কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ রংপুর জেলার তারাগঞ্জ উপজেলায় ‘সবুজ তারাগঞ্জ গড়ি’ কর্মসূচির আওতায় উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে এক ঘণ্টায় লাগানো আড়াই লাখ গাছের চারা এখন মৃত্যুর মিছিলে। ইতিমধ্যে লাগানো গাছের চারার প্রায় ৪০ ভাগ মরে গেছে।
গত ১ সেপ্টেম্বর দেশজুড়ে সাড়া জাগিয়ে তারাগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় বৃক্ষ রোপন কর্মসূচির আওতায় বিভিন্ন প্রজাতির চারাগুলো লাগানো হয়। ওই কর্মসূচি বাস্তবায়নে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগে রয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছে, উপজেলার ১৫৩টি গ্রামীণ ও মহাসড়কে লাগানো চারাগুলোর গুণগতমান খারাপ ছিল। তাছাড়া চারা লাগানোর পদ্ধতিগত ত্রুটি থাকায় গাছের চারা মরে যাচ্ছে। চারা লাগানোর সময় কোনো রকমের রোপন পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়নি। নামমাত্র গর্ত খনন করে সেখানে গাছের চারাগুলো পুঁতে রাখা হয়। এমনকি পলিব্যাগ ও মাটির পাত্রসহ তা গর্তে পুঁতে রাখা হয়।
সংশ্লিষ্ট এলাকায় গিয়ে দেখা যায়- ইকরচালী ইউনিয়ন, হাড়িয়ারকুঠি ইউনিয়ন কুর্শা ইউনিয়ন, সয়ার ইউনিয়ন, আলমপুর ইউনিয়নে লাগানো বেশিরভাগই চারাই মারা গেছে।
ইকরচালী ও হাড়ীয়ারকুঠি ইউনিয়নের ইউপি সদস্য রবিউল ইসলাম রবি, জলিল, ছাবেদুল ইসলাম জানিয়েছেন, গাছের চারাগুলোর মান খুব খারাপ ছিল। তাছাড়া ভালভাবে না লাগানোর কারণে তা প্রতিদিন মারা যাচ্ছে।
অভিযোগ উঠেছে, কর্মসূচির আওতায় ২ লাখ ৫০ হাজার গাছের চারা রোপনের কথা বলা হলেও রোপন করা হয় ১ লাখ ৮০ হাজার চারা গাছ। এর মধ্যে বৃটিশ ট্যোবাকো কোম্পানি ১ লাখ চারা সরবরাহ করে।
একাধিক বিশ্বস্ত সূত্র জানায়, চারা রোপন কর্মসূচি থেকে প্রায় ১৫ লাখ আত্মসাৎ করা হয়েছে। প্রশাসনের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, একটি পিকআপ গাড়িতে ৭ হাজার চারা আনা হয়েছিল বলে জানানো হয়। পরে চারাগুলো গুনে ৫ হাজার চারা পাওয়া যায়। ওই কর্মকর্তা জানান, ১ লাখ ক্রয়কৃত চারার মধ্যে ২০ থেকে ২৫ হাজার চারা কম পাওয়া গেছে।
উপজেলা পরিষদ চেয়াম্যান আনিছুর রহমান লিটন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এক ঘণ্টায় আড়াই লাখ বৃক্ষের চারা রোপনের কৃতিত্ব উপজেলা প্রশাসন একাই দেখিয়েছেন। এখানে উপজেলা পরিষদসহ প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, সদস্য, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, মক্তিযোদ্ধা, সাংবাদিকসহ ও সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণ থাকলেও তাদের উপেক্ষা করা হয়।
সুত্রঃ যুগান্তর অনলাইন/ কৃপ্র/ এম ইসলাম