কৃষি প্রতিক্ষন ডেস্ক : দেশের উত্তরাঞ্চলে বন্যায় হাজার হাজার হেক্টর জমি তলিয়ে যাওয়ায় আমন ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এখন পানি কমতে থাকলেও নষ্ট হয়েছে বেশির ভাগ চারা। ফলে নতুন করে আবারও চারা রোপনের আশায় বুক বাঁধছেন কৃষক। তবে ধানের চারা নিয়ে উদ্বিগ্ন তারা। একদিকে বীজতলা প্রস্তুত করার পরিস্থিতি নেই, অন্যদিকে বীজও নেই কৃষকের হাতে। তাই সরকারের সহায়তার দিকেই চেয়ে আছেন তারা। জানা গেছে, ঘাঘট, তিস্তা, যমুনা, ব্রহ্মপুত্র এবং ধরলার পানিতে গাইবান্ধা ও কুড়িগ্রামে মোট ১২ হাজার ৫৯৫ হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ধান ও পাট ক্ষেত।
গাইবান্ধায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক আকম রুহুল আমিন জানান, আমন ধান নষ্ট হয়েছে ১ হাজার ৭১ হেক্টর জমিতে। অনেকে আউশ ধান রোপন করেছিলেন। সেটাও বন্যার পানিতে নষ্ট হয়েছে ২৪৫ হেক্টর জমিতে। সব মিলে ৩ হাজার ৬৫১ হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। এদিকে কুড়িগ্রামে নষ্ট হয়েছে ৮ হাজার ৯৪৪ হেক্টর জমির ফসল।কৃষকরা বলছেন, সরকার থেকে চারা না দিলে আর আমন ধান রোপন করা সম্ভব হবে না। কেননা ভাদ্র মাস পর্যন্ত ধান রোপন করার সময় থাকলেও চারা নেই।
এদিকে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের কর্মকর্তারা জানান, কিছু বীজতলা তৈরা করা হয়েছে। এ দিয়ে কিছু চাহিদা মেটানো যাবে। এছাড়া লালমনিরহাট, দিনাজপুর, রংপুর থেকেও চারা এনে দেওয়ারও চিন্তা-ভাবনা হচ্ছে। কুড়িগ্রামের কৃষি কর্মকর্তা মো. মকবুল হোসেন বলেন, পানি আরো কমে গেলে একটা জরিপ করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এক্ষেত্রে চারার সংকটের কথা চিন্তা করে স্থানীয় কিছু জাত আছে, সেগুলো দেওয়া হবে। এছাড়া কিছুকিছু জমি আছে, যেগুলোতে পানি সরতে সময় লাগবে। সেখানে অন্য ফসল বা শাক সব্জির বীজ দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে।
গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার কৃষক আসগর আলী বলেন, বন্যায় খুব ক্ষতি হইয়া গ্যাল। পানি কইমলে আবার ধান লাগাবো। কিন্তু চারা যে নাই। সরকার দিলে ভালাই হবে।
এদিকে পাটেরও বেশ ক্ষতি হয়েছে। পানি ডুবে যাওয়ায় সময়ের আগেই কাটতে হয়েছে পাট গাছ। ফলে গুণগত আঁশ না পাওয়ার কারণে এবার তেমন দামও পাবেন না উত্তরাঞ্চলের কৃষকরা। গাইবান্ধা, কুড়িগ্রামে অন্তত ৩ হাজার হেক্টর জমির পাটচাষিরা এভাবেই ক্ষতির স্বীকার হয়েছেন। কুড়িগ্রামের রমনা ইউনিয়নের বাসিন্দা আব্দুল করিম জানান, পাট গাছ তো কুমলা (পরিপক্ক নয়) থাকতেই কাটতে হল। এ পাট থেকে যে আঁশ পাওয়া যাবে তার দাম ভালো হবে না।
কৃপ্র/ কে আহমেদ/ এম ইসলাম