কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ দিনাজপুর জেলার কাহারোল উপজেলায় ধানক্ষেতে আম বাগান তৈরীর প্রতিযোগিতা চলছে। রোদের তাপদাহ আর বৃষ্টির প্রতিকূলতা উপেক্ষা করে ধান, বেগুন, কপি, করলাসহ নানা জাতীয় ফসল আবাদ করে ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় কৃষক ধানক্ষেতে আম বাগান তৈরীর উদ্যোগ নিয়েছে কৃষক। ধান ও রবি শস্যের ন্যায্য মূল্য না পেলেও আম চাষ করে লাভজনক হবে বলে তারা ধারণা করছেন।
উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ও গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, ধান ও রবি শস্যের জমিতে আম বাগান করার হিড়িক পড়েছে। যে সব জমিতে যুগ যুগ ধরে ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে, সে সব জমিতে ধানের গাছ থাকলেও সারি সারি উন্নত প্রজাতির আম গাছ লাগানো হয়েছে। আম গাছ বড় হয়ে উঠলেও সে জমিতে আর ধান চাষ করা যাবে না। এতে উপজেলায় ধীরে ধীরে ধান সহ রবি শস্যের জমি কমে যাচ্ছে।
কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এই উপজেলায় ধানের যে আবাদ হয় তা কাহারোলের চাহিদা পূরণ করে বাইরের জেলা গুলোতে পাঠানো হয়। তবে ফসলি জমিতে এভাবে ফলজ গাছ লাগাতে থাকলে ভবিষ্যতে ধান উত্পাদনের কোনো আশা করা যায় না। কান্তনগর গ্রামের ধান চাষী মো. মোয়াজ্জেম হোসেন ১ একর জমিতে এবার আম্রপালী গাছ লাগিয়েছেন।
তিনি বলেন, ধান চাষ করে লাভের মুখ দেখতে না পেয়ে উর্পযোপুরী লোকসানে হিসাব গুণতে ক্লান্ত হয়ে পড়েছি। সরকার ন্যায্য মূল্য ধান কেনার ঘোষণা দিলেও আমরা সেখানে ধান বিক্রির কোন সুযোগ পাই না। ধানের ন্যায্য মূল্যের সব টাকা চলে যায় কিছু জনপ্রতিনিধি ব্যক্তি সহ সুবিধাভোগীদের পকেটে, তাই লোকসানের বোঝা না বাড়িয়ে ধানের জমিতে লাভজনক আম বাগান তৈরী করেছি।
উপজেলা প্রত্যান্ত এলাকা জুড়ে একই দৃশ্য দেখা যায়। ধানক্ষেতে আম বাগান করা চাষীরা বলেন, বর্তমানে ধান ও রবি শস্য আবাদ করে শুধু লোকসানের বোঝা টানতে হচ্ছে, আমরা ক্ষতির স্বীকার হতে চাই না। আমের চাষ বেশ লাভজনক। তাই আমরা আমবাগান করার উদ্যোগ নিয়েছি। অনেক চাষী বলেন অল্প জমিতে আগামীবার শুধু বাড়ির চালের জন্য কিছু জমি ধান চাষ করব। উপজেলার বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ আশঙ্খা করছেন।
ধানী জমিতে এভাবে আমবাগান তৈরী হয়ে থাকলে আবাদী জমি কমে গিয়ে ধান, ভুট্টা, গম, আলু, বেগুন সহ নানা জাতীয় ফসলের উত্পাদন কমে যাবে। এতে করে উপজেলায় খাদ্য ঘাটতি দেখা দিলে, অন্য জায়গা হতে বাড়তি দামে ধান কিনতে হবে। তাতে দ্রব্যে মূল্য বৃদ্ধি পাবে। সুধিমোহল মনে করেন, সরকারি সুযোগ সুবিধা সঠিক ভাবে কৃষকদের দোড় গোড়ায় না পৌঁছালে ফসলি জমিতে বাগান করা থেকে কৃষক কে ফেরানো সম্ভব হবে না।
বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ শামীম হোসেন বলেন, উপজেলায় প্রায় ৪ শ হেক্টর জমিতে নতুন ভাবে আম বাগান তৈরী করা হচ্ছে ধান ও রবি শস্যের জমি সহ উচু ও অনাবাদী জমি গুলোতে আম বাগান করার প্রবণতা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
সুত্রঃ ইত্তেফাক অনলাইন/ কৃপ্র/ এম ইসলাম