদের ধান কাটার পরামর্শ দিয়েছি। ৮০ ভাগ পেকেছে এমন ধান কাটলে কোনো ক্ষতি হবে না। পুরোপুরি পাকার অপেক্ষায় থাকলে খেতে ধান ঝরে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এখন যদি ঝড় ও ভারী বর্ষণ হয় তাহলে কৃষকের আরও বেশি ক্ষতি হতে পারে। সেই শঙ্কা থেকে পাকা ধান ঘরে তোলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।’
সুত্রঃ বাসস / এম ইসলাম