৫২টি আর্সেনিক মুক্তকরণ প্লান্টের ৪৪টিই অকেজো
কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ পাবনা জেলার বেড়া উপজেলার অধিকাংশ এলাকার নলকূপে মাত্রাতিরিক্ত আর্সেনিক ও আয়রন। এলাকাবাসীর নিরাপদ খাবার পানি ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে জেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল কার্যালয় উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ৫২টি আর্সেনিক মুক্তকরণ সিডকো প্লান্ট স্থাপন করে। বর্তমানে এর ৪৪টিই অকেজো বা ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে রয়েছে। এর ফলে বেড়ায় নিরাপদ খাবার পানির তীব্র সঙ্কট দেখা দিয়েছে। এছাড়া চালু থাকা মাত্র ৮টি প্লান্টের রাসায়নিক উপাদানের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় সেগুলোও পুরোপুরি আর্সেনিক দূর করতে পারছে না।
ফলে ওই জনসাধারণকে আর্সেনিকযুক্ত পানি অথবা নদীর পানি পান করতে হচ্ছে। উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ৫৮ শতাংশ নলকূপের পানিতে বিপজ্জনক মাত্রায় আর্সেনিক রয়েছে। উপজেলার রূপপুর ও মাসুমদিয়া ইউনিয়নে আর্সেনিকমুক্ত পানি সরবরাহের কিছুটা ব্যবস্থা থাকলেও বাকি ইউনিয়নগুলোতে তাও নেই। ফলে নিরাপদ পানির বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় আর্সেনিকোসিস আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাও বাড়ছে।
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর বেড়ার সহকারী প্রকৌশলী হারুন অর রশীদ জানান, ‘২০০১ সালে ইউনিসেফের আর্থিক সহযোগিতায় জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল কার্যালয় উপজেলার বিভিন্ন স্থানে আধুনিক ও ব্যয়বহুল ৫২টি সিডকো প্লান্ট স্থাপন করে। প্রথম দিকে এসব প্লান্ট ব্যবহার করে এলাকাবাসী খুব উপকৃত হয়েছে। কিছুদিনের মধ্যেই এলাকাবাসীর অসচেতনতা ও দায়িত্বহীনতার কারণে সেগুলো একে একে অকেজো হতে শুরু করে। কোথাও কোথাও তারা প্রতিশ্রুতি মোতাবেক বিদ্যুৎ বিল দেননি। আবার কেউ কেউ নতুন করে রাসায়নিক উপাদান কেনেননি। কোথাও মূল্যবান যন্ত্রাংশগুলো চুরি হয়ে গেছে। প্রায় দুই মাস আগের জরিপ মোতাবেক ৫২টি প্লান্টের ৪৪টি নষ্ট বা অকেজো হয়ে রয়েছে। আর যেগুলো চালু আছে পুরোপুরি আর্সেনিক দূর করতে পারছে না।
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর পাবনা কার্যালয়ের এস্টিমেটর প্রকৌশলী দীপক কুমার সাহা জানান, ‘প্লান্টগুলো স্থাপনের সময়েই দাতা সংস্থা ইউনিসেফ এগুলোর রক্ষণাবেক্ষণ ও ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব দেয় স্থানীয় কমিউনিটিকে। এজন্য একটি করে কমিটিও করে দেয়া হয়।
কমিটির দায়িত্ব ছিল সদস্যদের কাছ থেকে মাসিক চাঁদা তুলে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করা এবং রাসায়নিক উপাদান কেনা। এক থেকে দু’বছর পর পর প্লান্টগুলোর রাসায়নিক উপাদান পাল্টাতে হয়। এর দাম কম বেশি ৩০ হাজার টাকা।
এদিকে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর বেড়া পৌরসভার বিভিন্ন মহল্লায় বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ ও ব্যবহারের জন্য ৮০টি আরডব্লিউএইচ স্থাপন করেছিল। তার সবকটি এখন অকেজো হয়ে পড়ে আছে। নতুন ভারেঙ্গা আব্দুল মজিদ বলেন, ‘আমাদের মহল্লায় প্লান্ট স্থাপনের পর আমরা সবাই সেখান থেকে পানি সংগ্রহ করতাম। তবে ৫ বছর ধরে সেটি নষ্ট হয়ে পড়ে থাকায় বাধ্য হয়ে আমরা আগের মতোই বাড়ির আর্সেনিকযুক্ত নলকূপের পানি পান করছি।
কৃপ্র/ এম ইসলাম