‘ওরে হত্যা নয় আজ সত্যাগ্রহ শক্তির উদ্বোধন’
মোঃ মাইনুল ইসলামঃ আজ ১০ই জিলহজ্ব পবিত্র ঈদুল আযহা। মুসলমানদের দ্বিতীয় প্রধান ধর্মীয় উৎসব। ত্যাগের মহিমা ও আনন্দের বার্তা নিয়ে মুসলিম বিশ্বের ঘরে ঘরে ঈদুল আযহা হাজির হয় ১০ জিলহজ্ব। ভোগে নয়, ত্যাগেই আনন্দ। আর এই ত্যাগের আনন্দ অনুভব করতে প্রস্তুত সমগ্র মুসলিম জাহান।
‘ওরে হত্যা নয় আজ সত্যাগ্রহ শক্তির উদ্বোধন’। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের এই বিখ্যাত কাব্যপংক্তির মধ্যে চমৎকারভাবে ফুটে উঠেছে ঈদুল আযহার মর্মবাণী। কোরবানীর ঈদে পশু কুরবানী নিছক প্রাণী হত্যা নয় বরং এটা ত্যাগের শক্তিতে ও নতুন বলে বলীয়ান হওয়ার এক মহালগ্ন।
মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন ঘোষণা করেছেন, কোরবানীর পশুর রক্ত কিংবা গোশত তার কাছে পৌঁছে না, পৌঁছে কুরবানীদাতার পরহেজগারী,সদিচ্ছা ও মহান রবের প্রতি বান্দার আনুগত্য।
যে পবিত্র ঘটনাকে স্মরণ করে প্রতি বছর ঈদুল আযহা উদযাপিত হয়, এর সূত্রপাত আজ থেকে প্রায় ৩ হাজার ৮শ’ বছর আগে। ঘটনাটি হচ্ছে মুসলিম জাতির পিতা আল্লাহর নবী হযরত ইবরাহীম (আঃ) আল্লাহ পাকের নির্দেশে স্বীয় পুত্র হযরত ইসমাইল (আঃ)কে কোরবানী করতে উদ্যত হয়েছিলেন।
আল্লাহর ভালোবাসায় সর্বাপেক্ষা প্রিয় বস্তু উৎসর্গ করতে পারেন কি না তা পরীক্ষা করার জন্যই আল্লাহ তা’য়ালা ইবরাহীম (আঃ)কে এই নির্দেশ দিয়েছিলেন। তিনি সেই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিলেন। অবশ্য এখন আর সেই রূপ সর্বাপেক্ষা প্রিয় বস্তু কুরবানী করতে হয় না। বরং হালাল পশু জবাই দ্বারাই কুরবানী আদায় হয়ে যায়।
ঈদুল আযহায় কুরবানী করা সমস্ত নেক কাজের মধ্যে অন্যতম। কোরবানীর পশুর রক্ত মাটি স্পর্শ করার আগেই তা আল্লাহর নিকট কবুল হয়ে যায়। প্রত্যেক সামর্থ্যবান লোকের উপর কোরবানী ওয়াজিব। যাকাত পরিমান মাল থাকলে কুরবানী দিতে হবে।
হাজরত রাসুলুল্লাহ (সাঃ) সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি সামর্থ্য থাকা সত্বেও কুরবানী করে না, সে যেনো আমার মুসাল্লায় (ঈদের জামাতে) না আসে।
ঈদুল আযহা সমাজের বিত্তবান মানুষের মতো দরিদ্র ও অসহায় মানুষের জীবনেও নিয়ে নিয়ে আসুক নির্মল আনন্দ, পবিত্র ঈদুল আযহার ত্যাগ, ধৈর্য ও সহিষ্ণুতার শিক্ষা।
কৃপ্র/ তাহেরা ইসলাম