কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্ক : জামালপুর জেলায় ১ লাখ ৮৫ হাজার ৪৬২ টন ভুট্টা উৎপাদিত হয়েছে, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় ৪৫ হাজার ৬২ মেট্রিক টন বেশি।
কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ (ডিএই) জানিয়েছে, অনুকূল আবহাওয়া, প্রণোদনা কর্মসূচির বাস্তবায়ন এবং কৃষি উপকরণাদির সহজলভ্যতার জন্যই এ বছর ভুট্টার বাম্পার ফলন সম্ভব হয়েছে।
ডিএই জানায়, চলতি বছর জেলার কৃষকরা ১৭ হাজার ৪৬৩ হেক্টর জমিতে ভুট্টার চাষ করেছে, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৪ হাজার ৪৬৩ হেক্টর বেশি।
কৃষকরা ভুট্টার বাম্পার ফলন এবং গত বছর ভুট্টার ন্যায্যমূল্য পাওয়ায় এ বছর বেশি পরিমাণ জমিতে ভুট্টার চাষ করেছে।
জামালপুর সদর উপজেলার বোগালী গ্রামের বাসিন্দা কৃষক মো. মঞ্জুরুল বাসসকে জানান, তিনি গত ৬ বছর ধরে প্রধান শষ্য হিসেবে ভুট্টার চাষ করছেন। এ বছর তিনি সাড়ে তিন বিঘা জমিতে এই ফসলের চাষ করেছেন।
তিনি জানান, তিনি চলতি বছর প্রতি বিঘা জমিতে ৩০ মণ করে ভুট্টা পেয়েছেন। প্রতি মণ (৪০ কেজি) ভুট্টা ১২শ’ টাকা থেকে ১৩শ’ টাকা মূল্যে বিক্রি করবেন।
এছাড়াও একই গ্রামের বাসিন্দা কৃষক মো. হেলান উদ্দিন ও মানিক এবং একই উপজেলার শরিফপুর গ্রামের বাসিন্দা গোলাম মোস্তফা প্রত্যেকে সরকারের কাছ থেকে সহায়তা নিয়ে এক বিঘা করে জমিতে ভুট্টার চাষ করেছেন এবং তারা লাভবান হয়েছেন।
ডিএই জানায়, জেলায় প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় ৪ হাজার ৫শ’ ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষককে বিনামূল্যে ভুট্টার বীজ ও সার দেওয়া হয়েছে। তাছাড়াও ৮৫ জন কৃষককে ভুট্টার প্রদর্শনী প্লট করার জন্যও প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে।
ডিএই আরো জানায়, এ বছর জেলার দেওয়ানগঞ্জ উপজেলায় ৬ হাজার ৫৭০ হেক্টর জমিতে ৬৮ হাজার টন ভুট্টা উৎপাদিত হয়েছে। এছাড়াও জেলার সরিষাবাড়ী উপজেলায় ২ হাজার ৫৭৩ হেক্টর জমিতে ২৮ হাজার ৩০৩ টন, মাদারগঞ্জে ২ হাজার ৩৮০ হেক্টর জমিতে ২২ হাজার ৫৩৯ টন, বকশিগঞ্জে ২ হাজার ১৫০ হেক্টর জমিতে ২৪ হাজার ৫১০ টন, ইসলামপুরে ১ হাজার ৮৭০ হেক্টর জমিতে ২২ হাজার ২৫৩ টন, জামালপুর সদর উপজেলায় ১ হাজার ১৫০ হেক্টর জমিতে ১২হাজার ৫৩৫ টন এবং মেলান্দহে ৭৭০ হেক্টর জমিতে ৭ হাজার ৩২২ টন ভুট্টা উৎপাদিত হয়েছে।
ডিএই’র উপ-পরিচালক জাকিয়া সুলতানা জানান, লাভজনক হওয়ায় জেলায় ভুট্টার চাষ বাড়ছে। এই ফসলের চাষে কম সেচ লাগে ও অন্যান্য ফসলের তুলনায় পোকা-মাকড়ের আক্রমণও কম হয়। ফলে উৎপাদন ব্যয় কম হওয়ায় কৃষকরা এই ফসল চাষ করে সহজেই লাভবান হয়। তিনি আরো জানান, সরকার ভুট্টার উৎপাদন বাড়াতে বিভিন্ন প্রণোদনামূলক কর্মসূচিও বাস্তবায়ন করে আসছে। যার সুফল পাচ্ছেন কৃষকরা।
সুত্রঃ বাসস / এম ইসলাম