কৃষি প্রতিক্ষন ডেস্ক : ভূট্টা গাছের শত্রুর নাম কাটৃই পোকা । আসুন জেনে নেই এই পোকার ধরন ও দমন পদ্ধতি ।
পোকার ধরন : কাটৃই পোকার মথ আকারে বড় (প্রায় ১ ইঞ্চি লম্বা), সামনের পাখা বাদামী ও পিছনের পাখা মুক্তা বর্ণের ( কিনারা বাদামী রংয়ের) হয় । স্ত্রী মথ গাছের পাতার নিচের দিকে অথবা ভেজা মাটিতে একটি একটি করে সাদা ঘিয়ের রংয়ের ২০০-৩০০ টি ডিম পাড়ে । ডিম থেকে ৪-৭ দিনের মধ্যে কীড়া বের হয় । পুণাঙ্গ কীড়া প্রায় ২ ইঞ্চি লম্বা,তৈলাক্ত, তুলতুলে ও কালচে বাদামী বা মোটা বর্ণের হয় । কীড়া অবস্থায় ৪-৫ সপ্তাহ থাকে । পরে মাটির নীচে গিয়ে ইহা পুত্তলিতে পরিনত হয় ।পুত্তরি অবস্তায় শীতকালে ১০-৩০ দিন এবং গ্রীস্মকালে ১০ দিন থাকার পর পুনাঙ্গ মতে পরিনত হয় । এভাবে এরা ৭-১০ সপ্তাহে একটি জীবন চক্র এবং বছরে ৫ বার বংশ বিস্তার করে ।
ক্ষতির প্রকৃতি : এ পোকার ক্ষতির ধাপ এর কীড়া । দিনের বেলায় কীড়া মাটির ফাটলে, মাটির ঢেলায় কিংবা আবর্জনার মধ্যে লুকিয়ে থাকলেও এরা রাতে বের হয়ে ভুট্টা চারা গাছ কেটে ফেলে । সকালে ক্ষেতে ভূট্টার কাটা চারা গাছ দেখে এবং কাটা গাছের কাছে মাটি খুঁড়লে কাটুই পোকা কীড়া দেখতে পাওয়া যায় । ফলে ভূট্টা গাছের সংখ্যা কমে গিয়ে ফসন হ্রান পায় ।
সমন্বিত ব্যবস্হাপনা : ভোরে কর্তিত চারার গোড়ার মাটি খুড়ে কীড়াগুলো বের করে মেরে ফেলতে হবে । রাতের বেলা জামিতে টর্চ বা হারিকেন নিয়ে গিয়ে এ পোকার কীড়া সংগ্রহ করে মেরে ফেলা যায় । জমিতে সেচ দিলে কীড়া মাটির উপর উঠে আসার ফলে পাখিতে খেয়ে ফেলে অথবা হাত দিয়ে মেরে ফেলা যায় । একর প্রতি ৮০০ গ্রাম সেভিন ৮৫ ডব্লিউ পি অথবা সানটাপ ৫০ এসপি, ৪০ কেজি গম বা ধানের কুড়ার সাথে পরিমান মত পানিতে মিশিয়ে বিষটোপ তৈরী করে (যা হাত দিয়ে ছিটানো যায়) সন্ধ্যাবেলা আক্রান্ত ক্ষেতে চারা গাছের গোড়ায় ছিটিয়ে দিয়ে কাটুই পোকার কীড়া দমন করা সহজ হয় । আক্রমন তীব্র হলে প্রতি লিটার পানিতে ৫ মিলি (১মুখা) ক্লোরোপাইরিফস ২০ ইসি (ডারসবান/পাইরিফস/অন্য নামের) জাতীয় কীটনাশক মিশিয়ে চারাগাছের গোড়ার মাটি ভিটিয়ে স্প্রে করে এ পোকার আক্রমন কমানো যায় ।
কৃপ্র/ কে আহমেদ/এম ইসলাম