কৃষি প্রতিক্ষন ডেস্ক : নাটোরে গ্রামীণ জনপদে কৃষকরা মেতেছে শ্বেত সুন্দর পাট উৎসবে। জমিতে সবুজে ভরপুর পাট রাজ্যে চলছে পাট কাটা। অন্যদিকে জলাশয় ও এর পাড় সংলগ্ন স্থানগুলোতে পাট গাছ ভেজানো, পাটের আঁশ ছড়ানো, পাট শুকানো, পাটকাঠি সংগ্রহ- সব কর্মযজ্ঞই চলছে যুগপৎ ভাবে। খবর বাসসের । নাটোর কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, চলতি বছর জেলায় ১৬ হাজার ১০১ হেক্টর জমিতে পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ২৩ হাজার ৮৭০ হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়েছে- যা ১৪৮ শতাংশ বেশি। গত বছর জেলায় পাটের আবাদি জমি ছিল ১৫ হাজার ৮৭০ হেক্টর এবং পাট উৎপাদন হয়েছিল এক লক্ষ ৫৯ হাজার ৯০১ বেল। ২০১৪ সালে ১৪ হাজার ৩৬৬ হেক্টর জমি থেকে এক লক্ষ ৩৮ হাজার ১৫৬ বেল পাট পাওয়া গিয়েছিল। বিগত ২ বছরে যথাক্রমে হেক্টর প্রতি ৯.৬১ এবং ১০.০৬ বেল পাট উৎপাদন হলেও চলতি বছরে হেক্টর প্রতি উৎপাদন সাড়ে ১০ বেল ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। অর্থাৎ বিগত বছরগুলোতে আবাদী জমির পাশাপাশি হেক্টর প্রতি গড় উৎপাদনও বেড়েছে।
সিংড়া উপজেলার লাড়ুয়া গ্রামের কয়েক কিলোমিটার রাস্তার দু’পাশে এবং সংলগ্ন বিল ও ডোবাতে শতাধিক নারী-পুরুষ পাট পঁচানো ও আঁশ ছড়ানোর কাজে ব্যস্ত রয়েছেন । মজুরি কম হওয়ায় এই কাজে মহিলাদের অংশগ্রহণ চোখে পড়ার মত। তারা মূলতঃ পানিতে না নেমেই পঁচানো পাট পাড়ে তুলে এনে আঁশ ছড়াচ্ছেন।
রাস্তার দু’ধারে বাঁশের আড় টানিয়ে, কালভার্টের রেলিং কিংবা গৃহস্থ্য বাড়ির চারপাশ-সর্বত্রই চলছে পাট শুকানোর কাজ। এসব এলাকা জুড়ে ঠায় দাঁড়িয়ে পাটকাঠির বোঝা সমৃদ্ধির জানান দিচ্ছে। নাটোর সদর উপজেলার হালসা ইউনিয়ন ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা বাবুল হোসেন বলেন, এবার এলাকায় আশানুরূপ পাট চাষ হয়েছে। গড় উৎপাদন বিঘা প্রতি দশ মণ। নাটোরের প্রসিদ্ধ পাটের হাট গুরুদাসপুরের নাজিরপুর, নাটোর সদরের তেবাড়িয়া এবং সিংড়ার হাতিয়ান্দহ হাট ঘুরে দেখা যায়, আগাম ওঠা পাট হাটে বিপণন হচ্ছে। হাতিয়ান্দহ হাটে পাট বিক্রি করতে আসা সোলেমান মিয়া বলেন, হাটে গড়ে ১৮শ টাকা মণ দরে জমির পাট বিক্রি করলাম। পাট ব্যবসায়ী আজিজুল ইসলাম মেম্বার জানান, এবার হাটে পাটের দর ব্যবসায়ী ও কৃষক-উভয়ের জন্যই ভাল। হাটে পাটের দর ১৬শ থেকে ২ হাজার টাকা পর্যন্ত।
নাটোর কৃষি সম্প্র` সারণ বিভাগের উপ-পরিচালক আলহাজ উদ্দিন আহাম্মেদ বাসস’কে জানান, পরিবেশ বান্ধব বলেই পাটের বহুমুখী ব্যবহার হচ্ছে। এর ফলে দেশে ও বিদেশে পাটের চাহিদা বাড়ছে। বাড়তি মূল্য পাওয়ার কারণে কৃষকরা লাভবান হওয়ায় পাট চাষে তারাও আগ্রহী হয়ে উঠছেন। এক্ষেত্রে প্রশিক্ষণ ও প্রযুক্তি জ্ঞানে কৃষকদের এগিয়ে নিতে কৃষি বিভাগ সবসময় কৃষকদের পাশে থাকবে।
কৃপ্র/ কে আহমেদ/ এম ইসলাম