কৃষি প্রতিক্ষন ডেস্ক : বনসাই বা বামন আকৃতির নারিকেল গাছ । মাটি ছুঁইছুঁই করে নারিকেল ঝুলছে। মাটিতে দাঁড়িয়েই গাছের নারিকেল পাড়া যায়। বিষয়টি অসম্ভব মনে হলেও এখন তা বাস্তব । এ জাতটি সম্প্রতি ভিয়েতনাম থেকে আমদানি করা হয়েছে। কৃষিবিভাগ জাতটি বিভিন্ন জেলায় ছড়িয়ে দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছে। সম্প্রতি কৃষি মন্ত্রণালয় ২০ হাজার নারিকেল চারা ভিয়েতনাম থেকে আমদানি করেছে। চারা লাগানোর দুই বছর পরই গাছে নারিকেল ধরা শুরু হয়। মাটি ছুঁইছুঁই করা নারিকেল মাটিতে দাঁড়িয়েই পাড়া যাবে। দেশি জাতের চেয়ে এর ফলন প্রায় চারগুণ বেশি। দেশের নারিকেলের অভাব দূর করার জন্য আরো ৭৫ হাজার চারা আমদানির উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। এ চারা দক্ষিণাঞ্চলের ১৮টি জেলা ছাড়াও দেশের বিভিন্ন স্থানে রোপণ করা হবে।
দেশে থাই পেয়ারার প্রবক্তা কৃষিবিদ মো. কামরুজ্জামান ভিয়েতনামে গিয়ে নারিকেলের দুটি জাত শনাক্ত করেন। একটির নাম সিয়াম গ্রিন কোকোনাট ও অন্যটি সিয়াম গ্লু কোকোনাট। এসব জাতের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো চারা লাগানোর দুই থেকে আড়াই বছরে গাছে মুচি হয়। প্রতিটি ডাব থেকে ৩০০ এমএল পানি পাওয়া যায়। সিয়াম গ্লু কোকোনাট জাতটির পানি খুবই মিষ্টি এবং সুগন্ধীযুক্ত। এটি বেঁটে প্রজাতির জাত। নারিকেল পাড়া সহজ। বর্তমানে নারিকেল গাছে মাকড়ের আক্রমণ শুরু হয়েছে। বড় গাছের মাকড় মারা সম্ভব হচ্ছে না। কিন্তু এ গাছের মাকড় খুব সহজেই নিয়ন্ত্রণ করা যাবে।
কৃষি মন্ত্রণালয় সারা বছরব্যাপী ফল উৎপাদনের জন্য একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে। এ প্রকল্পের অধীন প্রথম ধাপে ভিয়েতনাম থেকে ২০ হাজার নারিকেল চারা আনা হয়েছে। কৃষি কর্মকর্তারা জানান, নারিকেলের উন্নয়নে এশিয়ান প্যাসিভিক কোকোনাট কমিউনিটি কাজ করছে। এর প্রধান কার্যালয় ইন্দোনেশিয়া। বর্তমানে বাংলাদেশসহ ১৮টি দেশের নারিকেল নিয়ে সংস্থাটি কাজ করছে। সংস্থাটি এক জরিপ প্রতিবেদনে জানিয়েছে, বাংলাদেশে ৪০ কোটি নারকেল গাছ লাগানো সম্ভব। কিন্তু উন্নত জাতের নারকেলের সন্ধান মেলেনি। কয়েক বছর আগে ভারত থেকে একটি জাত আনা হলেও চারা করা সম্ভব হয়নি। সেটি হাইব্রিড জাত ছিল। এরপরই ভিয়েতনামে এ নারিকেলের জাতটির সন্ধান মেলে। এ প্রকল্পের পরিচালক মেহেদী মাসুদ জানান, দেশে ডাবের চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু নারিকেল উৎপাদন কমে যাচ্ছে। এজন্য বিশেষ এ জাতটি আমদানি করা হয়েছে। বছরে দেশি জাতের একটি গাছে ৫০ থেকে ৬০টি নারিকেল ধরলেও আমদানীকৃত গাছে গড়ে ২০০টি নারিকেল ধরবে। ঝড়ে গাছ ভাঙার কোনো ভয় নেই।
কৃপ্র/ কে আহমেদ/এম ইসলাম