কৃষি প্রতিক্ষন ডেস্ক : আসন্ন বর্ষা মৌসুমে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে চাঁই (মাছ ধরার ফাঁদ) কারিগররা। এসময় জেলেরা নৌকায় করে জাল, চাঁই অথবা বড়শি দিয়ে মৎস্য শিকার করে থাকেন। চাঁইয়ের জন্য বিখ্যাত আগৈলঝাড়া উপজেলার মহনকাঠী গ্রামের শতাধিক পরিবার এখন ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে চাঁই তৈরিতে। জানা যায়, প্রায় ২’শ বছর ধরে অগৈলঝাড়ার মহনকাঠী গ্রামে চাঁই তৈরি হয়ে আসছে। যুগ যুগ ধরে এই গ্রামের ৪’শ পরিবারের জীবিকা নির্বাহের প্রধান উৎস চাঁই তৈরি। গ্রামের পুরুষরা বর্ষা মৌসুমে চাঁই তৈরি ও অন্য সময়ে বিভিন্ন শ্রমের কাজ করে থাকেন। পুরুষদের পাশাপাশি নারীরাও এসময় চাঁই তৈরিতে পুরুষদের সাহায্য করে থাকে। এখানকার তৈরি করা চাঁই বরিশাল বিভাগসহ দক্ষিাণাঞ্চলের বিভিন্ন হাট-বাজারে বিক্রি হয়ে থাকে ।
মহনকাঠী গ্রাম ‘চাঁই পল্লী’ হিসাবে বিখ্যাত। ভরা বর্ষায় নদী, খাল, বিল ও পুকুরে চাঁই দিয়ে মাছ ধরার রীতিমত উৎসব শুরু হয়ে যায়। বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলের বিভিন্ন বিল ও মাঠগুলোতে পানি জমে । সেসব জলাশয়ে প্রচুর মাছ পাওয়া যায়। দেশীয় প্রজাতির এসব মাছের বেশ কদর থাকায় চাঁই’র কদরও বেড়ে যায় বর্ষাকালে। জানা যায়,চাঁই তৈরির প্রধান উপকরণ হচ্ছে বাঁশ, বেত ও লতা। ৪শ’ টাকার তল্লা বাঁশ, বেত ও কৈয়া লতা দিয়ে একজন শ্রমিক ৫দিনে ২০টি চাঁই বানাতে পারেন। যার পাইকারী বাজার মূল্য ১৮শ’ থেকে ২২শ’ টাকা। তবে সাম্প্রতিক সময়ে চাঁই তৈরির উপকরণের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় আগের মত লাভ হয় না । গৌরনদী উপজেলার মাহিলাড়া বাজারে চাঁই বিক্রি করতে আসা রহিম শেখ ও লাকমান গাজী বলেন, গত কয়েকদিনের টানা বর্ষায় বিভিন্ন এলাকার বিলগুলোতে প্রচুর পরিমাণ পানি জমেছে। জোয়ারের এসব পানিতে প্রচুর মাছ আসছে। তারা জানান, মাছ ধরতে জাল ও বড়শির চাইতে চাঁই অধিক কার্যকর ভুমিকা রাখে। তাই অনেকেই চাঁই কিনছেন এখান থেকে। প্রতিটি চাঁই ১২০ টাকা থেকে শুরু করে প্রকার ভেদে ১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সামনের বর্ষার দিনগুলোতে চাঁই বিক্রি আরো বাড়বে বলে জানান তারা।
কৃপ্র/কে আহমেদ/এম ইসলাম