কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ দেশব্যাপী অনলাইনে উন্নত জাতের উচ্চ ফলনশীল বীজআলু বিক্রি শুরু করেছে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি)।
এখন থেকে অনলাইনে অর্ডার করলেই আপনার ঘরে পৌঁছে যাবে বিএডিসি’র উচ্চ ফলনশীল বীজআলু।
গতানুগতিক আলু চাষ না করে উন্নত জাতের আলু উচ্চ ফলনশীল আলু চাষে কৃষকদের উৎসাহিত করাই এ প্রকল্পের মূল লক্ষ্য বলে জানায় বিএডিসি।
এতে একদিকে চাষীরা কোন প্রকার হয়রানি ছাড়া খুব সহজেই উচ্চ ফলনশীল আলুবীজ পেয়ে যাচ্ছে, অন্য দিকে আগামীতে দেশে আলুর উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য ভালো বীজটি নিশ্চিত করা যাবে বলে জানিয়েছে বিএডিসি।
অনলাইন প্লাটফর্মে বীজআলু বিক্রয় কার্যক্রম নিঃসন্দেহে একটি প্রসংসনীয় উদ্যোগ বলে মনে করছেন প্রান্তিক কৃষক ও কৃষি সংশ্লিষ্টরা। সারা বাংলাদেশে ২৮ টি হিমাগার থেকে এক যোগে এই অনলাইনে বীজ বিক্রয় কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
বিএডিসি সুত্র জানায় গত দুই দিনে সারাদেশে প্রায় ১৫ হাজার চাষী অনলাইনে বীজ ক্রয়ের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। বিএডিসি আরও বলেছে আমরা কৃষকদের কাছ থেকে অভুতপূর্ব সারা পাচ্ছি।
বিএডিসি’র এই ব্যাতিক্রমী উদ্যোগের পেছনে কাজ করছেন আলুবীজ বিভাগের প্রকল্প পরিচালক আবীর হোসেন, বিএডিসি’র মহাব্যবস্থাপক, পরিচালক (বীজ) তারা বলছেন এ উদ্যোগ গ্রহণের ফলে চাষীরা সত্যিই ভালো বীজটি খুব সহজেই হাতের মুঠোয় পেয়ে যাচ্ছে। এতে সেবা সহজীকরণ হয়েছে। চাষীদের সময় ও শ্রম বেঁচে যাচ্ছে। উন্নত মানের এই বীজআলু বিএডিসি’র হিমাগারগুলোতে নির্দিষ্ট তাপমাত্রা ও আদ্রর্তা বজায় রেখে সারা বছর খুব যত্নের সাথে সায়েন্টিফিক উপায়ে সংরক্ষণ করা হয়েছিল। এরপর এগুলো সর্টিং গ্রেডিং, বাছাই, ওজন ও বস্তাবন্দি করে করে কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে ক্যাশ অন ডেলিভারির মাধ্যমে একেবারে চাষীদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।
চাষীরা স্মার্টফোনের মাধ্যমে অনলাইনে ক্রয় নিশ্চিত করার পরে জাত ও গ্রেড অনুযায়ী চাষীরা কিভাবে এই বীজ মাঠে রোপন করবেন তার নির্দেশমূলক একটি লিফলেটও বস্তার ভিতরে দিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এরপর কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে। যারা অনলাইনে বিএডিসি’র বীজ ক্রয় করতে চান, তারা এই লিংকে যোগাযোগ করতে হবে https://www.facebook.com/badcPotato
অনলাইনে কোন কোন জাতের বীজআলু কেনা যাবে?
১। বিএডিসি আলু১ (সানসাইন)
২। বিএডিসি আলু৭ (কুইনএ্যানি)
৩। বিএডিসি আলু৮ (ল্যাবেলা)
সানসাইন জাতের বীজআলু-
✿ দেখতে আকর্ষণীয় সুন্দর, উজ্জ্বল হলুদাভ রংয়ের।
✿ আগাম রোপন উপযোগী জাত।
✿ মাত্র ৬০-৬৫ দিনেই বিক্রয় উপযোগী হয়, আরো বেশি দিনে ফলন আরো বৃদ্ধি পায়।
✿ ফলন ৪২-৪৫ মে. টন/হেক্টর (শতকে ৪.২-৪.৫ মণ)।
✿ সব আলু প্রায় এক সাইজের হয়।
✿ বিশ্ব বাজারে ব্যাপক চাহিদা থাকায় এই জাতের আলু রপ্তানির শীর্ষে।
✿ ঘরের স্বাভাবিক তাপমাত্রায় ৪-৫ মাস ভালভাবে সংরক্ষন করা যায়।
✿ দেখতে সুন্দর ও খেতে সুস্বাদু হওয়ায় এই আলু রপ্তানিযোগ্য ও সুপার শপে বিক্রয় উপযোগী।
কুইনএ্যানি জাতের বীজআলু-
✿ আকর্ষণীয় ত্বকের উজ্জ্বল হলুদাভ রংয়ের।
✿ আগাম রোপন উপযোগী জাত।
✿ রোগবালাই কম হয় (ব্লাক লেগ, কমন স্ক্যাব, রাইজোকটনিয়া, PVY, PLRV সহিষ্ণু)।
✿ ফলন ৪১-৪৪ মে. টন/হেক্টর (শতকে ৪.১-৪.৪ মণ)।
✿ দেখতে সুন্দর ও খেতে সুস্বাদু হওয়ায় এই আলু রপ্তানিযোগ্য ও সুপার শপে বিক্রয় উপযোগী।
ল্যাবেলা জাতের বীজআলু-
✿ দেখতে উজ্জ্বল লাল রংয়ের।
✿ রোগবালাই কম হয় (ওয়ার্ট ডিজিস, টিউবার ব্লাইট, ব্লাক লেগ, কমন স্ক্যাব, রাইজোকটনিয়া, PVY, PLRV সহিষ্ণু)।
✿ ফলন ৪১-৪৪ মে. টন/হেক্টর (শতকে ৪.১-৪.৪ মণ)।
✿ সংরক্ষণক্ষমতা ভাল।
✿ এটি রপ্তানিযোগ্য ও খাবার উপযোগী জাত।
বীজ কিভাবে কিনবেন?
ক্যাশ অন ডেলিভারীতে কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে বীজ ক্রয় করতে পারবেন। তবে বীজের মোট মূল্যের কমপক্ষে ২৫% টাকা বিকাশ, নগদ বা অনলাইন ব্যাংকিং এর মাধ্যমে অগ্রিম পরিশোধ করে অর্ডার কনফার্ম করতে হবে। বাকী টাকা বীজ হাতে পেয়ে পরিশোধ করবেন। কুরিয়ার খরচ ক্রেতাকে বহন করতে হবে। একজন ব্যক্তি সর্বোচ্চ ৫ বস্তা (২০০ কেজি) এবং সর্বনিম্ন ১ বস্তা (৪০ কেজি) বীজের অর্ডার করতে পারবেন।
এম ইসলাম