কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ দেশের বৃহত্ ভোগ্যপণ্যের বাজার চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে পেঁয়াজের দাম নিম্নমুখী রয়েছে। প্রধান পেঁয়াজ রফতানিকারক দেশ ভারতে দাম কম থাকায় আমদানি বেড়েছে। এ অবস্থায় সরবরাহ চাপে ১৫ দিনের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম কমেছে কেজিতে ২ থেকে ৫ টাকা। খবর বণিক বার্তা।
খাতুনগঞ্জের বিভিন্ন আড়ত ও দোকানে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গতকাল প্রকারভেদে পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ১৫ থেকে ২০ টাকায়। দুই সপ্তাহ আগে একই পরিমাণ পণ্যের দাম ছিল ২০ থেকে ২৫ টাকা। গতকাল ভারতের নাসিক জাতের ভালো মানের পেঁয়াজ বিক্রি হয় কেজিপ্রতি ১৭ থেকে ১৯ টাকায়। এছাড়া একই জাতের মাঝারি মানের পেঁয়াজ বিক্রি হয় প্রতি কেজি ১৬ থেকে ১৮ টাকা দরে।
পাইকারিতে গতকাল আমদানিকৃত ভারতের কানপুর জাতের পেঁয়াজ প্রতি কেজি ১৫-২০ টাকায় বিক্রি হয়। এর দাম দুই সপ্তাহ আগে ছিল ১৮-২২ টাকা। একইভাবে পনেরো দিনের ব্যবধানে পাটনা জাতের পেঁয়াজের দাম কেজিতে দুই-তিন টাকা কমেছে। বর্তমানে খাতুনগঞ্জে পাটনা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১৪-১৭ টাকায়।
মূল্যহ্রাসের বিষয়ে আমদানিকারক ও ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, ভারতে পেঁয়াজের দাম কম থাকায় পণ্যটির আমদানি বাড়িয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ফলে খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারে ভারতীয় পেঁয়াজের সরবরাহ বেড়েছে। চাহিদার তুলনায় সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় পেঁয়াজের দাম কমে যাওয়ার মূল কারণ।
খাতুনগঞ্জের কাঁচা পণ্য ব্যবসায়ী মেসার্স তোহা এন্টারপ্রাইজের স্বত্ব্বাধিকারী সাব্বির আহমেদ বলেন, সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় লোকসানে পেঁয়াজ বিক্রি করতে হচ্ছে। বর্তমানে যে পেঁয়াজ কেজিপ্রতি ১৬-১৮ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে, তা ভারত থেকে টনপ্রতি ১৭০ থেকে ১৮০ ডলারে কিনতে হয়েছে। সে হিসাবে প্রতি কেজি পেঁয়াজের কেনা দাম পড়ে ১৩-১৪ টাকা। এছাড়া কাস্টমস ফি, পরিবহন ও ওঠানামাসহ প্রতি কেজি পেঁয়াজে খরচ পড়ে ১৯-২০ টাকা। অর্থাত্ বর্তমানে কেজিপ্রতি পেঁয়াজ তিন-চার টাকা লোকসানে বিক্রি করতে হচ্ছে।
এদিকে বাজারে ভারতীয় পেঁয়াজের সরবরাহ বৃদ্ধি পাওয়ায় চীন, পাকিস্তান ও মিয়ানমার থেকে পণ্যটির আমদানি বন্ধ রেখেছেন ব্যবসায়ীরা। খাতুনগঞ্জের পেঁয়াজ ব্যবসায়ী দীপু বিশ্বাস বলেন, বাজারে ভারতীয় পেঁয়াজের সরবরাহ ও বিক্রি বেশি। তাই অন্যান্য দেশ থেকে পণ্যটির আমদানি এখন বন্ধ। তবে বাজারে স্বল্প পরিমাণ পাকিস্তানি পেঁয়াজের সরবরাহ রয়েছে। মানে ভালো হলেও চাহিদা মন্দার কারণে পাকিস্তানি পেঁয়াজের দাম কম। বর্তমানে পাকিস্তানি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১৪-১৫ টাকায়।
চীন, পাকিস্তান ও মিয়ানমারের পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ হওয়ার বিষয়ে হামিদ উল্লাহ মার্কেটের কাঁচা পণ্য ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. ইদ্রিচ বণিক বার্তাকে বলেন, ভারতের বাজারে পেঁয়াজের দাম ও রফতানিমূল্য বৃদ্ধির কারণে গত বছর এসব দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি করেন ব্যবসায়ীরা। কিন্তু ভারতের তুলনায় এসব দেশের পেঁয়াজের মান ও চাহিদা খারাপ। পাশাপাশি আমদানি খরচও অনেক বেশি। তাই ভারতে পণ্যটির দাম কমে আসায় ব্যবসায়ীরা ওই তিন দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ করে দিয়েছেন।
কৃপ্র/ এম ইসলাম