কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ ভূটান বিশ্বে কার্বন ডাই অক্সাইডের ক্ষতিকর প্রভাবমুক্ত প্রথম দেশ। ভূটান যে পরিমাণ কার্বন ডাইঅক্সাইড নির্গমন করে তার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি কার্বন শোষণক্ষম হওয়াতেই এর নেতিবাচক প্রভাব থেকে মুক্ত। বিশ্বের শিল্পোন্নত দেশগুলো গ্রিন হাউজ গ্যাস নির্গমন কমিয়ে আনতে মরিয়া হয়ে চেষ্টা করছে। জলবায়ু সম্মেলনগুলোতে এখন মূল আলোচ্য বিষয় গ্রিন হাউজ গ্যাস এবং এর নির্গমন কমিয়ে আনার পথ খুঁজে বের করা। গ্রিন হাউজ গ্যাসের কারণে বিশ্ব উষ্ণায়ন দ্রুতগতিতে বাড়ছে এবং পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে অকল্পনীয় পরিবর্তন হচ্ছে। মানুষের কারণে নির্গত গ্রিন হাউজ গ্যাসগুলোর মধ্যে কার্বন ডাইঅক্সাইড অন্যতম। বেশিরভাগ দেশ যে পরিমাণ কার্বন ডাইঅক্সাইড গ্যাস শোষণ করতে সক্ষম তার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি গ্যাস নির্গমন করে। কিন্তু এক্ষেত্রে প্রথম ব্যতিক্রম ভুটান। দেশটির মোট ভূমির ৭২ শতাংশ বনাঞ্চল।
ভুটান বার্ষিক ১৫ লাখ টন কার্বন নির্গমন করে। যেখানে দেশটির কার্বন শোষণ ক্ষমতা ৬০ লাখ টন। দেশটির বেশকিছু নীতি তাদেরকে আজকের অবস্থানে নিয়ে এসেছে। ২০০৯ সাল থেকে ভুটানবাসী একটি প্রতিজ্ঞা মেনে চলছে। তা হল: আজ থেকে আগামীকাল কার্বন নির্গমন কমিয়ে আনা। এভাবে প্রত্যেক আগামীকাল সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়া এবং এগিয়ে যাওয়ার গতি দ্রুততর করা।এছাড়া, ভুটানে কাঠ রপ্তানি নিষিদ্ধ। সংশোধিত সংবিধান অনুযায়ী, দেশটির বনাঞ্চল মোট ভূখণ্ডের ৬০ শতাংশের নিচে নামতে পারবে না।
জৈব জ্বালানির তুলনায় ভুটানে নদী থেকে উৎপাদিত হাইড্রোলিক পাওয়ার বেশি ব্যবহৃত হয়। ২০৩০ সাল নাগাদ ভুটান গ্রিন হাউজ গ্যাস নির্গমন শূন্যতে নামিয়ে আনার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। এছাড়া, পুনব্যবহারের মাধ্যমে আবর্জানার কোটাও শূন্যে নামিয়ে আনতে চাইছে। অটোমোবাইল কোম্পানি নিশানের সঙ্গে যৌথভাবে বিদ্যুৎ চালিত গাড়ি তৈরির কাজ করছে ভুটান সরকার। ভবিষ্যতে দেশটি তাদের সবগাড়ি বিদ্যুৎ চালিত করে ফেলতে চায়। প্রত্যন্ত অঞ্চলে জ্বালানি কাঠের ব্যবহার বন্ধে বিনামূল্যে বিদ্যুৎ সরবরাহ করার পরিকল্পনাও করেছে ভুটান সরকার। এছাড়া, তারা বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিও হাতে নিয়েছে। গতবছর জুনে ভুটানের স্বেচ্ছাসেবকরা মাত্র এক ঘণ্টায় ৪৯ হাজার ৬৭২টি গাছ রোপন করে বিশ্ব রেকর্ড করেছে।