সিদ্দিকুর রহমান শাহীন।।
সারঃ বর্ষার আগে ও পরে প্রতিবারে ষোল বছরের বেশী বয়সের কাঁঠাল গাছের জন্য নব্বই থেকে ১০০ কেজি গোবর, দেড় থেকে দুই কেজি ইউরিয়া, এক থেকে দেড় কেজি করে টিএসপি ও এমপি সার দিতে হয়। মুকুল আসার সময় যেকোনো বয়সের গাছের জন্য ২০০ গ্রাম করে ইউরিয়া, টিএসপি ও এমপি সার দিতে হয়। এতে মুকুলঝরা কমে যায়।
সেচঃপ্রত্যেকবার সার ছিটানোর পর সেচ দিতে হয়। শুস্ক মৌসুমে প্রতিদিন নিয়মিত সেচ দিলে গাছের মুকুলঝরা কমে, কাঁঠালের বোঁটা শক্ত হয়, ফল রসালো হয়, রোগবালাইও হয় কম। ফলন হয় বেশি।
প্রতিদিন সেচ দেওয়ার জন্য কাঁঠাল গাছের গোড়ার চারপাশে মাটি দিয়ে আইল তৈরি করে গোলাকার আইলের মধ্যে পানি ঢেলে সেচ দিতে হয়।
কাঁঠালের পোকামাকড়ঃ কাঠাঁল গাছের বাকলের মাজরা পোকা ও মুকুলের মাজরা পোকা প্রধান। মুকুলের মাজরা পোকা কচি কাগু, ফুলের কুড়ি ও বেড়ে ওঠা ফলের গায়ে গর্ত করে ভেতরে ঢুকে,সেখান থেকে খাদ্য গ্রহণ করে। এতে আক্রান্ত কান্ড দুর্বল হয়ে পড়ে ও কুঁিড়গুলো শুকিয়ে মরে যেতে থাকে।
বাকলের মাজরা পোকা রাতে গাছের বাকল বা ছাল খায়। খাওয়া অংশ নরম আশেঁর মতো দেখায়।। আশেঁর ভেতর দিয়ে পোকাগুলো কাগেু ছোট ছোট সুড়ঙ্গ তৈরি করে ভেতরে ঢুকে। এতে গাছের বৃদ্ধি কমে যায়। কাঁঠালের উৎপাদনও কম হয়।
পোকামাকড় দমনঃ মুকুলের মাজরা পোকা দমনের জন্য ১০ লিটার পানিতে ৩০ মিলি এবং বাকলের মাজরা পোকার জন্য ৩৫ মিলি ডায়াজিনন-৬০ ইসি মিশিয়ে ২১ দিন পরপর স্প্রে করতে হবে।
কাঁঠালের রোগঃ ছত্রাকের কারণে কাঁঠালের মুকুল পচাঁ রোগটিই মুকুল ঝরার প্রধান সমস্যা। আক্রান্ত মুকুল প্রথম দিকে ধূসর দেখায়, পরে মুকুলের গায়ে সরু ও লম্বা সাদা ছত্রাক দেখা যায। আক্রান্ত মুকুল শেষে মাটিতে ঝরে পড়ে।
গাছে মুকুল আসার পর মুকুল পচাঁ রোগ দেখার সাথে সাথে ডায়থেন এম-৪৫ ওষুধটির চার গ্রাম এক লিটার পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে।
হরমোন প্রয়োগঃ নিয়মিত সেচ, মুকুল আসার পর সার দেওয়া, রোগ ও পোকামাকড় দমনে ওষুধ প্রয়োগের পরও যদি মুকুল ঝরে পড়ে তাহলে গাছে ষ্টিমুলেট নামের হরমোন দিতে হবে। এতে স্ত্রী মুকুল বেশি টিকে থাকায় মুকুল ঝরে পড়ে না। কাঁঠালের মুকুলঝরা রোধের জন্য ষ্টিমুলেট হরমোনটি প্রতি লিটার পানিতে তিন মিলি মিশিয়ে মুকুলে স্প্রে করে দিতে হবে দুই থেকে তিনবার।
কৃপ্র/এম ইসলাম