কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ নরসিংদী পলাশ উপজেলার চরসিন্দুর ইউনিয়নের চরসিন্দুর গ্রামের মৃত ফয়েজ আলীর ছেলে। এক সময় মাথা গুজার ঠাইও ছিলো না তার। মানুষের জমি চাষ করে কোন রকম দিন চলছিল। বছর দুয়েক আগে উদ্দ্যোগ নেয় লেবু চাষে। এরপর বাড়ির ভিটায়, পরে জমি বর্গা নিয়ে গড়ে তোলে বিশাল লেবু বাগান। আর এই লেবু বাগন দিয়ে ঘুরিয়েছেন নিজের ভাগ্যের চাকা। সাধনা আর পরিশ্রমের মাধ্যমে কাজ করলে জীবনে সফলতা অর্জন করা সম্ভব এর প্রমান ইউনুস মিয়া।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ক্ষেত বাড়ির উঠান ঘরের সামনে যেখানে একটু ফাঁকা জায়গা আছে সেখানেই লেবু গাছ। কম খরচে বেশি লাভ হওয়াতে এলাচী, কলম্ব ও কাগজী জাতের লেবু চাষ করেন ইফনুস মিয়া। তার বাগানের লেবু স্থানীয় হাট-বাজার ও জেলার চাহিদা মিটিয়ে চালান হয় রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে।
চরসিন্দুর এলাকার লেবুর আলাদা বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এখানকার লেবু সুগন্ধী, মন জুড়ানো ঘ্রাণ আর স্বাদে ভরপুর। কৃষক ইউনুস মিয়া প্রথমে ভাল জাতের চারা সংগ্রহের জন্য নরসিংদীর জেলার শিবপুর থেকে কিছু এলাচী সুগন্ধী জাতের চারা সংগ্রহ করে বসত বাড়িতে রোপন করেন এবং তা থেকে গুটি কলমের মাধ্যমে নিজে চারা তৈরি করে ৫২ শতক জমিতে রোপন করেন।
পরবর্তীতে সময়মত উপরি সার প্রয়োগ, রোগ পোকা দমন, সেচ, নিড়ানিসহ অন্যান্য পরিচর্যা নিবিড় ভাবে করেন। তারই ফলশ্রুতিতে বাগান সুস্থ সুন্দর ও ফলবান হয়ে উঠে। ২০১৪-১৫ মৌসুমে বাগান হতে প্রাথমিক সময়ে অল্প পরিমাণ ফলন হয়। কিন্তু চলতি ২০১৬ মৌসুমে গাছ প্রতি ১৫০ থেকে ১৭৫ টি লেবু এবং ৫২ শতক জমিতে মোট ৩ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা আয় হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
কৃষক ইউনুস মিয়া জানান, বাগান স্থাপন ও রক্ষণাবেক্ষণ বাবদ ৩৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে এবং আমার বাগান থেকে যে লেবু পাওয়া যাবে তা থেকে দেশের কিছুটা হলেও চাহিদা মিটবে। তাই কোনো দিকে না তাকিয়ে “চলো পাল্টাই”- স্লোগানকে নিয়ে তার লেবু বাগানে সারাক্ষণ মনের আনন্দে কাজ করছেন। উপজেলা কৃষি অফিসার ইতোমধ্যে তার বাগান পরিদর্শন করেছেন এবং বাগানটির ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট উপ-সহকারি কৃষি অফিসারের মাধ্যমে সার্বক্ষণিক খোজ খবর রাখছেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি অফিসার আমিরুল ইসলাম জানান, লেবু বাগান স্থাপনের জন্য চরসিন্দুরের মাটি উপযোগী, মানসম্মত জাতের লেবু সম্প্রসারণের জন্য কৃষকদের কারিগরি পরামর্শ প্রদান করে যাচ্ছি।
কৃপ্র/ কামাল / এম ইসলাম