কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ পশ্চিমা দেশের তার্কি পাখি বাণিজ্যিকভাবে পালন করছেন নওগাঁর জিল্লুর রহমান চৌধুরী। তার খামারের নাম ‘নাফি পাখি সংগ্রহশালা’। নওগাঁ সদর উপজেলার শালুকা গ্রামে প্রবেশ করতেই দেখা মিলবে জিল্লুরের তিনতলা বাড়ি। এর প্রধান ফটকে টানানো আছে এ সাইনবোর্ড। খবর বাংলাদেশ প্রতিদিন অনলাইন।
গবেষকদের তথ্য অনুযায়ী, হাঁস-মুরগিসহ অন্যান্য পাখির চেয়ে তার্কির মাংসে চর্বির পরিমাণ খুব কম, আর খেতেও সুস্বাদু। কিছু কিছু দেশে এ পাখির মাংস মানুষের খাদ্য তালিকায় প্রাধান্য পাচ্ছে। খামারি জিল্লুর রহমান জানান, এই পাখি শুরু থেকেই ডিম দিতে থাকে। গত দুই বছরে তিনি প্রায় ৭০০ তার্কি পাখি বিক্রি করেছেন।
বর্তমানে খামারে রয়েছে ২০০ পাখি। বাচ্চা ফোটার অপেক্ষায় রয়েছে আরও ৫০০ ডিম। এখন ডিম দেওয়ার উপযোগী প্রতি জোড়া তার্কি বিক্রি হচ্ছে আট হাজার টাকায়। জিল্লুর রহমান ডিম ফোটানোর জন্য নিজের প্রযুক্তিতে তৈরি করেছেন ‘ইনকিউবেটর’ নামে একটি যন্ত্র। যেখানে একসঙ্গে এক হাজার ডিম ফোটানো যায়। এই যন্ত্রের মাধ্যমে মাত্র ২৭ দিনে তার্কির ডিম ফুটে বাচ্চা হয়।
ছয় মাসের মধ্যেই তার্কি আবারও ডিম দেয়। আর এই ছয় মাসে এদের ওজন দাঁড়ায় সাত থেকে আট কেজি পর্যন্ত। প্রতিটি বাচ্চা বিক্রি হয় ৭৫০ টাকা পর্যন্ত। প্রতিটি তার্কি ডিম দেয় বছরে ১১০ থেকে ১২০টি। যেগুলো থেকে গত দুই বছরে বিক্রি হয়েছে প্রায় ১ হাজার তার্কি।
বাজারজাতকরণের ক্ষেত্রে কিছুটা সমস্যা রয়েছে উল্লেখ করে জিল্লুর রহমান বলেন, তার্কির দাম তুলনামূলক হারে অন্যান্য পাখির চেয়ে বেশি হওয়ায় সব ধরনের ক্রেতা এটি কেনেন না। তবে বাইরের দেশ থেকে আমদানি বাড়ানো ও পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এর দাম হাতের নাগালে নিয়ে আসা সম্ভব।
এ বিষয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যানিমেল হাজবেন্ড্রি অ্যান্ড ভেটেরিনারি সায়েন্স বিভাগের অধ্যাপক ও বাংলাদেশ লাইভস্টক সোসাইটির সভাপতি ড. মো. জালাল উদ্দিন সরদার বলেন, অন্যান্য পাখির মাংসের চেয়ে তার্কির মাংসে তুলনামূলক কম চর্বি থাকে, তাই এর মাংস অধিক পুষ্টিকর।
নওগাঁর অতিরিক্ত জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. শামীম নাহার বলেন, পাখি জাতীয় মাংসের উৎস হিসেবে তার্কির গুরুত্ব মুরগি, হাঁস বা কোয়েলের চেয়ে কোনো অংশে কম নয়।
কৃপ্র/ এম ইসলাম