কৃষি প্রতিক্ষন রাজশাহী : রাজশাহীতে বিপদসীমার মাত্র ১২ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে পদ্মার পানি। গত চব্বিশ ঘন্টায় পদ্মায় পানি বেড়েছে আরো ১২ সেন্টিমিটার। শনিবার সকাল ৬ টায় পানির উচ্চতা রেকর্ড করা হয়েছে ১৮ দশমিক ৩৮ সেন্টিমিটার। রাজশাহীতে বিপদসীমা ধরা হয়েছে ১৮ দশমিক ৫০ মিটার। ফারাক্কার গেট খুলে দেয়ার প্রভাবে রাজশাহীতে পদ্মার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। শুক্রবার পদ্মায় পানির উচ্চতা ৯ সেন্টিমিটার বাড়লেও শনিবার বেড়েছে ১২ সেন্টিমিটার।
পানি বৃদ্ধির এই বিপজ্জনক গতি দেখে আশংকা করা হচ্ছে শনিবার রাতেই পানি বিপদসীমা স্পর্শ করবে। এ নিয়ে গত কয়েকদিন ধরেই আতংক বিরাজ করছে নগরবাসীর মধ্যে। গত দুই বছরের ভাঙ্গনে শহর রক্ষা বাঁধের পুলিশ লাইন্সের সামনের অংশ খুবই ঝুঁবিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। এখানে বর্ষা মৌসুমে দেড় কোটি টাকায় বাঁধ সংস্কার কাজ শুরু করলেও পানি বেড়ে যাওয়ায় বাঁধটি সংস্কার শেষ করতে পারেনি পানি উন্নয়ন বোর্ড।
এ অবস্থায় বাঁধ ভেঙ্গে যাওয়াসহ যে কোন ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থা মোকাবেলা করতে সেখানে মজুদ করে রাখা হয়েছে বালু ভর্তি জিও ব্যাগ। তবে পদ্মার পানি খুব দ্রুত গতিতে বাড়তে থাকায় শেষ পর্যন্ত বাঁধটি রক্ষা হবে কি না এ নিয়ে শংকা রয়েই গেছে। রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম কমিটির সাধারণ সম্পাদক জামাত খান বলেন, ‘শহর রক্ষা বাঁধের পুলিশ লাইন্সের সামনের অংশ, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের পশ্চিমপাশের অংশ, বেড়পাড়া, সোনাইকান্দি ও নবগঙ্গা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে। ক্ষতিগ্রস্ত ওই বাঁধে এখনো ভাঙ্গন অব্যাহত আছে। যদি এসব এলাকায় শহররক্ষা বাঁধ ভেঙ্গে যায়, তবে শহরের অপূরণীয় ক্ষতি হবে।’
তিনি যে কোন ধরনের দুযোর্গ মোকাবেলায় জেলা প্রশাসক ও পানি উন্নয়ন বোর্ডকে প্রস্তুত থাকতে আহ্বান। শনিবার সকালে নগরীর পুলিশ লাইন্সের সামনের শহর রক্ষা বাঁধের ক্ষতিগ্রস্ত অংশ পরিদর্শন করেছেন জেলা প্রশাসক কাজী আশরাফ উদ্দিনসহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা। জেলা প্রশাসক কাজী আশরাফ উদ্দিন বলেন, সকালে বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেছি। কোথাও কোন সমস্যা নেই। পর্যাপ্ত ত্রাণ মজুদ আছে। চরের মধ্যে যারা আছে তাদেরকেও ত্রাণ দেয়া হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মুখলেছুর রহমান বলেন, ‘বন্যায় পানি বাড়বে এটাই স্বাভাবিক। বাঁধের কোন সমস্যা দেখছি না। শিবগঞ্জের পাঙ্খা পয়েন্টে মাত্র ২ সেন্টিমিটার পানি বেড়েছে। তবে রাজশাহীতে একদিনেই বেড়েছে ১২ সেন্টিমিটার। রাজশাহীতে আরো পানি বাড়বে। তবে বাঁধ বিপদসীমার চেয়ে অনেক উচু। তাই আংশকার কোন কারণ নেই।’ দুই-একদিনের মধ্যে পানি কমবে বলে তিনি আশা করেন।
কৃপ্র/ ফিরোজ/কে আহমেদ/ এম ইসলাম