কৃষি প্রতিক্ষণ রিপোর্ট : রাজধানীর আড়ত ও বাজারগুলো ভরে গেছে ইলিশে। দামও সাধারণ ক্রেতাদের ক্রয়সীমার ভেতরে। বিক্রেতারা বলছেন, গত ৫ বছরে এত ইলিশের দেখা মেলেনি । রাজধানীর প্রতিটি আড়তে প্রতিদিন গড়ে যে ৬০-৭০ লাখ টাকার ইলিশ বিক্রি হতো, তা নেমে এসেছে ১৫ লাখ টাকায়।
বিক্রেতারা বলছেন, ঢাকার বাজারে ইলিশ আসে তিনটি অঞ্চল থেকে। এর মধ্যে বরিশাল ও চাঁদপুরের ইলিশ আসে নদীপথে সদরঘাট, শ্যামবাজার ও আশপাশের ঘাটে। আর চট্টগ্রাম ও নোয়াখালীর ইলিশ আসে প্রধানত সড়কপথে। ঘাট ও টার্মিনাল থেকে চলে যায় যাত্রাবাড়ী, কারওয়ান বাজার, কাপ্তানবাজার, মুগদা, রামপুরাসহ বিভিন্ন এলাকার আড়তে। নানা হাত ঘুরে ইলিশ আসে কাঁচাবাজারে সাধারণ ক্রেতাদের নাগালে।
যাত্রাবাড়ী থানার পার্শ্ববর্তী এলাকার মাছের আড়তে রোববার সকালে গিয়ে দেখা যায় ইলিশের ছড়াছড়ি। সেখানে রয়েছে দুই শতাধিক মাছের আড়ত। ঈদের ছুটিতেও কিছু আড়ত খোলা ছিল বলে জানিয়েছেন আড়তের লোকজন। মৌসুমের কারণে দুই মাস ধরেই বাজারে ইলিশের সরবরাহ। থাকবে আসন্ন দুর্গোৎসবের আগ পর্যন্ত।
আড়তের বিক্রেতারা বলছেন, ৭০০-৮০০ গ্রাম ইলিশের দাম ৪০০ থেকে সাড়ে ৪০০ টাকা। এক হাজারের মধ্যে বড় ইলিশ। যত সকালে আসা যায়, দাম তত কম। আমির হোসেন, বাবুল সরদার, কালু বাবুর আড়ত ও আশপাশের আড়তগুলোতে খোঁজ নিয়ে জানা গেল, সকাল আটটার মধ্যে এলে এবং একসঙ্গে বেশি নিলে ৮০০ গ্রামের ইলিশের দাম পড়বে প্রতিটি ৩০০ টাকা করে, যা অন্য সময় এক হাজার টাকাতেও মিলত না।
আমির হোসেনের আড়তের কর্মচারী আ. রশিদ জানালেন, দাম কম বলার পরও বিক্রি হচ্ছে তুলনামূলক কম। এর প্রধান কারণ ক্রেতা কম। যাঁরা পাইকারি কিনে নিয়ে যান, তাঁরা বাজারে গিয়ে ইলিশ সাজিয়ে বসে থাকেন।
রশিদের কথার সঙ্গে মিলে গেল কাপ্তানবাজারের বাহাউদ্দিন আড়তের লোকজনের কথা। পানির দামে ছেড়ে দেওয়ার পরও বিক্রি কম। মুরগি পট্টির বিপরীত দিকে ওই আড়তের খানিকটা দূরেই মাছের খুচরা বাজার। সেখানেও দাম কম। ক্রেতাও কম। গোপীবাগ বাজারে গিয়ে দেখা গেল, পুরো বাজারে যত মাছ, তার ৭৫ শতাংশই ইলিশ। ক্রেতা হাতে গোনা।
বিক্রেতারা বলছেন, এই অবস্থা আরও কয়েক দিন থাকবে। কারণ, এখন প্রচুর ধরা পড়ছে। চাহিদা বাড়লেও সরবরাহ থাকছে বেশি। বলা যেতে পারে, এবার অন্তত বাঙালির পাতে ইলিশের কমতি হচ্ছে না।
কৃপ্র/ কে আহমেদ/ এম ইসলাম