কৃষিবিদ ফরহাদ আহাম্মেদঃ রবি মৌসুম , এসময় কৃষকরা চাষাবাদ নিয়ে খুব ব্যস্ত থাকে। কৃষকরা রবি মৌসুমের ফসলের উচ্চফলনশীল জাত নির্বাচন এবং বীজ সংগ্রহ নিয়ে সমস্যায় পড়ে। প্রায়ই দেখা যায় না জেনে নিম্নমানের বীজ দিয়ে চাষাবাদ করে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
আমাদের দেশে কৃষি মৌসুমের মধ্যে রবি মৌসুমে তথা শীতে সবচেয়ে বেশি ফসলের চাষাবাদ হয়। এসময় কৃষকরা চাষাবাদ নিয়ে খুব ব্যস্ত থাকে। কৃষকরা রবি মৌসুমের ফসলের উচ্চফলনশীল জাত নির্বাচন এবং বীজ সংগ্রহ নিয়ে সমস্যায় পড়ে। প্রায়ই দেখা যায় না জেনে খারাপ জাতের বীজ দিয়ে চাষাবাদ করে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এজন্য এখানে রবি
মৌসুমে চাষাবাদের জন্য উন্নতজাতের বীজের নাম, ফলন ও বীজ প্রাপ্তির স্থান উল্লেখ করা হলো :
ধানের জাত : চান্দিনা/বিআর১ (৫.৫ টন/হেক্টর), মালা/বিআর২ (৬.৫ টন/হেক্টর), বিপ্লব/বিআর৩ (৬.৫ টন/হেক্টর), বিআর৬ (৪.৫ টন/হেক্টর), ব্রি বালাম বিআর৭ (৪.৫ টন/হেক্টর), আশা/বিআর৮ (৬ টন/হেক্টর), সুফলা/বিআর৯ (৬ টন/হেক্টর), ময়না/বিআর১২ (৫.৫ টন/হেক্টর), শাহীবালাম/বিআর১৬ (৬ টন/হেক্টর), হাসি/বিআর১৭ (৬ টন/হেক্টর), শাহজালাল/বিআর১৮ (৬ টন/হেক্টর), মঙ্গল/বিআর ১৯ (৬ টন/হেক্টর), ব্রিধান ২৮ (৫ টন/হেক্টর), ব্রিধান২৯ (৫.৫ টন/হেক্টর), আইআর ৮ (৬ টন/হেক্টর), পূর্বাচলী (৪.৫ টন/হেক্টর), ইরাটম ২৪ (৫ টন/হেক্টর), ব্রি হাইব্রিড ধান-১ (৮.৫ টন/হেক্টর), ব্রিধান ৩৫ (৫ টন/হেক্টর), ব্রিধান ৩৬ (৫ টন/হেক্টর), ব্রিধান ৪৫ (৫.৫ টন/হেক্টর), ব্রিধান ৪৭ (৬.১ টন/হেক্টর), ব্রিধান ৫০ (৬ টন/হেক্টর), বিনাধান ৫ (৭ টন/হে.), বিনাধান ৬ (৭.৫ টন/হে.) ও ব্রিহাইব্রিডধান ২ (৮.৫ টন/হেক্টর)।
গমের জাত : কাঞ্চন (৪.৫ টন/হেক্টর), আকবর (৪.৫ টন/হেক্টর), অঘ্রানী (৪ টন/হেক্টর), প্রতিভা (৪.৫ টন/হেক্টর), সৌরভ (৪.৫ টন/হেক্টর), গৌরব (৪.৫ টন/হেক্টর), সোনালিকা (৪ টন/হেক্টর), বরকত (৪.৫ টন/হেক্টর) আনন্দ (৪ টন/হেক্টর), শতাব্দী (৫ টন/হেক্টর), সুফি (৪.৮ টন/হেক্টর), বিজয় (৫ টন/হেক্টর), প্রদীপ (৫.১ টন/হেক্টর)।
ভুট্টার জাত : বারি হাইব্রিড ভুট্টা ৮ (১০.৭৬ টন/হেক্টর), হাইব্রিড ভুট্টা ৯ (১১.৫৩ টন/হেক্টর), বর্ণালি (৫ টন/হেক্টর), শুভ্রা (৩ টন/হেক্টর) ও মোহর (৫ টন/হেক্টর)।
সরিষার জাত : উন্নত টরি-৭ (১.২ টন/হেক্টর), রাই-৫ (১.১ টন/হেক্টর), কল্যাণীয়া (১.৬টন/হেক্টর), সোনালি (২ টন/হেক্টর), দৌলত (১.৪ টন/হেক্টর), বারি সরিষা-৬ (২ টন/হেক্টর), বারি সরিষা-৭(২.৪ টন/হেক্টর), বারি সরিষা-৮ (২.৫ টন/হেক্টর), বারি সরিষা -৯ (১.৪ টন/হেক্টর), বারি সরিষা -১০(২ টন/হেক্টর), সফল (২.২ টন/হেক্টর), অগ্রণী (২ টন/হেক্টর), বিনা সরিষা ৩ (২ টন/হেক্টর), বিনা সরিষা-৪ (২ টন/হেক্টর), বিনা সরিষা ৫, বিনা সরিষা ৬ (১.৫ টন/হেক্টর), বারি সরিষা ১৪ (১.৫ টন/হেক্টর) ও বারি সরিষা ১৫ (১.৬ টন/হেক্টর),
চীনা বাদামের জাত : মাইজচর বাদাম (২ টন/হেক্টর), বাসন্তী (১.৫ টন/হেক্টর), ত্রিদানা বাদাম (২.২ টন/হেক্টর), ঝিংগা বাদাম (৩ টন/হেক্টর), বারি চীনা বাদাম-৫ (৩ টন/হেক্টর), বারি চিনাবাদাম-৬ (৩ টন/হেক্টর), বিনা চীনা বাদাম-৩ (১.৫ টন/হেক্টর), বারি চীনা বাদাম ৮ (২.৫ টন/হেক্টর) ও বিনা চীনা বাদাম ৪ (১.৭ টন/হে:)।
অন্যান্য তেল ফসল : তিলের উন্নতজাত টি-৬ (১.৩ টন/হেক্টর)। সয়াবিন উন্নত জাত সোহাগ (২ টন/হেক্টর) ও বাংলাদেশ সয়াবিন-৪ (২.৫ টন/হেক্টর)। গর্জন তিলের জাত শোভা (১.৪ টন/হেক্টর)। তিসির জাত নীলা (৯০০ কেজি/হেক্টর)। কুসুম ফলের জাত সাফ-১ (১.৬৬কেজি/হেক্টর)। সূর্যমুখীর জাত কিরনী (১.৮ টন/হেক্টর)।
ডাল ফসল : মসুরের জাত- বারিমসুর-১ (১.৮ টন/হেক্টর), বারিমসুর – ২ (১.৯ টন/হেক্টর), বারিমসুর -৩(২ টন/হেক্টর), বারি মসুর -৪ (২ টন/হেক্টর), বারিমসুর -৫ (২.২ টন/হেক্টর) ও বারিমসুর (২.৫ টন/হেক্টর), বিনামসুর ২ ও বিনামসুর ৩ (১.৯ টন/হেক্টর)। মাসকলাইয়ের জাত-বরিমাস- (১.৫৪ টন/হেক্টর), বারিমাস-১ (১.৫ টন/হেক্টর), বারিমাস-২(১.৭ টন/হেক্টর), বারিমাস-৩ (১.৮ টন/হেক্টর), বারিমুগ-৩ (১.২ টন/হেক্টর), বারিমুগ -৪(১ টন/হেক্টর) ও বারিমুগ ৬ (১.৮ টন/হেক্টর)। বারি খেসারি -১ (২.০ টন/হেক্টর), বারি খেসারি ২ (১.৯ টন/হেক্টর), বিনা খেসারি ১ (১.৯ টন/হেক্টর)। ছোলার জাত_ বারি ছোলা ১ (২ টন/ হে:), বারি ছোলা ২ (১.৯ টন/ হে:), বারি ছোলা ৩ (১.২ টন/ হে:), বারি ছোলা ৪ (২ টন/ হে:), বারি ছোলা ৫ (২ টন/ হে:), বারি ছোলা ৬ (২.২ টন/ হে:), বারি ছোলা ৭ (২.১ টন/ হে:), বারি ছোলা ৮ (২.২ টন/ হে:), হাইপ্রোছোলা (২.৬ টন/ হে:) ও বিনা ছোলা ২ (১.৮ টন/ হে:)।
ফুলকপির জাত ঃ আগাম- কার্তিকা, রুপা, অঘ্রানী হোয়াইট, ব্যারন, রোকুইন। মধ্যসময়ে- পোষালী, রোবল এক্স, সুপ্রিম্যাক্স, রাক্ষসী। নাবি- মাঘি, রোবল, রাক্ষসী ও বেনারসি।
বাঁধাকপির জাত : আগাম জাত-কেকেক্রস। মধ্যম- এটলাস৭০, টোকিও প্রাইড, গ্রিন এক্সপ্রেস, প্রভাতি। নাবিজাত- এটলাস৭০, লিও ৮০, সেভয়, রুবিবল, ড্রাম- হেড ও অগ্রদূত।
টমেটোর জাত : আগামজাত – পাথর কুচি, রুবি পুষা, আর্লি ডোয়ার্ফ, পবা আর্লি। নাবিজাত- রতন, মানিক, রোমা, বাহার, সানমর্জিনো, মারগ্লোব, অপূর্ব ও লালিমা। বারিহাইব্রিড টমেটো ৫ (৯৫ টন/হেক্টর), বারিহাইব্রিড টমেটো, ৬(৯০ টন/হেক্টর), ও বারিটমেটো ১৪(৮৫ টন/হেক্টর)।
পালংশাকের জাত : কপি পালং ও পুষা জয়তী।
বেগুনের জাত : ইসলামপুরী, তল্লা, কেজি, উত্তরা, খটখটিয়া, লাফফা, কাজলা ও নয়নতারা।
মুলার জাত : আগামজাত- তাসাকীসান, লালবম্বে, পিংকি, এভারেস্ট। নাবিজাত- মিনু, আর্লি, মিয়াসিগে, দ্রুতি ও বারিমুলা ৪।
গাজরের জাত : রয়েলক্রস, কোরেলক্রস, কিনকো, সানটিনে, রয়েল ও স্কার লেট নান্টেস।
ব্রোকলির জাত : ক্রসেজর, গ্রিন ডিউক, ক্যাপ কুইন ও জুপিটার।
ওলকপির জাত : আর্লি হোয়াইট ভিয়েনা, পার্পল ভিয়েনা ও অপটিমা।
লাউয়ের জাত : ক্ষেত লাউ, হাজারি ও বারি লাউ-১।
শিমের জাত : কার্তিকা, সীতাকু-ু, বাটা, নলডুগ, বারিশিম-১, বারিশিম৪ ইপসা শিম-১ ও ইপসা শিম ২।
গোল আলুর জাত : মুন্টা, ডায়মন্ড, কার্ডিলাল, বারিটিপিএস-১, বারিটিপিএস-২, বারিআলু২৭, আলু২৮, বারিআলু ২৯।
মটরশুঁটির জাত : আর্কেল, বলভেলী, গ্রিনফিস্ট ও বারিমটরশুঁটি-১।
লেটুসের জাত : কিংক্রাউন, গ্রেট লেইক ও বারি লেটুস-১(২৯ টন/হেক্টর)।
মিষ্টিআলুর জাত : বারি মিষ্টিআলু-৮ (৪৫ টন/হেক্টর), বারি মিষ্টিআলু-৯ (৪৫ টন/হেক্টর), ও কমলা সুন্দরী।
পেঁয়াজের জাত : তাহের পুরী, ফরিদ পুরী, বারি পেঁয়াজ-১ ও বারি পেঁয়াজ-৪।
মিষ্টি কুমড়ার জাত : বারমাসী, লার্জরেড, বিক্রমপুরী, মিষ্টি কুমড়া-১ ও বারি মিষ্টি কুমড়া-২।
মরিচের জাত : বাইন, বগুড়া, বালিজুরি, বারমাসী, সূর্যমুখী, চৌরা ও বারি মরিচ-১।
চীনা কপির জাত : বারি বাটিশাক ও চীনাশাক-১।
শসার জাত : ভুঁয়ে শসা ও বারমাসী।
ঝুপড়ি শিমের জাত : কনটেন্ডার, কেন্টাকিম পার্বতী।
বীজের প্রাপ্তিস্থান : উক্ত ফসলের জাত ছাড়াও বিভিন্ন হাইব্রিড জাতের বীজ বাজারে পাওয়া যায়। বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন, কৃষিবিদ সিড, ইস্টওয়েস্ট সিড কোং, ব্র্যাক, প্রশিকাসহ বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বীজ উৎপাদন করে। ঢাকার সিদ্দিক বাজার বীজের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার। বীজের প্রতিষ্ঠান দোকান থেকে লেভেল চিহ্নিত করে ওই বীজ ক্রয় করা যেতে পারে। তবে হাট-বাজার থেকে খোলা অজানা বীজ সংগ্রহ করা ঠিক না।
কৃপ্র/এম ইসলাম