কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ পলিথিনের বিকল্প হিসেবে প্রাকৃতিক আঁশ থেকে উৎপাদিত পণ্যের ব্যবহার বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু। তিনি বলেন, বিশ্বব্যাপী পলিথিন ব্যবহারের পরিবর্তে প্রাকৃতিক উৎস থেকে তৈরি বিকল্প পণ্যের ব্যবহার বাড়ছে। এ সুযোগে বাংলাদেশে পাট, কলাগাছের বাকল এবং আনারসের পাতা থেকে আঁশভিত্তিক পণ্য উৎপাদনের মাধ্যমে রপ্তানি বহুমুখীকরণের নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে।
শিল্পমন্ত্রী আজ ‘প্রাকৃতিক আঁশ থেকে উৎপাদিত পণ্যের সম্ভাবনা’ শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন। বাংলাদেশ মহিলা সমিতির আইভি রহমান মিলনায়তনে এই কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। শিল্প মন্ত্রণালয় এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের অর্থায়নে বাস্তবায়নাধীন বাংলাদেশ ইন্সপায়ার্ড প্রকল্পের আওতায় বাংলাদেশ উইমেন চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির (বিডব্লিউউসিসিআই) এই কর্মশালার আয়োজন করে।
বাংলাদেশ উইমেন চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রেসিডেন্ট সেলিমা আহ্মাদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সুষেণ চন্দ্র দাস, বাংলাদেশ ইন্সপায়ার্ড প্রোগ্রামের টিম লিডার আলী সাবেদ ও বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্যুরো বাংলাদেশ’র পরিচালক সিরাজুল ইসলামসহ প্রকল্পের সুবিধাভোগী তৃণমূল পর্যায়ের নারী উদ্যোক্তারা এতে বক্তব্য রাখেন। শিল্পমন্ত্রী বলেন, নারী জনগোষ্ঠীকে বাদ দিয়ে দেশের উন্নয়ন চিন্তা কোনোভাবেই সফল হতে পারে না। এ বাস্তবতা বিবেচনা করে সরকার নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে ব্যাপক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেছে। শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন শিল্পপার্ক ও শিল্প নগরীগুলোতে ন্যূনতম শতকরা ১০ ভাগ প্লট নারীদের জন্য বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে। ভবিষ্যতে নতুন স্থাপিত শিল্প নগরীতেও নারীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্লট বরাদ্দ দেয়া হবে।
আমির হোসেন আমু বলেন, তৃণমূল পর্যায়ে নারী ক্ষমতায়নের লক্ষ্য অর্জনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কৃষিভিত্তিক শিল্প প্রসারের প্রতি অগ্রাধিকার দিচ্ছেন। এ নীতির ধারাবাহিকতায় প্রাকৃতিক আঁশ থেকে উৎপাদিত শিল্প পণ্যের প্রসারে সরকারের পক্ষ থেকে সম্ভব সব ধরনের নীতি সহায়তা প্রদান অব্যাহত থাকবে। তিনি জানান, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে এসএমই নারী উদ্যোক্তাদের সমস্যা সমাধানে জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে নির্দেশনা দেয়া হবে।
কর্মশালায় বক্তারা বলেন, রপ্তানির পরিমাণ বাড়াতে হলে বৈচিত্র্যময় পণ্য উৎপাদনের মাধ্যমে রপ্তানির ঝুঁড়ি সমৃদ্ধ করতে হবে। এ লক্ষ্যে তৃণমূল পর্যায়ে নারীদের অপ্রচলিত পণ্য ব্যবহার করে শিল্প পণ্য উৎপাদনের ধারায় সম্পৃক্ত করতে হবে। ইন্সপায়ার্ড প্রকল্পের আওতায় ইতোমধ্যে নরসিংদী, গাইবান্ধা, টাঙ্গাইল সদর ও মধুপুর উপজেলার ২ হাজার নারীকে প্রাকৃতিক আঁশ থেকে পণ্য উৎপাদনের মাধ্যমে অর্থনৈতিকভাবে স্বনির্ভর করা হয়েছে বলে তারা উল্লেখ করেন।
বক্তারা আরো বলেন, কলাগাছের বাকল এবং আনারসের পাতার মতো কৃষিবর্জ্য ব্যবহার অভ্যন্তরীণ সুতার চাহিদা পূরণের পাশাপাশি নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নে বিশাল সম্ভাবনা তৈরি করেছে। এ সম্ভাবনা কাজে লাগাতে উৎপাদিত পণ্য বাজারজাতকরণের সুযোগ করে দিতে হবে। একই সাথে তৃণমূল পর্যায়ে এসএমই উদ্যোক্তাদের জন্য স্বল্পসুদে ও সহজ শর্তে ঋণের ব্যবস্থা করে দিতে হবে। এ লক্ষ্যে কার্যকর উদ্যোগ দিতে তারা শিল্পমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
কৃপ্র/ এম ইসলাম