কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্ক : চলতি মৌসুমে রংপুর জেলায় আঁশবিহীন, রসালো, ও অত্যন্ত সুস্বাদু স্থানীয় জাতের ‘হাড়িভাঙ্গা’ আমের ব্যাপক ফলন আশা করা হচ্ছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (ডিএই) কর্মকর্তারা আশা করছেন, আমের মুকুল আসার পরে এবং ফল বড় হওয়ার পর্যায়ে কম বৃষ্টিপাতের কারণে চলতি মৌসুমে ‘হাড়িভাঙ্গা’ আমের প্রচুর ফলন পাওয়ার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে।
রংপুর ডিএই’র উপ পরিচালক কৃষিবিদ মো. ওবায়দুর রহমান মন্ডল বলেন, গত ১০ জুন থেকে ‘হাড়িভাঙ্গা আম আহরণ করা শুরু হয়েছে এবং আগামী জুলাই পর্যন্ত তা চলবে।’
এ বছর জেলায় ১ হাজার ৯০৫ হেক্টর জমিতে ‘হাড়িভাঙ্গা’ আমসহ ৩ হাজার ৫৩৫ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের আমের চাষ করেছেন কৃষকরা।
মন্ডল আরও বলেন, ‘আমরা এই মৌসুমে প্রায় ২৫০ কোটি টাকা মূল্যের ৩৫ হাজার টন ‘হাড়িভাঙ্গা’’ আম আহরণের আশা করছি।’
বিগত মৌসুমে রংপুরের আটটি উপজেলায় কৃষকেরা ১ হাজার ৮৬৫ হেক্টর জমিতে ‘হাড়িভাঙ্গা’ আমের বাম্পার ফলন পেয়ে প্রচুর মুনাফা অর্জন করেছিল।
তিনি বলেন, ‘স্থানীয় বাজারে ব্যাপক চাহিদা থাকায় এই ‘হাড়িভাঙ্গা’ আমের বাণিজ্যিক ভিত্তিতে চাষ প্রতি বছর রংপুর ও এর আশেপাশের এলাকায় সম্প্রসারিত হচ্ছে, যার ফলে শত শত কৃষক স্বাবলম্বী হয়ে উঠছে।’
রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার আখিরারহাট, খোড়াগাছ, পোদাগঞ্জ, মঠেরহাট, রাঙাটিপাড়া, বনগাওঁ, পাইকারেরহাট, রুকনিগঞ্জ, তেকানি, ময়েনপুর, কদমতলা, লালপুকুর, শুকুরেরহাট, শিকারপুর, ফুলচৌকি, তিলকপাড়া, কাশিমপুর, উচা বালুয়া এবং মিঠাপুকুর উপজেলার অন্যান্য গ্রামের বাগানে ‘হাড়িভাঙ্গা’ আমের চাষ হচ্ছে।
রংপুরের সাতটি উপজেলা এবং রংপুর কৃষি অঞ্চলের আওতাধীন গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট ও নীলফামারী জেলার অন্যান্য স্থানে কয়েক ডজন গ্রামে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে আমের চাষ হচ্ছে।
মন্ডল আরও বলেন, ‘এছাড়া দিনাজপুরের পার্বতীপুর, নবাবগঞ্জ, ফুলবাড়ী, খানসামা, বিরামপুর ও চিরিরবন্দর উপজেলাসহ সারা রংপুর বিভাগের অন্যান্য এলাকায় ‘হাড়িভাঙ্গা’ আমের চাষ দ্রুত সম্প্রসারিত হচ্ছে।’
বাজার সূত্রে জানা গেছে, আকার ও পরিমাণের ওপর ভিত্তি করে হাড়িভাঙ্গা আমের প্রতি কেজির দাম বর্তমানে ৪০ থেকে ৫৫ টাকার মধ্যে রয়েছে, আগামী সপ্তাহগুলোতে দাম বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
রংপুর সিটি বাজারের ফল ব্যবসাযী বাবু মিয়া আজ বলেন, আগামী জুলাই মাসের শেষ সপ্তাহে হাড়িভাঙ্গা আমের দাম প্রতি কেজি ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা পর্যন্ত উঠতে পারে।
স্থানীয় বাজারে ‘হাড়িভাঙ্গা’ আম ব্যাপক বিক্রি হলেও কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে দেশের মানুষের কাছে সুস্বাদু এই ফল পৌঁছে দিতে রংপুর শহর ও মিঠাপুকুর উপজেলার অনেক তরুণ-তরুণী অনলাইন মার্কেটিংয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন।
অনলাইনে আম সরবরাহকারী যুবক সরকার মঞ্জুরুল মান্নান জানান, তিনি অনলাইনে অর্ডার নিচ্ছেন এবং দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ক্রেতাদের কাছে ‘হাড়িভাঙ্গা’ আম পৌঁছে দিচ্ছেন।
তিনি বলেন, মৌসুমে ‘হারিভাঙ্গা’ আম আহরণের প্রথম দিন ১০ জুন থেকে আমি আম সরবরাহের জন্য প্রচুর অর্ডার পেয়েছি।’
সুত্রঃ বাসস / এম ইসলাম