কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ শসা এখন আমাদের দেশে সারা বছর পাওয়া গেলেও বাজারে এখন মিলছে স্বাদে ভরা তরতাজা শসা। লবণ মরিচ দিয়ে শসা খাওয়া বা সালাদে শসার তুলনা হয় না। অতিথি আপ্যায়নে বা নিজেদের আয়েসি খাবার আয়োজনে শসার সালাদ থাকা চাই-ই। খাবারের রুচি বাড়ানো আর খাবারের অতিরিক্ত তেলচর্বির ধাক্কা সামলাতে শসার তুলনা হয় না। শসার এতোটুকু উপকারের কথা আমরা সবাই মোটামুটি জানি।
কিন্তু প্রতি ১০০ গ্রাম শসাতে পাবেন ১৫ কিলো ক্যালরি, কার্বোহাইড্রেটস ৩.৬৩ গ্রাম, প্রোটিন ০.৬৫ গ্রাম, খাদআঁশ ০.৫ গ্রাম, ফোলেট ৭ মাইক্রোগ্রাম, নিয়াসিন ০.০৯৮ মিলিগ্রাম, থায়ামিন ০.০২৭ মিলিগ্রাম, ভিটামিন এ ১০৫ আইইউ, ভিটামিন সি ২.৮ মিলিগ্রাম,
ভিটামিন ই ০.০৩ মিলিগ্রাম, ভিটামিন কে ১৬.৪ মাইক্রোগ্রাম, সোডিয়াম ২ মিলিগ্রাম, পটাসিয়াম ১৪৭ মিলিগ্রাম, ক্যালসিয়াম ১৬ মিলিগ্রাম, লৌহ ০.২৮ মিলিগ্রাম, ম্যাগনেসিয়াম ১৩ মিলিগ্রাম, ফসফরাস ২৪ মিলিগ্রাম, জিংক ০.২০ মিলিগ্রাম ছাড়াও আরও অনেক উপকারী পুষ্টি উপাদান।
এসব উপাদান আপনার শরীরকে নানা রোগ থেকে যেমন সামলে রাখছে তেমনি রোগের প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করছে। আসুন জেনে নেয়া যাক চিরচেনা শসার অসাধারণ পুষ্টিগুণ সম্পর্কে।
বিষাক্ত টক্সিন দূর –
শসা আমাদের দেহের বর্জ্য ও বিষাক্ত পদার্থ অপসারণে দারুণ কাজ করে। নিয়মিত শসা খেলে কিডনিতে সৃষ্ট পাথর গলে যেতেও সাহায্য করে।
ভিটামিনের চাহিদা পূরণ –
প্রতিদিন আমাদের দেহে যেসব ভিটামিনের দরকার হয়, তার বেশির ভাগই শসার মধ্যে বিদ্যমান। ভিটামিন এ, বি, সি ও কে আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ও শক্তি বাড়ায়।
ক্যানসার প্রতিরোধে –
শসায় সিকোইসোলারিসিরেসিনোল, ল্যারিসিরেসিনোল ও পিনোরেসিনোল নামে তিনটি আয়ুর্বেদিক উপাদান আছে। জরায়ু, স্তন ও মূত্রগ্রন্থিসহ বিভিন্ন স্থানে ক্যানসার হওয়ার ঝুঁকি কমানোর সঙ্গে এই তিন উপাদানের জোরালো সম্পর্ক রয়েছে।
হজম ও ওজনহ্রাসে সহায়ক –
শসায় উচ্চমাত্রায় পানি ও নিম্নমাত্রার ক্যালরিযুক্ত উপাদান রয়েছে। ফলে যারা দেহের ওজন কমাতে চান, তাদের জন্য শসা আদর্শ টনিক হিসেবে কাজ করে। কাঁচা শসা চিবিয়ে খেলে তা হজমে বড় ধরনের ভূমিকা রাখে। নিয়মিত শসা খেলে দীর্ঘমেয়াদি কোষ্ঠ-কাঠিন্য দূর হয়।
পানিশূন্যতা দূর –
পানির তৃষ্ণা মেটাতে শসা খুবই কার্যকরী। একটি শসা প্রায় ৯০ শতাংশ পানি ধারণ করায় খুব দ্রুত আপনাকে সতেজ করে তুলতে পারে। দেহের দুর্বলতা কাটিয়ে করতে পারে প্রাণবন্ত।
গেঁটেবাত থেকে মুক্তি –
শসায় প্রচুর পরিমাণে সিলিকা আছে। গাজরের রসের সঙ্গে শসার রস মিশিয়ে খেলে দেহের ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা নেমে আসে। এতে গেঁটেবাতের ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ –
শসার আঁশ কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ এবং কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময় করে।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ –
শসার পটাশিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।
মাথাব্যথা দূর –
সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর অনেকের মাথাব্যথা করার অভ্যাস আছে। শরীর অবসাদ ভাব আসে। শসায় প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি ও সুগার আছে। তাই ঘুমাতে যাওয়ার আগে কয়েক স্লাইস শসা খেয়ে নিলে সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর এ সমস্যা থাকে না।
চুল ও নখের সুস্থতা –
শসায় থাকা খনিজ সিলিকা আমাদের চুল ও নখকে সতেজ ও শক্তিশালী করে তোলে। এ ছাড়া শসার সালফার ও সিলিকা চুলের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
কৃপ্র/ এম ইসলাম