কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলায় আরবের খেজুরের চারা গাছের উৎপাদন শুরু হয়েছে। প্রথমে শখের বসে শুরু করে এখন চারা বিক্রি করেই জীবিকার সন্ধান পেয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের আবুধাবি ফেরত যুবক বাবলু প্রামাণিক। তার নার্সারিতে এখন প্রায় ৩ হাজার আরবি দুবাই খেজুরের চারা গাছ জন্ম নিয়েছে। খেজুরের চারাগুলো দেখতে স্থানীয়রা ভিড় করছে তার বাগানে। খবর ইনকিলাব অনলাইন।
জানা যায়, বাবলু ২০০১ সালে মধ্যপ্রাচ্যের দুবাই-এর রাজধানী আবুধাবীতে কাজের সন্ধানে যায়। সেখানে একটি কোম্পানিতে শ্রমিক হিসেবে প্রায় ১৫ বছর কাজ করে। এই দীর্ঘ সময়ে সে খেজুর বাগান তৈরির বিষয়টি রপ্ত করে নেয়।
ওখানে কাজের ফাঁকে ফাঁকে নিজেই নিজের বাড়িতে আরবি দুবাই খেজুর বাগান গড়ার স্বপ্ন দেখতে থাকে সে। দুবাইয়ে কাজ করে যা টাকা জমা হয়েছিল তা নিয়ে গত প্রায় ৫ মাস আগে দেশে ফেরে বাবলু। দেশে ফেরার সময় প্রায় ৪ হাজার আরবি দুবাই খেজুর বীজ সংগ্রহ করে নিয়ে আসে। তার লক্ষ্য ছিল দেশের মাটিতে আরবি দুবাই খেজুর এর ফল ধরানো।
দেশে ফেরার পর পরীক্ষামূলক বাড়ির আঙিনায় জৈবসার ব্যবহার করে ৫/৬টি খেজুরের বীজ মাটিতে রোপণ করে। কোনো ওষুধ ব্যবহার না করে প্রতিদিন রোপণকৃত মাটিতে পরিমাণমত পানি দিয়ে আসছিল বাবলু। কিছুদিন পর রোপণকৃত ওই চারাগুলো খেজুর গাছের আকৃতি হয়। এরপর সে আরো বেশকিছু বীজ একইভাবে রোপণ করে তা চারা গজাতে দেখে।
বাবলুর বাড়ির পাশের আঙিনায় বড় হতে শুরু করেছে দুবাই খেজুরের চারা। আর এই চারাগুলো দেখতে বিভিন্ন এলাকার মানুষ ভিড় করছে। অনেকেই আবার আরবি দুবাই খেজুরের গাছ ক্রয় করে নিয়ে যাচ্ছে। তেঁতুলিয়া গ্রামের আমজাদ হোসেন জানান, দুবাই থেকে ফেরত এসে বাবলু আরবি দুবাই খেজুরের চারা উৎপাদন করেছে।
চারাগাছগুলো দেখতে সাধারণ খেজুর গাছের চেয়ে একটু আলাদা, পাতাগুলো বেশ লম্বা। প্রতিটি চারা বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা। বাবলু প্রামাণিক জানান, তিনি শখ করেই আবুধাবী থেকে খেজুর গাছের বীজ নিয়ে এসে নিজেই পরীক্ষা মূলকভাবে চারা তৈরির কাজ শুরু করেন। পরীক্ষায় সফল হওয়ার পর এখন রোপণকৃত খেজুরের চারা থেকে পাতা বের হয়ে গাছের রূপ ধারণ করেছে।
এই খেজুরের গাছ কিনতে আশপাশের মানুষ এখন ভিড় করছে। এসব গাছ ১শ’ ৫০ থেকে ২শ’ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। এতে বাড়তি আয় হচ্ছে। বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলা কৃষি অফিসার শাহাদুজ্জামান জানান, বিদেশি খেজুরের বীজ এনে চারায় রূপান্তর করে রোপন করা হলে বাংলাদেশের অনেক জায়গাতেই আশানুরূপ ফলন পাওয়া সম্ভব।
কৃপ্র/ এম ইসলাম