কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ রাজশাহীর বরেন্দ্র অঞ্চলের চাষীরা গত কয়েক বছর ধরে সেচে প্রি-পেইড কার্ড ব্যবস্থা গ্রহণ করে খুশি এবং এ পদ্ধতি তাদের মাঝে ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
‘স্মার্টকার্ডের মাধ্যমে গভীর নলকূপ ব্যবহার ও বিদ্যুৎ পরিমাপ ব্যবস্থা’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিএমডিএ) এই কার্ড প্রবর্তন করে।
গত ২০১৪ সালের মার্চ থেকে তিনবছর মেয়াদী প্রকল্পটি ১৯ কোটি ৯ লাখ টাকা ব্যয়ে রাজশাহী, নওগাঁ ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার ২৫টি উপজেলায় বাস্তবায়িত হচ্ছে।
বিএমডিএ এর নির্বাহী পরিচালক প্রকৌশলী আবদুর রশিদ বলেন, চাষিদের চাহিদা অনুযায়ী আবাদি জমিতে সেচের পানি সরবরাহে আধুনিক পদ্ধতির আগাম পরিশোধ ব্যবস্থা প্রণয়ন করা হয়েছে।
প্রকল্প বাস্তবায়নকালে এবং প্রকল্প শেষে এর মাধ্যমে প্রান্তিক পর্যায়ের শ্রমিক ও চাষিদের অতিরিক্ত কাজের সুযোগ হবে। প্রি-পেইড ব্যবস্থার মাধ্যমে বিদ্যুতের চুরি রোধ ও মিটার জালিয়াতি করা যাবে না। ইতিমধ্যে ৩ হাজার ৯শ গভীর নলকূপে প্রি-পেইড ব্যবস্থা স্থাপিত হয়েছে।
এছাড়া জুন পর্যন্ত চাষিদের মাঝে ৮২ হাজার স্মার্টকার্ড বিতরণ করা হয়েছে।সেচ ব্যবস্থায় প্রি-পেইড কার্ড ব্যবহারের মাধ্যমে ৩০ শতাংশ সেচ ব্যয় হ্রাস পেয়েছে এবং ভূগর্ভস্ত পানির ৪০ শতাংশ অপব্যবহার হ্রাস পেয়েছে।
প্রি-পেইড কার্ডের মাধ্যমে গভীর নলকূপে সেচের প্রয়োজনীয় পানি পাওয়ায় ফসলের উৎপাদন বেড়েছে, চাষিরা উপকৃত হচ্ছে এবং পরিবেশের উপর প্রভাব সামান্যই পড়ছে।
প্রকৌশলী রশিদ বলেন, আমরা শতভাগ গভীর নলকূপকে প্রি-পেইড কার্ডের আওতায় আনার জন্য কাজ করছি। রাজশাহী বিভাগের বরেন্দ্র অঞ্চলে চারটি জেলার বিস্তীর্ণ এলাকা অন্তর্ভুক্ত।
এ অঞ্চলের বেশিরভাগ এলাকায় বছরজুড়ে বৃষ্টিসহিষ্ণু এক ফসলী আমন ধান চাষ করা হয়। কিন্তু এই অঞ্চলে শতাধিক গভীর নলকূপ স্থাপন করার ফলে এ অঞ্চরের ফসল ফলানোর ধরণ সম্পূর্ণভাবে পরিবর্তিত হয়ে গেছে।
১৪ হাজার ৬শ ৪২টি বৈদ্যুতিক গভীর নলকূপ স্থাপন করায় দেশের উত্তরাঞ্চলে ৭ লাখ ৯২ হাজার হেক্টর জমির মধ্যে ২ লাখ ৯৭ হাজার ইরি-বোরো জমি সেচের আওতায় এসেছে। সেচের মাধ্যমে বরেন্দ্র অঞ্চলের ফসল ফলনের সক্ষমতা বৃদ্ধির ফলে ৩৪ লাখ ৩২ হাজারের মধ্যে ২৬ লাখ ৭৬ হাজার টন অতিরিক্ত ফলন পাওয়া যাচ্ছে।
প্রকৌশলী রশিদ জানান, এ অঞ্চলে ফসল ফলানোর ক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নয়নের পাশাপাশি খাল ও পুকুর খনন করে পানি সরবরাহ বাড়ানো হচ্ছে।
তিনি জানান, বার্ষিক শষ্যের ফলন ৭ লাখ ৫৬ হাজার থেকে ৩৪ লাখ ৩২ হাজার থেকে বৃদ্ধি পেছে এবং শষ্যের ফলন ১১৭ শতাংশ থেকে ২২৬ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি পেয়ে। আর বৃষ্টিপাত ৫৪ দশমিক ৯৯ ইঞ্চি থেকে বেড়ে ৬৪ ইঞ্চিতে উন্নীত হয়েছে।
কৃপ্র/ এম ইসলাম