কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ পূর্ব সুন্দরবনের করমজল পর্যটন এলাকায় অবস্থিত কুমির প্রজনন কেন্দ্রে লবন পানির কুমির ‘জুলিয়েট’ ও ‘পিলপিলের’ ডিম থেকে ৪৭টি কুমির ছানা জন্ম নিয়েছে। রোববার সকালে পিলপিলের ৪৮টি ডিম থেকে ২৭টি এবং জুলিয়েটের ৫০টি ডিম থেকে ২০ টি সতেজ ছানা জন্ম নেয়। করমজল কুমির প্রজনন কেন্দ্রে কৃত্রিম প্রক্রিয়ায় এ সব ছানা জন্ম দেয়া হয়েছে। খবর বাসস।
করমজল কুমির প্রজনন কেন্দ্রে লবন পানির প্রজাতির (সল্ট ওয়াটার ক্রোকোডাইল) দুটি মেয়ে কুমির এবং একটি পুরুষ কুমির রয়েছে। পরিচর্যাকারীরা এদের নাম দিয়েছে পিলপিল, জুলিয়েট ও রোমিও। এদের মধ্যে পিলপিলের বয়স ১৯, জুলিয়েট ও রোমিওর বয়স ২৮ বছর। লবন পানির প্রজাতির কুমিরের গড় আয়ু আশি থেকে একশ বছর। এ ছাড়া এই কেন্দ্রে ভারত থেকে আনা মিঠা পানির প্রজাতির (মার্শ ক্রোকোডাইল) দুটি মেয়ে কুমিরও রয়েছে। এদের প্রতিটির বয়স কুড়ি বছর করে।
করমজল কুমির প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কুমির বিশেষজ্ঞ আব্দুল মান্নান এই প্রতিবেদককে বলেন, পিলপিল ৮৫ দিন আগে ৪৮টি এবং জুলিয়েট ৫০টি ডিম দেয়। এ সব ডিম সংগ্রহ করে পৃথকভাবে কৃত্রিম প্রক্রিয়ায় নিবিড় পরিচর্যায় রাখা হয়। নিবিড় পরিচর্যাকালে নির্দিষ্ট তাপমাত্রা, আর্দ্রতা এবং পর্যাপ্ত অক্সিজেন ও আলোর ব্যবস্থা করা হয়। ৮৫দিন পর রোববার সকালে পিলপিলের ডিম থেকে ২৭টি এবং জুলিয়েটের ডিম থেকে ২০টি সুস্থ্য বাচ্চা জন্ম নেয়। ভ্রুণের মৃত্যু ও অনিষিক্ত হওয়ার কারণে এবার ৫১টি ডিম নষ্ট হয়ে গেছে। তবে বিশেষ ব্যবস্থা নেয়ার কারণে ফুটানো বাচ্চার আশি শতাংশ নারী এবং ২০ শতাংশ পুরুষ কুমির। ৩৬ ঘন্টা নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখার পর এ সব কুমির ছানা নির্ধারিত (চৌব্চ্চাা) জলাশয়ে ছেড়ে দেয়া হবে।
সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. সাইদুল ইসলাম আজ বিকালে জানান, বাংলাদেশে বিলুপ্তপ্রায় লবণ পানির প্রজাতির কুমিরের প্রজনন বৃদ্ধি ও লালন-পালনের জন্য সুন্দরবনস বায়োডাইভারার্সিটি কনজারভেশন প্রকল্পের আওতায় ২০০২ সালে পূর্ব সুন্দরবনের করমজল পর্যটন কেন্দ্রে ৩২ লাখ টাকা ব্যয়ে আট একর জমির উপর বনবিভাগের উদ্যোগে গড়ে তোলা হয় দেশের একমাত্র সরকারী এই কুমির প্রজনন কেন্দ্র। সুন্দরবনের বিভিন্ন নদীতে জেলেদের জালে আটকা পড়া ছোট-বড় পাঁচটি কুমির নিয়ে কেন্দ্রের কার্যক্রম শুরু হয়। অস্ট্রেলিয়ার আর্ন্তজাতিক ওয়াইল্ড লাইফ কনজারভেশন সেন্টারে প্রশিক্ষণপ্রাপ্তরা এই কেন্দ্রটি তত্ত্বাবধায়ন করে আসছেন।
তাহেরা ইসলাম/ এম ইসলাম