মোঃ আরিফুর রহমান।।
মহাবিপন্ন তিতি পাখি, বাংলাদেশে এই পাখিটির বাণিজ্যিক লালন-পালনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে দেশে তিতির পালনের জন্য বেশ কিছু খামার গড়ে উঠেছে। গবেষকরা জানান, তিতিরের তিনটি প্রজাতি রয়েছে। এর মধ্যে একটি প্রজাতির তিতির নিয়ে গবেষণা করে সম্প্রসারণে সফলতা পেয়েছেন বাংলাদেশের গবেষকরা। মেলিয়াগ্রিডের পরিবারের এক ধরণের বৃহদাকৃতির পাখি এটি। বাচ্চা দেখতে মুরগীর বাচ্চার মত হলেও পরিপূর্ণ বয়সে বদলে যায় আকৃতি ও চেহারা।
এ প্রজাতির তিতিরের দৈর্ঘ্য কমবেশি ৩৪ সেন্টিমিটার, ডানা ১৫ সেন্টিমিটার, ঠোঁট ২.৪ সেন্টিমিটার, পা ৪.৮ সেন্টিমিটার ও লেজ ১০ সেন্টিমিটার। পুরুষ ও স্ত্রী তিতিরের চেহারা ভিন্ন। সচরাচর একাকী কিংবা জোড়ায় জোড়ায় ঘুরে বেড়ায় এই পাখিটি। খাদ্যতালিকায় রয়েছে বীজ, শস্যদানা, কচি কান্ড, ফল ও পোকামাকড়। ঊষা ও গোধূলিতে এরা বেশি কর্মচঞ্চল হয়।
গবেষকরা জানান, সংক্রমণ বা পরজীবী তিতিরকে সহজে আক্রমণ করতে পারে না। ফলে খামারে তিতির পালন করতে আলাদা কোন ভ্যাকসিন কিংবা ঔষুধের প্রয়োজন হয় না। প্রতিকূলতার সঙ্গে বাণিজ্যিক মুরগি চলতে না পারলেও তিতির চলতে পারে। বছরে একটি তিতির ১০০ থেকে ১২০টি ডিম দেয়। ডিমগুলো হলদে জলপাই থেকে হালকা জলপাই বাদামী বর্ণের হয়। ডিম থেকে বাচ্চা উৎপাদন ও পালনের সবগুলি ধাপ বাকৃবি গবেষণা খামারে শেষ হওয়ার পর এখন তিতির ছড়িয়ে পড়ছে উদ্যোক্তাদের খামারে। এক একর জমিতে আমরা ৩০০-৩৫০ টি পূর্ণ বয়স্ক তিতির পালন করা যায় । রাতে পাখী প্রতি ৩ থেকে ৪ বর্গফুট জায়গার প্রয়োজন হয়।
একটি আদর্শ তিতির খামার করতে খুব বেশী পুঁজির প্রয়োজন হয় না। অন্যান্য পাখীর তুলনায় এর রোগ বালাই কম এবং কিছু নিয়ম মেনে চললে এই খামারে ঝুঁকি অনেক কম। খবারের খরচ কম । বাজারে চাহিদা প্রচুর । উচ্চ মূল্য থাকায় খরচের তুলনায় আয় অনেক বেশী
খামারে তিতির পালন করে দারিদ্র বিমোচন করা সম্ভব। তিতির পাখির বাজার মূল্য হাঁস-মুরগির চেয়ে অনেক বেশি। তাই এটি পালন মুরগির চেয়েও লাভজনক। তিনি বলেন, দেশী মুরগি খামারে ৬ মাসে সাত’শ আট’শ গ্রাম বা সর্বোচ্চ এক কেজি ওজনের হয়। কিন্তু তিতির পাখি পনের’শ থেকে ষোল’শ গ্রামের হয় বা তার বেশিও হয়ে থাকে। তিতিরের মাংস বেশ পুষ্টিকর ও সুস্বাদু হওয়ায় এটি খাদ্য তালিকার একটি আদর্শ মাংস হতে পারে।
কৃপ্র/এম ইসলাম