কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ মেরুল বাড্ডার আফতাবনগর হাটে উঠা সেই গরুটির দাম উঠেছে ১৩ লাখ টাকা পর্যন্ত। কিন্তু বিক্রেতা ১৭ লাখের কমে সেটি বিক্রি করতে নারাজ। গত দুই দিন ধরে আফতাবনগর হাটের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে গরুটি। গরুটি দেখতে ভিড় জমাচ্ছেন ক্রেতা দর্শনার্থীরা। কেউ দাম দর করছেন। আবার কেউ সেলফি তুলছেন।
গরুর বেপারি মজনু প্রামাণিক বলেন, দুই বছর ধরে তিনি এই গরুটি লালন পালন করেছেন। গরুটির পেছনে তার কয়েক লাখ টাকা খরচ হয়েছে। পরিশ্রমও গেছে অনেক। ১৭ লাখ টাকার কমে গরুটি বিক্রি করলে তার লাভ হবে না।
গরুটির দাম কেউ ৯ লাখ, কেউ ১০ লাখ বা ১১, সাড়ে ১১ লাখ টাকা পর্যন্ত বলছেন। তবে উত্তর বাড্ডার বাসিন্দা রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী হাজী আবু তাহের গরুটি কিনতে সর্বোচ্চ দাম ১৩ লাখ টাকা বলেছেন।
এদিকে গত কয়েক দিন হাটে গিয়ে ক্রেতারা কেবল দাম-দর করলেও গরু খুব একটা কেনেননি। শনিবার সকাল থেকেই তারা গরু কিনতে শুরু করেছেন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হাটগুলোতে বাড়ছে ক্রেতাদের চাপ। হাটের কাছাকাছি এলাকার বাসিন্দারা গরু কিনে হেঁটে রওনা দিলেও দূরের ক্রেতাদেরকে ট্রাকে করে কোরবানীর পশু নিয়ে যেতে দেখা যাচ্ছে।
তবে ক্রেতাদের অভিযোগ, গতবারের চেয়ে এবার সব ধরনের গরুর দাম তুলনামূলক বেশি। মাঝারি মানের একটি গরুতে গতবারের চেয়ে ১০ থেকে ৪৫ হাজার টাকা পর্যন্ত বেশি দামে কিনতে হচ্ছে।
রাজধানীর ব্রাদার্স ইউনিয়ন সংলগ্ন বালুর মাঠ ও কমলাপুর স্টেডিয়াস সংলগ্ন খালি জায়গা, খিলগাঁও মেরাদিয়া পশুরহাট, ঝিগাতলা হাজারীবাগ মাঠ, রহমতগঞ্জ খেলার মাঠ, সাদেক হোসেন খোকা মাঠ, উত্তর শাহজাহানপুর, খিলগাঁও মৈত্রী সংঘের মাঠ, পোস্তগোলা শ্মশানঘাট সংলগ্ন খালি জায়গা, খিলক্ষেত আবাসিক প্রকল্পের খালি জায়গা, মিরপুর সেকশন-১১-এর বাউনিয়া বাঁধসংলগ্ন খালি জায়গা, বারিধারা ‘জে’ ব্লক এবং গাবতলি পশুর হাটসহ রাজধানীর বিভিন্ন হাট ঘুরে এসব তথ্য জানা গেছে।
কোনো কোনো ক্রেতা মনে করছেন, শেষের দিকে আরও গরু আসবে। তখন দাম কমতে পারে। তাছাড়া গরু রাখার জায়গার অভাব এবং লালন পালনে আসুবিধার কথা ভেবে তারা এখনই গরু কিনছেন না। কেউ কেউ আবার দাম বা অন্য অসুবিধার দিকে তাকাচ্ছেন না। পছন্দ হলেই গরু কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। তাদের বক্তব্য, আগে থেকে গরু কেনার মজাই আলাদা।
কোরবানীর আগে নিজের হাতে গরুকে লালন-পালন করলে মনে অন্যরকম শান্তি অনুভূত হয়। তাছাড়া গরুকে দেখে ও লালন-পালন করে বাসার বাচ্চারা খুশি হয়। এছাড়া শেষদিকে গরুর সংকট দেখা দিতে পারে। তাই তারা তুলনামূলক আগেই গরু কিনছেন।
এক লাখ ৩১ হাজার টাকায় বারিধারা ‘জে’ ব্লক পশুর হাট থেকে একটি লাল ষাড় কিনেছেন কুড়িলের শফিক আহমেদ। গরু কিনে নিয়ে যাওয়ার সময় তিনি এ প্রতিবেদককে জানালেন, এবার গরুর দাম তুলনামূলক চড়া। গতবার এ ধরনের গরু কিনেছিলাম ৯০ হাজার টাকা দিয়ে। এবার কিনলাম ৪১ হাজার টাকা বেশি দিয়ে।
কৃপ্র/ এম ইসলাম