কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণের পাশাপাশি পরিবেশের উন্নয়ন ও দারিদ্র্য বিমোচনে অনাদিকাল থেকে বৃক্ষ অনন্য ভূমিকা পালন করে আসছে। বৃক্ষকে দূষণমুক্ত পরিবেশ সৃষ্টির চালিকাশক্তি হিসেবে অভিহিত করে তিনি বলেন, এজন্যই বৃক্ষরোপণের মাধ্যমে সমৃদ্ধ সবুজ বাংলাদেশ গড়ে তোলা একান্তভাবে প্রয়োজন।
জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযান ও বৃক্ষমেলা ২০১৬ উপলক্ষে প্রদত্ত শনিবার এক বাণীতে শেখ হাসিনা এ কথা বলেন। ‘প্রতি বছরের ন্যায় এবারও বৃক্ষরোপণ, সংরক্ষণ ও পরিচর্যা বিষয়ে দেশের জনগণকে আগ্রহী ও সচেতন করে তুলতে সারাদেশে বৃক্ষরোপণ অভিযান ও বৃক্ষমেলা-২০১৬ পালন করা হচ্ছে জেনে সন্তোষ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি মনে করেন, জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযান ও বৃক্ষমেলার এবারের প্রতিপাদ্য ‘জীবিকার জন্য গাছ, জীবনের জন্য গাছ’ যথার্থ হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, জীবন ও জীবিকার জন্য বৃক্ষের গুরুত্ব অপরিসীম। ‘আমরা বাঁচার জন্য অক্সিজেন পাই বৃক্ষ হতে’ এ কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, গাছ বায়ুম-লের কার্বন-ডাই-অক্সাইড গ্রহণ করে এবং নিজ দেহে জমা রেখে পৃথিবীর কার্বন চক্রকে নিয়ন্ত্রণ করে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বনায়ন একটি উৎপাদনশীল ক্ষেত্র। জনগণকে সম্পৃক্ত করে সৃষ্ট সামাজিক বনায়ন দরিদ্র জনগণের জীবিকার দ্বার উন্মোচিত করেছে। পরিবারের আয় বৃদ্ধি করেছে। সামাজিক বনায়নের সাথে সম্পর্কিত পরিবারগুলো দিন দিন স্বাবলম্বী হয়ে উঠছে।’ অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ও দারিদ্র্য বিমোচনের পাশাপাশি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য নির্মল পরিবেশ সৃষ্টিতেও সামাজিক বনায়ন তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে বিশ্বের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর অন্যতম। জলবায়ু পরিবর্তনের মূলে রয়েছে অধিক মাত্রায় কার্বন-ডাই-অক্সাইড নিঃসরণ। বৃক্ষ বায়ুম-লের তাপমাত্রা হ্রাস করে জীবের জন্য বসবাস উপযোগী ধরণী সৃষ্টি করে। ঝড়-ঝঞ্ঝা ও জলোচ্ছ্বাসের তীব্রতা হ্রাস করে জীবন ও সম্পদ রক্ষা করে। তিনি বলেন, ‘আমাদের সরকার জলবায়ুর পরিবর্তন রোধ, পরিবেশের উন্নয়ন এবং সম্পদ সৃজনে বৃক্ষের অবদান অনুধাবন করে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিকে জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম হিসেবে চিহ্নিত করেছে। এ লক্ষ্যে সারা দেশব্যাপী বৃক্ষরোপণ কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে। বিভাগ, জেলা ও উপজেলায় বৃক্ষমেলার আয়োজন করা হচ্ছে।’ শেখ হাসিনা এ কার্যক্রমকে সার্থক করে তুলতে বাড়ির আঙিনা ও চারপাশ, পতিত ও প্রান্তিক ভূমি, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, জলাশয়, খাল ও রাস্তার পাশে বৃক্ষরোপণ করে সবুজায়নের এ মহৎ উদ্যোগে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণের সকলের প্রতি আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ বছর যাঁরা ‘বৃক্ষরোপণে প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় পুরস্কার-২০১৫’, ‘বঙ্গবন্ধু অ্যাওয়ার্ড ফর ওয়াইল্ডলাইফ কনজারভেশন ২০১৬’ এবং যে সকল উপকারভোগী সামাজিক বনায়নে লভ্যাংশ পেয়েছেন ‘আমি তাঁদের সকলকে অভিনন্দন জানাই। বৃক্ষরোপণ অভিযান ও বন্যপ্রাণী রক্ষায় তাঁদের উদ্যোগ অব্যাহত থাকবে বলে আমার প্রত্যাশা।’ তিনি জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযান ও বৃক্ষমেলা ২০১৬ এর সাফল্য কামনা করেন।
কৃপ্র/ কে আহমেদ /এম ইসলাম
সুত্রঃ বাসস