কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্ক : এতদিন জায়ান্ট পান্ডার নাম ছিল বিপন্ন প্রজাতির তালিকায়। তবে চীনে প্রজননের উন্নতি ঘটায় এবার বিপন্ন থেকে ক্ষয়িষ্ণু শ্রেণিতে উত্তরণ ঘটল জায়ান্ট পান্ডার। ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজার্ভেশন অফ নেচারের (আইইউসিএন ) নতুন রিপোর্টে এ তথ্য প্রকাশিত হয়েছে। খবর এই সময়ের ।
চীন জাতীয় প্রাণী ঘোষণা করার পরেই সংখ্যা বৃদ্ধি হয়েছে জায়ান্ট পান্ডার। এই মুহূর্তে ঠিক ক’টি পান্ডা শাবক রয়েছে, সে সম্পর্কে অবশ্য নির্দিষ্ট তথ্য নেই ওই রিপোর্টে৷ তবে প্রাথমিক হিসেবের ভিত্তিতে পরিবেশ বিজ্ঞানীরা বলছেন, ছোট-বড় মিলিয়ে বর্তমানে মোট ২,০৬০টি জায়ান্ট পান্ডা রয়েছে।
আইইউসিএন রিপোর্ট অনুযায়ী, চীনে জুড়ে জাতীয় সমীক্ষা চালিয়ে যে তথ্য পাওয়া গিয়েছে, তাতে দেখা গেছে জায়ান্ট পান্ডার সংখ্যা লোপ পাওয়ার প্রবণতা বন্ধ করা গেছে এবং তাদের সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছে। সরকারের সচেতনতার কারণে এটা সম্ভব হয়েছে।
প্রসঙ্গত, সর্বশেষ গণনার ভিত্তিতে ১,৮৬৪টি পান্ডার তথ্য সংগ্রহ করা হয়। কিন্তু সে সংখ্যা বেশ উল্লেখযোগ্য হারেই বেড়েছে। কীভাবে এটা সম্ভব হলো? এক কথায় উত্তর- বাঁশ। যা জায়ান্ট পান্ডার প্রধান খাদ্য।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, জায়ান্ট পান্ডার খাদ্যতালিকায় ৯৯ শতাংশই জুড়ে থাকে বাঁশ। একটি পান্ডার বেঁচে থাকার জন্য প্রতি দিন ১২ কেজি থেকে ৩৮ কেজি পর্যন্ত বাঁশ খাওয়া জরুরি। জায়ান্ট পান্ডা ধ্বংস হয়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ ছিল বাঁশবন নষ্ট হয়ে যাওয়া। ফলে তারা স্বাভাবিক খাদ্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছিল। সেই সমস্যার গোড়ায় আঘাত করতে চেয়েছে চীন। গত কয়েক বছর ধরে তারা ক্রমাগত চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছে নতুন করে বাঁশবন তৈরি করার। যাতে পান্ডারা তাদের স্বাভাবিক প্রাকৃতিক পরিবেশ ও খাদ্য ফিরে পায়। আর তাতেই এসেছে সাফল্য।
আইইউসিএনের প্রধান ক্রেগ হিল্টন-টেলার বলছেন, পুরোটাই হল স্বাভাবিক প্রাকৃতিক বাসস্থানের (ন্যাচারাল হ্যাবিট্যাট ) বিষয়। শুধু ওদের প্রাকৃতিক বাসস্থান ফিরিয়ে দিয়ে ওরা (চীন ) পান্ডাদের বেড়ে ওঠার মতো জায়গা দিয়েছে এবং যথেষ্ট খাদ্যের জোগান নিশ্চিত করতে পেরেছে। ‘
ওয়ার্ল্ড ওয়াইল্ডলাইফ ফাউন্ডেশনের (ডব্লিউডব্লিউএফ) সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট জিনেট হেমলে বলেন, পান্ডার স্বাভাবিক বাসস্থান ফিরিয়ে দেয়ার ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করে চীন একটা দারুণ কাজ করেছে। কোনো সরকার যদি সংরক্ষণের প্রতি দায়বদ্ধ হয়, তা হলে কী অসাধারণ ব্যাপার ঘটতে পারে, এটা তার উদাহরণ।
কৃপ্র/ কে আহমেদ/ এম ইসলাম