কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ শীতলক্ষ্যা নদীকে মানুষের ব্যবহার উপযোগী করে তুলতে চায় সরকার। দূর করতে চায় এ নদীর দূষণ। এ জন্য নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংস্থার সমন্বিত কাজ শুরু হয়েছে। মূল দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে নৌবাহিনীকে। গঠন করা হয়েছে জাতীয় টাস্ক ফোর্স। এই টাস্কফোর্সের অধীনে গঠিত ২১ সদস্যের স্টিয়ারিং কমিটির প্রধান সমন্বয়কারীর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে নৌ-বাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল মুহাম্মদ নিজামউদ্দিন আহমেদকে।
নৌ-মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, শীতলক্ষ্য নদী হচ্ছে বাংলাদেশের অন্যতম একটি প্রাণ। নদীর তলদেশে ১০ ফুটের বেশি পলিথিনসহ নানা ধরনের বর্জ্য জমে আছে। এই চারটি নদীতে ট্যানারি বর্জ্য, হাসপাতাল বর্জ্য, শিল্পবর্জ্যসহ পয়ঃবর্জ্য ফেলা হচ্ছে। নদী দখল করে গড়ে তোলা হচ্ছে বড় বড় অবকাঠামো। এ কারণে নদী তার স্বাভাবিক চরিত্র হারিয়েছে। প্রথমে শীতলক্ষ্যা দূষণমুক্ত করতে হবে। ভবিষ্যতে কোনোভাবে যেন দূষিত হতে না পারে, সে জন্য বাস্তব উদ্যোগ নেওয়া জরুরি। এজন্য প্রয়োজনীয় সব উদ্যোগ না নিলে নদীগুলো মরে যাবে। এজন্য প্রয়োজনে লন্ডনের টেমস নদীসহ বিশ্বের যে সব নদী এভাবে সংরক্ষণ করা হয়েছে, সেসব অভিজ্ঞতা কাজে লাগানো যেতে পারে। এ কাজের জন্য নৌবাহিনী তাদের কৌশলপত্রে একটি পৃথক টাস্কফোর্স গঠনের পরামর্শ দিয়েছে। দ্রুত ঢাকা শহরের চারদিকের নদীগুলোকে দূষণমুক্ত করে নাব্যতা বাড়ানোসহ দখল মুক্ত করতে নৌবাহিনী যে প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়েছে, তাতে বলা হয়েছে, ঢাকার চারপাশের নদীগুলোয় প্রতিদিনই পড়ছে নানা ধরনের বর্জ্য। এর ৬০ শতাংশই বিভিন্ন ধরনের শিল্পবর্জ্য। নদীর নাব্যতা রক্ষায় গঠিত টাস্কফোর্সের সভায় এ প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়।
নৌ-বাহিনীর প্রতিবেদনের তথ্যমতে, বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, বালু ও শীতলক্ষ্যা নদী দূষণের জন্য দায়ী মূলত শিল্পবর্জ্য। নদী চারটিতে পড়া বর্জ্যের ৪০ শতাংশ ট্যানারি শিল্পের, ২০ শতাংশ অন্য শিল্পের। মোট ৬০ শতাংশ বর্জ্যই শিল্প খাতের। বাইরে ১৫ শতাংশ কঠিন বর্জ্য, ১৫ শতাংশ অন্য ও ১০ শতাংশ নৌযান বর্জ্য। অন্য বর্জ্যের মধ্যে রয়েছে হাসপাতাল, ইটভাটা, পলিথিন, ডকইয়ার্ড ইত্যাদির বর্জ্য।
প্রতিবেদনে ঢাকার চারপাশের নদীগুলোর বর্তমান অবস্থা তুলে ধরা হয়। এতে দেখা যায়, বুড়িগঙ্গা নদীর খোলামুড়া থেকে মীরকাদিম পর্যন্ত নাব্যতা মাত্র ১২ ফুট। শীতলক্ষ্যার ডেমরা থেকে গোপচর পর্যন্ত নাব্যতা ১২ ফুট আর ডেমরা থেকে কাঁচপুর পর্যন্ত মাত্রা পাঁচ-ছয় ফুট।
সুত্রঃ ইত্তেফাক অনলাইন কৃপ্র/ এম ইসলাম