কৃষি প্রতিক্ষণ রংপুর : জেলার লালবাগ হাটে প্রচুর দেশি গরু উঠেছে। এবার দেশি ছোট ও মাঝারি আকারের গরু কোরবানির জন্য বেশি কিনছেন ক্রেতারা l দাম ক্রেতাদের নাগালের মধ্যে থাকা, দেশি খাদ্যে লালনপালন করায় এসব গরুর চাহিদা বেশি হওয়ার কারণ বলে ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ের পক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে।
নগরের মধ্যে বড় দুটি হাট হলো লালবাগ ও বুড়িরহাট। এই হাট দুটি থেকে প্রতিবছরই রংপুরের অধিকাংশ লোক কোরবানির গরু কেনেন। এরপরও ঢাকা, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জেলা শহর থেকেও ব্যবসায়ীরা গরু কিনতে আসেন। হাট দুটি সপ্তাহে দুদিন করে চার দিন বসে। লালবাগ হাট সপ্তাহে রবি ও বুধবার এবং বুড়িরহাট সোম ও বৃহস্পতিবার বসে।
রোববার লালবাগ হাটে সরেজমিনে দেখা গেছে, সকাল থেকে গরু আসতে শুরু করে। দুপুরের পর ক্রেতাদের ভিড় বাড়তে থাকে। দেশি ছোট গরু ৩০-৩৫ হাজার ও মাঝারি ৩৫-৪০ হাজার টাকা দামের গরু বেশি বিক্রি হচ্ছে।
৩২ হাজার টাকা দিয়ে দেশি গরু কিনেছেন শহরের গুপ্তাপাড়ার আলী হোসেন। তিনি বলেন, দেশি গরু বেশি করে বিক্রি হলে খামারিরা উৎসাহিত হবেন। তাই হাটে দেশি গরুই বেশি।
নগরের দর্শনা এলাকা থেকে শমসের মিয়া তাঁর বাড়িতেই ছোট থেকে বড় করা একটি দেশি গরু বিক্রি করতে নিয়ে এসে বললেন, ‘এর আগের হাট বুধবারে আরও একটি দেশি গরু বিক্রি করেছি ৩৫ হাজার টাকায়। আগামী দুই হাটেও চারটি দেশি গরু বিক্রি করব।’
দেশি গরুর খামার করেছেন নগরের মাহিগঞ্জ এলাকার তোফাজ্জল হোসেন। তিনি হাটে গরু বিক্রি করতে গিয়ে বলেন, এর আগে লালবাগ ও বুড়িরহাটে ১৫টি দেশি ছোট ও মাঝারি গরু বিক্রি করেছেন। ঈদের আগে আরও কয়েকটি হাটে ২০টির বেশি দেশি গরু বিক্রি হবে বলে আশাবাদী তিনি।
লালবাগ হাটে আরও একজন খামারি দিলদার হোসেন বলেন, গত বছর থেকে মানুষজন দেশি গরুর দিকেই ঝুঁকছেন। ছোট ও মাঝারি ধরনের গরুর চাহিদা বেশি। এসব গরু হাটে নিয়ে আসার পর সবার নজর পড়ে।
লালবাগ হাটে গরু কিনতে আসা অবসরপ্রাপ্ত এক ব্যাংক কর্মকর্তা মোকলেছুর রহমান বলেন, প্রথমত সাধ্যের মধ্যে দাম থাকতে হবে। সেই সঙ্গে দেশি গরুর চর্বি তুলনামূলকভাবে কম। ৩১ হাজার টাকা দিয়ে একটি ছোট গরু কিনেছেন তিনি।
লালবাগ হাটের ইজারাদার আবদুল্লাহেল কাফী জানালেন, গত বুধবার এই লালবাগ হাটে দেশি ছোট ও মাঝারি গরু কেনাবেচা হয়েছে প্রায় ৬০০। ঈদের আগের দুই হাটে তিন হাজারের বেশি দেশি গরু কেনাবেচা হবে বলে আশা করা যায়।
এদিকে গত বৃহস্পতিবার রংপুর নগরের আরও একটি বড় পশুর হাট বুড়িরহাটে সরেজমিনে দেখা গেছে, দেশি ছোট গরু ৩০-৩৫ ও মাঝারি জাতের গরু ৩৫-৪০ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে।
বুড়িরহাটের ইজারাদার ইউনুস আলী জানান, গত বৃহস্পতিবার ৪০০-এর বেশি গরু বিক্রি হয়েছে। এর মধ্যে অধিকাংশই ছোট ও মাঝারি দেশি গরু।
রংপুর প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের উপপরিচালক চিকিৎসক স্বপন কুমার পাল বলেন, এবার কোরবানির জন্য এ বিভাগে গরুর চাহিদা রয়েছে ৬ লাখ ৩০ হাজার গরু। আর কোরবানির জন্য প্রস্তুত রয়েছে ৮ লাখ ৬৫ হাজার গরু। এবার ভারত থেকে গরু আমদানির কোনো প্রয়োজন নেই।
কৃপ্র/ রাজিব/ কে আহমেদ